জীবনী তথ্য-প্রযুক্তি ফিচার ভিডিও

১১ জন মুসলিম মহাকাশচারী

Featured Video Play Icon

অনেকেই হয়তো জানেন না আজ পর্যন্ত কতজন মুসলিম মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। মহাকাশ ভ্রমণকারী মুসলিমের সংখ্যা একের ঘর পেরিয়ে দুইয়ের ঘরে এসে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত মোট এগারো জন মুসলিম বিজ্ঞানী সফলভাবে মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। আজ আমরা আপনাদের সেই ১১ জন মুসলিম মহাকাশচারীর কথা জানাব, যারা মহাকাশ ভ্রমণ করে মুসলিম জাতিকে গর্বিত করেছেন।

১. সুলতান বিন সালমান আল সৌদ (সৌদি আরব) : সুলতান বিন সালমান আল সৌদ ১৯৮৫ সালের ১৭ জুন মহাকাশ ভ্রমণ করেন। যার মিশনের নাম ছিল ‘এসটিএস-৫১ জি’। সুলতান বিন সালমান আল সৌদ প্রথম মুসলিম হিসেবে মহাকাশে গমন করেন। সেই সঙ্গে তিনিই প্রথম সৌদি নাগরিক এবং প্রথম আরব যিনি মহাকাশ ভ্রমণ করার সৌভাগ্য লাভ করেন। ১৯৫৬ সালের ২৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন সুলতান বিন সালমান আল সৌদ।

২. মোহাম্মদ ফরিস (সিরিয়া) : মোহাম্মাদ ফারিস একজন মুসলিম মহাকাশচারী, যিনি ১৯৮৭ সালের ২২ জুলাই মহাকাশ ভ্রমণ করেন। যার মিশনের নাম ছিল ‘মীর ইপি-১’। ফারিস প্রথম সিরীয় নাগরিক এবং দ্বিতীয় আরব হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেছিলেন। ফারিস ১৯৫১ সালের ২৬ মে জন্মগ্রহণ করেন। অর্ডার অব লেলিন ও হিরো অব দ্য সোভিয়াত ইউনিয়ন পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন মোহাম্মাদ ফারিস।

৩. মুসা মানারোভ (আজারবাইজান) :মুসা মানারোভ ছিলেন প্রথম মুসলিম মহাকাশ ভ্রমণকারী যিনি ৫৪১ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন এবং আজারবাইজানের নাগরিক হিসেবে তিনিই প্রথম মহাকাশে গমন করেন। ১৯৮৭ সালে মিশন ‘মীর নিও-৩’ এবং ১৯৯০ সালে মিশন ‘সুয়েজ টিএম-১১’ এ অংশগ্রহণ করেন তিনি। মুসা ১৯৫১ সালের ২২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। হিরো অব দ্য সোভিয়াত ইউনিয়ন ও অর্ডার অব লেলিনসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মুসা।

৪. আবদুল আহাদ মোহামান্দ (আফগানিস্তান) : আবদুল আহাদ মোহামান্দ চতুর্থ মুসলিম এবং প্রথম আফগান হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেন। আবদুল আহাদের মিশনের নাম ছিল ‘মীর ইপি-৩’। তিনি ১৯৮৮ সালের ২৯ আগস্ট মহাকাশ ভ্রমণ সম্পন্ন করেন। ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আন্তঃমহাকাশ গবেষণা নভোচারী হিসেবে ৯ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন আহাদ। আবদুল আহাদ মোহামান্দই মহাকাশে পবিত্র কুরআন নিয়ে যাওয়া প্রথম নভোচারী।

৫. টোকটার আউবাকিরভ (কাজাখাস্তান) :কাজাখাস্তানের টোকটার আউবাকিরভ ‘সুয়েজ এম-১৩’ নামের একটি মিশনে প্রথম কাজাখাস্তানি হিসেবে ১৯৯১ সালের ২ অক্টোবর মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালের ২৭ জুলাই আউবাকিরভ জন্মগ্রহণ করেন। হিরো অব দ্য কাজাখাস্তান ও হিরো অব দ্য সোভিয়াত ইউনিয়ন পুরস্কারসহ আরও বেশ কিছু সংস্থা কর্তৃক মহাকাশবিষয়ক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন টোকটার আউবাকিরভ।

৬. তালগাত মুসাবায়েভ (কাজাখাস্তান) :কাজাখাস্তানের দ্বিতীয় নভোচারী তালগাত মুসাবায়েভ। তিনি মোট তিনবার মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বমোট ৩৪১ দিন ৯ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট মহাকাশে কাটিয়েছেন মুসাবায়েভ। প্রথমবার ১৯৯৪ সালের ৪ নভেম্বর, দ্বিতীয়বার ১৯৯৮ সালের ২৫ অগস্ট এবং তৃতীয় বার ২০০১ সালের ৬ মে তিনি তার মহাকাশ ভ্রমণ সম্পন্ন করেন। ১৯৫১ সালের ৭ জানুয়ারি তার জন্ম। কাজাখাস্তান জাতীয় মহাকাশ সংস্থার প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

৭. সালিজান শারিপভ (রাশিয়া) : ‘এসটিএস-৮৯’ নামক মিশনে ১৯৯৮ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি মহাকাশ ভ্রমণ করেন এবং সর্বমোট ২০১ দিন অতিবাহিত করেন। এরপর ২০০৪ সালের ১৪ অক্টোবরে তিনি দ্বিতীয়বার মহাকাশ ভ্রমণ করেন। ১৯৬৪ সালের ২৪ আগস্ট তার জন্ম হয়। হিরো অব দ্য রাশিয়ান ফাউন্ডেশন পুরস্কার লাভ করেছেন শারিপভ। কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের উজবেক জাতীয়তাবাদী প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে এ তালিকাতে নাম লেখান তিনি।

৮. আনুশেহ আনসারি (ইরানী বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক) : আনুশেহ আনসারি প্রথম মুসলিম নারী এবং প্রথম ইরানিয়ান হিসেবে ‘সুয়েজ টিএমএ-৯’ নামক মিশনে ২০০৬ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর মহাকাশ ভ্রমণ করেন। নিজ খরচে মহাকাশ ভ্রমণকারী চতুর্থ ব্যক্তিত্ব এবং প্রথম নারী তিনি। ১৯৬৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ইরানে জন্মগ্রহণ করেন আনুশেহ। জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তা অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও ইয়াং এন্টারপ্রেনিয়ার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডসসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।

৯. শেখ মুসজাফার শুকুর (মালয়েশিয়া) : তিনিই প্রথম মালয়েশিয়ার নাগরিক যিনি মহাকাশ ভ্রমণ করেন। ২০০৭ সালের ১০ অক্টোবর ‘সুয়েজ টিএমএ-১১’ নামক মিশনে মহাকাশ যাত্রা করেন তিনি। মহাকাশে নামাজ আদায়ের ভিডিও দৃশ্য প্রচার করে বেশ আলোচনায় এসেছিলেন শুকুর। ১৯৭২ সালের ২৭ জুলাই শেখ মুসজাফার জন্মগ্রহণ করেন। ১০ দিন ২০ ঘণ্টা ১৪ মিনিট মহাকাশে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

১০. আইদিন আইমবেটোভ (কাজাখাস্তান) : কাজাখাস্তানের তৃতীয় নাগরিক হিসেবে ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর ‘সুয়েজ টিএমএ-১৮এম’ নামক মিশনে মহাকাশে যান আইদিন। তবে তিনিই প্রথম কাজাখ পতাকাধারী নভোচারী। মোট ৯ দিন ২০ ঘণ্টা ১৪ মিনিট মহাকাশে ছিলেন তিনি। তার জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৭ জুলাই। কাজাখ এয়ার ফোর্সের মেজর জেনারেল হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন আইদিন আইমবেটোভ।

১১. হাজ্জা আল মানসুরি (সংযুক্ত আরব আমিরাত) : সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম নাগরিক এবং ১১তম মুসলিম হিসেবে মহাকাশে ভ্রমণ করেছেন হাজ্জা আল মানসুরি। ‘সুয়েজ এমএস-১৫’ নামক মিশনে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি মহাকাশ ভ্রমণ করেন। মহাকাশ ভ্রমণে সঙ্গে পবিত্র কুরআন নিয়ে এবং মহাকাশ থেকে তোলা পবিত্র মক্কার ছবি শেয়ার করে বেশ আলোচিত হন হাজ্জা। হাজ্জা দ্বিতীয় মুসলিম, যিনি মহাকাশ ভ্রমণে পবিত্র কুরআন সঙ্গে নিয়েছেন। তার জন্ম ১৯৮৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর। [তথ্যসূত্র : দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন]

ওকে/এমএইচ

Comment

লেখক পরিচিতি

জাহিদ হাসান মিলু

আমি জাহিদ। সরকাারি কাগজপত্রের জাহিদুল ইসলাম থেকে বেসরকারি কাগজপত্রে জাহিদ হাসান মিলু- নামের এই বিচিত্র পরিবর্তনের পেছনে একটা মিষ্টি গল্প আছে।
জন্মেছি গোপালগঞ্জ জেলার অখ্যাত গ্রাম প্রশন্নপুরে, ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে। কী এক বিশেষ কারণে যেন কাগজকলমে বয়েস কমিয়ে আমাকে আরও তিনবছরের ছোটো করে রাখা হয়েছে। বাবা মা দুজনেই অক্ষর না শিখেও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম স্বাক্ষর হয়ে আছেন।
অবুঝ বয়েসে পারিবারিক স্বপ্নের কারণে ভর্তি হতে পেরেছিলাম মাদ্রাসায় , আলহামদুল্লিলাহ। জীবনের সবথেকে বড় পারিবারিক গিফ্ট ছিল এটা আমার জন্য। কুরআন পড়তে শিখলাম, মুখস্থ করতে পারলাম। অর্থ জানলাম এবং ব্যাখ্যাও পড়লাম।
আমাদের পাড়ার মাদ্রাসা কুলিয়ার ভিটায় পড়ার সময় ধর্মের প্রতি আমাদের ভেতরে যে বীজটা রোপিত হয়েছিল, সেটা ডালাপাল মেলে খোলা হাওয়ায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় প্রাণের প্রতিষ্ঠান এরাবিল মডেল মাদ্রাসায়। তারপর? তারপর আর কি- এখন পড়াশোনা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে।
দায়ী হওয়ার স্বপ্ন আমার সবথেকে বড় স্বপ্ন। স্বপ্নটি পূরণ করতেই পড়ছি, শুনছি, দেখছি, শিখছি এবং অপেক্ষা করছি।