জীবন বিধান বিধান

ফসল বা সবজি ফলনের আগেই বিক্রি করা জায়েজ হবে কি?

প্রশ্ন : এক ব্যক্তি জমিতে ফুলকপির চাষ করেছে। ফুলকপি হওয়ার আগেই এক ব্যক্তির কাছে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। তার সাথে এভাবে চুক্তি হয়েছে যে, ঐ জমিতে ফুলকপি হওয়ার পর দুই হাজার টাকার বিনিময়ে ৩০০ টি ফুলকপি দিতে হবে। জানার বিষয় হলো, উক্ত লেনদেনটি সহীহ হয়েছে কি না?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত লেনদেনটি সহীহ হয়নি। কেননা এতে ফলনের পূর্বেই নির্দিষ্ট ক্ষেতের শস্য বিক্রি করা হয়েছে। আর কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেতের শস্য ফলনের পূর্বে বিক্রি করা জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এ ধরনের বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এক্ষেত্রে সহীহ পদ্ধতিতে ‘কারবার’ করতে চাইলে কোনো ক্ষেতের শস্য নির্দিষ্ট না করে মেয়াদান্তে প্রদানের শর্তে অগ্রিম মূল্য দিয়ে খরিদ করে নিবে। ঐ শস্য কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেতের হতে হবে এমন শর্ত করা যাবে না।

আর উক্ত আগাম খরিদ চুক্তিতে নিম্নে বর্ণিত শর্তগুলো থাকা আবশ্যক। ১. চুক্তির সময় পরিপূর্ণ মূল্য পরিশোধ করা। ২. কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেতের শস্য দেওয়ার শর্ত না করা। ৩. যে দ্রব্য অগ্রিম মূল্যে খরিদ করতে চাচ্ছে তার ধরন এবং গুণগত মান সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা। ৪. বিক্রিত দ্রব্যের পরিমাণ নির্ধারণ করে নেওয়া। ৫. বিক্রিত দ্রব্য সরবরাহের তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে নেওয়া। ৬. বিক্রিত দ্রব্যটি এমন হওয়া, যা সাধারণত সব সময় বাজারে পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, উপরোক্ত পদ্ধতিতে চুক্তি করার পর বিক্রেতা যেকোনো ক্ষেতের শস্য ক্রেতাকে দিতে পারবে।

[তথ্যসূত্র : সহীহ মুসলিম ২/৭; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৩৮৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২৬; ফাতহুল কাদীর ৬/২০৭; আননাহরুল ফায়েক ৩/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ৪/৫৫৫; সহীহ বুখারী ১/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১৮০; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/২৭৮; আলমাআইরুশ শারঈয়্যাহ পৃ. ১৭০; ইতরুল হেদায়া পৃ. ১৪২]
Comment

লেখক পরিচিতি

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ। তরুণ লেখক। আলেম ও গবেষক। দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালে লিখছেন। কাজ করেছেন সুনামধন্য কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে।
বর্তমানে এই তরুণ লেখক আমাদের সময়.কম অনলাইন নিউজ পোর্টালের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার ইসলামি বিভাগের।

কমেন্টস করুন