জীবনী স্কলারস

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ১২ মুসলিম ব্যক্তিত্ব

লিখেছেন মিরাজ রহমান

নোবেল একটি আন্তর্জাতিক বার্ষিক পুরস্কারের নাম । বিশ্বব্যাপি সমাদৃত ও আলোচিত এ পুরস্কার। প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, শরীরবিদ্যা ও চিকিৎসা, সাহিত্য এবং শান্তিতে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯০১ সালে প্রথম এই পুরস্কার প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। বিভিন্ন জাতি ও গোত্রের ব্যক্তিত্বে পাশাপাশি এ পর্যন্ত মোট ১২ জন মুসলিম নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছেন। চলুন দেরি না করে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ১২ জন মুসলিমের সাথে পরিচিত হই আর জেনে নেই কে কোন সাল এবং কে কোন কারণে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন।

০১. আনোয়ার আল সাদাত :  জন্ম ১৯১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর এবং মৃত্যু ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর। তিনি  মিশরের একজন প্রসিদ্ধ রাজনীতিবিদ। ১৯৭৮ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং আনোয়ার আল সাদাতই নোবেল বিজয়ী বিজয়ী প্রথম মুসলমান।

০২. আবদুস সালাম : জন্ম ১৯২৬ সালের ২৯ জানুয়ারি এবং মৃত্যু ১৯৯৬ সালের ২১ নভেম্বর। তিনি মূলত একজন পাকিস্তানী পদার্থবিজ্ঞান। বিশ্বময় আলোকিত মুসলিম বিজ্ঞানী। ১৯৭৯ সালে পদার্থবিদ্যায় তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আবদুস সালামই প্রথম এবং একমাত্র পাকিস্তানি ব্যক্তিত্ব যিনি পুরস্কার লাভ করেন।

০৩. নাগিব মাহফুজ : জন্ম ১৯১১ সালের ১১ ডিসেম্বর এবং মৃত্যু ২০০৬ সালের ৩০ আগষ্ট)। তিনি মূলত মিশরীয় লেখক। আধুনিক আরবি সাহিত্যে তার অবদান অতুলনীয়। ১৯৮৮ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। নাগিব মাহফুজ প্রথম মুসলিম লেখক, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

০৪. ইয়াসির আরাফাত : জন্ম ১৯২৯ সালের ২৪ আগষ্ট এবং মৃত্যু ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর। তিনি ফিলিস্তিনের রাজনীতিবিদ ও নেতা। ১৯৯৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম ফিলিস্তিনি মুসলমান, যাকে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

০৫. আহমেদ হাসান : জন্ম ১৯৪৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এবং মৃত্যু ২০১৬ সালের ২ আগস্ট। তিনি একজন প্রসিদ্ধ মিশরীয় বিজ্ঞানী। ১৯৯৯ সালে রসায়নবিদ্যায় তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।। আহমেদ হাসানই প্রথম মুসলিম রসায়নবিদ এবং দ্বিতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

০৬. শিরিন এবাদি : জন্ম ১৯৪৭ সালের ২১ জুন। তিনি ইরানী মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বিশ্বময় পরিচিতি। ২০০৩ সালে এবাদি শান্তি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। শিরিন এবাদি প্রথম মুসলিম নারী যিনি শান্তিতে নোবেল লাভ করেন। এছাড়াও তিনি প্রথম ও একমাত্র ইরানী যাকে শান্তির জন্য এই সম্মান প্রদান করা হয়।

০৭. মোহাম্মেদ এল বারাদেই : জন্ম ১৯৪২ সালের ১৭ জুন। তিনি একজন মিশরীয় রাজনীতিবিদ। ২০০৫ সালে মোজাম্মেদ এল বারাদেই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দ্বিতীয় মিশরীয় নাগরিকযিনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার বিজয় করেন।

০৮. মুহাম্মদ ইউনুস : জন্ম ১৯৪০ সালের ২৮ জুন। তিনি বাংলাদেশের সুপরিচিতি অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনুসই একমাত্র ও প্রথম বাঙ্গালী মুসলিম, যিনি শান্তিতে নোবলে পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি একমাত্র ও প্রথম বাংলাদেশী এবং তৃতীয় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাঙ্গালী। ২০০৬ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

০৯. ওরহান পামুক :  জন্ম ১৯৫২ সালের ৭ জুন। বিখ্যাত বা সুপ্রসিদ্ধ তুর্কি লেখক। মাই নেইম ইস রেড নামক একটি বইয়ের জন্য তিনি বিশ্বময় বিখ্যাত। ২০০৬ তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ওরহান পামুক একমাত্র তুর্কি লেখক, যাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

১০. তাওয়াক্কোল কারমান : জন্ম ১৯৭৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। তিনি ইয়েমেনের মানবাধিকারকর্মী। ২০১১ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। একজন বিশিষ্ট আরবীয় বসন্তের অগ্রদুত নেত্রী হিসেবে তাওয়ক্কোল বিশ্বব্যপি পরিচিতি। তিনি প্রথম আরব নারী এবং একমাত্র প্রথম ইয়েমেনি, যিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

১১. মালালা ইউসুফজাই : জন্ম ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই। তিনি একজন সুপরিচিতি পাকিস্তানী মানবাধিকারকর্মী, যিনি কাজ করছেন নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে। ২০১৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৭ বছর বয়সে নোবেল বিজয়ী মালালা বর্তমানে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল বিজয়ী।

১২. আজিজ সানজার : জন্ম ১৯৪৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর)। তিনি একজন তুর্কি বিজ্ঞানী। ২০১৫ সালে তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আজিজ সানজারই প্রথম তুর্কী রসায়নবিদ এবং দ্বিতীয় তুর্কি এবং তৃতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

সূত্র : উইকিডিয়া

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কমেন্টস করুন