জাতীয় সংবাদ

নৈতিক অবক্ষয়রোধে কওমী ফোরামের ৭ দফা সুপারিশ

প্রতিদিনই নারী নির্যাতনের খবর প্রকাশ পাচ্ছে মিডিয়ায়। অবস্থা অনেকটা এমন, নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে নারী নির্যাতনের খবর। শিক্ষাঙ্গন হচ্ছে সভ্যতা ও নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার স্থান। যেখানে মানুষ আচার-ব্যবহার, সভ্যতা ও নৈতিকতা শিখে। সেখানেই যদি এগুলোর অবক্ষয় ঘটে, তাহলে এই সমাজ মানুষের সমাজ হিসেবে কী করে টিকে থাকবে? যারা জ্ঞানের আলোর বিচ্ছুরণে ভূমিকা রাখবেন তারাই যদি অন্ধকার জগতে বাস করেন তাহলে সভ্য ও আলোকিত মানুষ কী করে সৃষ্টি হবে?

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে কওমী ফোরামের আহবানে ‘শিক্ষাঙ্গনে অনৈতিকতারোধে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এমন উদ্বেগ জানিয়েছেন। সেমিনারে ঢাকার মসজিদের ইমাম, খতিব, মুফাসসিরে কোরআন, সাংবাদিক ও শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

কওমি ফোরামের সমন্বয়ক মাওলানা মামুনুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন- মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা হাসান জামিল, মুফতি এনায়েতুল্লাহ, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুম, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি তোফায়েল গাজালী, মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা ইয়াকুব উসমানি, মুফতি দ্বীন মুহাম্মদ, মাওলানা মাহবুব নবাবগঞ্জী, মুফতি আবুল কালাম তৈয়্যবি, মুফতি রিজওয়ান রফিকী, মাওলানা ইনআমুল হক আইয়ুবী, মুফতি আখতার হাফেজ্জী, মাওলানা আবুল বাশার রিজওয়ান, মাওলানা ফরহাত আশরাফী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমি, মুফতি আব্দুর রহিম আল মাদানি, মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ্ নুমানি, মাওলানা আনোয়ার আনসারী, মুফতি আবসার সিদ্দিকি, মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফি ও মুফতি মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

সেমিনার থেকে শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক অবক্ষয়রোধে ৭ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়। সুপারিশগুলো হলো-

১. নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে পাঠদান এবং পাঠগ্রহণসহ যাবতীয় কার্যক্রম নারীরা পরিচালনা করবেন।

২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠনে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষিত ও শিক্ষানুরাগী এবং শিক্ষার মূল্য অনুধাবন করতে সক্ষম এমন ব্যক্তিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন।

৩. শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক বিবেচনার মূলোৎপাটন করতে হবে। শিক্ষার জন্য নিবেদিত প্রাণ, মেধাবী ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমন লোকদেরকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

৪. যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে অর্থাৎ শিক্ষকতার মেজাজ নেই, কেবল জীবিকা নির্বাহের খাতিরে এ পেশায় আত্মনিয়োগ করেছে, তাদেরকে শিক্ষকতা থেকে দূরে সরিয়ে দিতে হবে।

৫. ছাত্র, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান বিষয়ক সমস্যা সরাসরি সরকার প্রধানকে অবহিত করা যায় এমন কোনো পথ খুলতে হবে। প্রয়োজনে এজন্য প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে কোনো সেল গঠন করা যেতে পারে।

৬. শহরকেন্দ্রিক গণপরিবহনগুলো দুই দরজা বিশিষ্ট হতে হবে। সামনের দরজা দিয়ে কেবল নারীরা আরোহণ ও অবতরণ করবেন। পেছনের দরজা বরাদ্দ থাকবে পুরুষদের জন্য। প্রয়োজনে গণপরিবহনের মধ্যখানে পার্টিশনের ব্যবস্থা করে নেওয়া যেতে পারে। যাতে নারীদের চলাফেরা নির্বিঘ্ন ও নিষ্কণ্টক হয়।

৭. আল্লাহতায়ালার ফরজ বিধান পর্দার প্রতি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করতে হবে। ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে শিক্ষার সকল স্তরে। যৌন উত্তেজনা ও উম্মাদনা সৃষ্টিকারী সমস্ত আয়োজন যথা অশ্লীল নাটক, সিনেমা, ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইট ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে।

সৌজন্যে : বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

Comment

লেখক পরিচিতি

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ। তরুণ লেখক। আলেম ও গবেষক। দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালে লিখছেন। কাজ করেছেন সুনামধন্য কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে।
বর্তমানে এই তরুণ লেখক আমাদের সময়.কম অনলাইন নিউজ পোর্টালের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার ইসলামি বিভাগের।