দোয়া বিধান

দোআ কবুলের ৫টি সোনালী সময়!


তখন পেশাদার ব্যভিচারীনী এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজী করা লোক ব্যতিত কোনো মুসলিমের দোআ ব্যর্থ হয় না।


শায়খ আহমাদুল্লাহ | কে না চায় আল্লাহ মহানের কাছে তার দোআটি কবুল হোক? একজন মুমিন মুসলিমের জীবনের মহান প্রভুর দরবারে দোআ-প্রার্থনা এবং আকুতি-রোনাজারি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কতভাবেই কত সময়ই তো আমরা মহান প্রভুকে ডাকি কিন্তু আমরা কি জানি যে ঠিক কখন কখন একজন মুমিনের কোনো দোআ, কোনো প্রার্থনাই ফিরানো হয়না? আসুন জেনে নেই অমূল্য সোনালী সেই সময়গুলো।

এক. জোহরের পূর্বমুহূর্তে : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চই আসমানের দুয়ারসমূহ খুলে দেওয়া হয় সূর্য মধ্যাকাশ থেকে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়ার সময়। এরপর জোহরের সালাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হয় না। আমি চাই সেই সময়ে আমার কোন ভালো কাজ ওপরে উঠুক। (সহীহুল জামি, ১৫৩২)দুই. আজানের সময় : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন আজান দেওয়া হয় তখন আসমানের দুয়ার সময় খুলে দেওয়া হয় এবং দোআ কবুল করা হয়। (সহীহুত ত্বারগীব, ২৬০)

তিন. এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষার সময় : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শুভ সংবাদ! তোমাদের রব আসমানের দুয়ার খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলছেন, ‘আমার বান্দাগণ আমার আরোপিত এক ফরজ (নামাজ) আদায়ের পর আরেক ফরজের জন্য অপেক্ষা করছে’। (ইবনে মাজা, ৮০১)

চার. রাতের শেষার্ধে : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রাতের শেষার্ধ শুরু হলে একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন, কেউ কি কোন আরজি পেশ করার আছো? তার আরজি গৃহীত হবে। কারো প্রার্থনা করার কিছু আছে? তা মঞ্জুর হবে। আছো কি কোনো বিপদগ্রস্থ? তার বিপদ দূর করা হবে। তখন পেশাদার ব্যভিচারীনী এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজী করা লোক ব্যতিত কোনো মুসলিমের দোআ ব্যর্থ হয় না। (সহূহুত ত্বারগীব. ৭৮৬)

পাচ. এই দোআ পাঠের সময় : ইবনু উমার (রা.) বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে নামায পড়ছিলাম। সে সময় সমাগত লোকদের মাঝে হতে এক লোক বলল, ‘আল্লাহু আকবার কাবীরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছীরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসীলা’ (যার অর্থ, আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহ তাআলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই এই কথা কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মাঝে এক লোক বলল, আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, এ দোআয় আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ইবনু উমার (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আমি এ কথা শুনার পর থেকে কখনো তা পাঠ করা পরিহার করিনি। (মুসলিম, তিরমিজী ৩৯৪১)

 

Comment

লেখক পরিচিতি

আবদুল্লাহ মারুফ

আমি আবদুল্লাহ মারুফ। বর্তমানে অধ্যয়নরত আছি আল বায়ান অ্যারাবিক লানিং সেন্টারে। পাশাপাশি নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি হেরার জ্যোতি ও মাসিক ঘাসফড়িঙ -এর। পড়াশুনা, লেখালেখি আর ঘুরে বেড়ানো এই আমার ছোট্ট জীবন। ইসলাম প্রতিদিনের সাথে আছি কন্ট্রিবিউটিং রাইটার হিসেবে।

কমেন্টস করুন