আবু নুয়াইম (রহ.) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বক্তব্য উদ্ধৃত করেন, আল্লাহ তাআলার ইরশাদ, সেজদাকারীদের সাথে আপনার ওঠা-বসা… ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) নবীদের পৃষ্ঠদেশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি ভূমিষ্ঠ হন। (আসবাহানি কৃত ‘দালায়েলুন নুবুওয়া’, পৃষ্ঠা ২৫)। আয়াতের এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়। এ-আয়াতের পূর্বাপর আয়াতগুলোর বর্ণনার ধরন লক্ষ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন, আর আপনি আপনার নিকট-আত্মীয়দের সতর্ক করুন। এবং যে-সকল ঈমানদার আপনার সাথে রয়েছে, তাদের জন্য আপনার বাহু নত করে দিন। আর ওরা যদি আপনার নাফরমানি করে, তবে আপনি বলে দিন, ‘তোমরা যা করছো, তা থেকে আমি দায়মুক্ত।’ এবং আপনি নির্ভর করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর ওপর, যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি দাঁড়ান এবং দেখেন সেজদাকারীদের সাথে আপনার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা শুআরা, আয়াত ২১৪-২২০)
এইসব আয়াতে রাসুলকে (সা.) সর্বাবস্থায় ভরসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আল্লাহর ওপর, যিনি তার একাকী কিয়াম ও সালাতের অবস্থা যেমন জানেন, তেমন জামাতে আদায়কৃত নামাজের অবস্থাও জানেন। এখানে তাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সান্তনাও দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক সূত্র থেকে যা জানা যায়, তা-ও ইবনে আব্বাসের এই বক্তব্যের বিপরীত। কেননা, তার প্রসিদ্ধ সীরাতের বর্ণনায় যে, পিতৃপুরুষদের কথা রয়েছে, কেউ বলেন নি, তাদের কোনো একজন নবী ছিলেন। বরং তার পারিপাশ্বিক পরিস্থিতিতে এবং সুদীর্ঘ সময়ে এমন একজনকেও পাওয়া যায় নি যে, নবুয়তের দাবি করেছে। সহীহ বুখারীতে আবু সুফিয়ান সংক্রান্ত হাদিসও এর প্রমাণ বহন করে হেরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ানকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের মধ্য থেকে তার পূর্বে কেউ কখনো এমন দাবি করেছে? আবু সুফিয়ান বলেছেন, না। (বুখারী, হাদিস ৭)
মূল- সালেহ আহমদ শামী। ভাষান্তর- মনযূরুল হক। সূত্র- আকিক পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত মুহাম্মদ (সা.) ব্যক্তি ও নবী নামক গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত।
কমেন্টস করুন