বিশ্বাস বেসিক ইসলাম

শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম

লিখেছেন মিরাজ রহমান

শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম। কল্যাণ ও মঙ্গলকামিতার ধর্ম ইসলাম। ইসলামের মৌলিক শিক্ষা হলো নিজেদের মত অন্যদেরকেও ভালবাসা। ইসলাম একজন মানুষকে তার নিজের, আত্মীয়-স্বজনের, পরিবার-সমাজের এবং স্বদেশের তথা বিশ্ববাসীর কল্যাণ সাধনের জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনে ও ত্যাগ স্বীকারের প্রেরণা যোগায়। ইসলামের এই শিক্ষার আলোকে বিশ্ববাসীর জীবন ধারায় নেমে আসে প্রশান্তি অমিয় ধারা এবং বিদূরিত হয়ে অশান্তি, হিংসা, বিদ্বেষ এবং হানাহানি। ইসলামের শিক্ষা হলো- মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সাদা-কালো সকল মানুষই আল্লাহর সৃষ্ট বান্দা। সমগ্র মানবজাতি একই পরিবারভুক্ত। রাসুল (সা.) বলেছেন, সকল সৃষ্টি আল্লাহর পরিবারের মতো। (বায়হাকী, সূত্র : মিশকাত, আদাব অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৪২৫)
বস্তুত সমগ্র মানব জাতি একটি দেশের মতো। একটি দেহের বহু অঙ্গের মতো। কারণ সমগ্র মানুষই হজরত আদম ও হজরত হওয়া (আ.) -এর সন্তান। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক স্ত্রী থেকে। পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে; যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন; যে অধিক মুত্তাকী। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।’ (সূরা : হুজুরাত, আয়াত : ১৩)
পৃথিবীতে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ইসলাম শুধু মানুষের প্রতিই সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দেয়নি উপরন্ত প্রাণীর পরিচর্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ও উদ্ভিদের যথার্থ ব্যবহার সম্পর্কেও ইসলাম গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং যথার্থ বিধান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যারা দয়া করে, দয়াময় আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। তোমরা পৃথিবীবাসীদের প্রতি দয়া কর, তাহলে আকাশবাসী (আল্লাহ্) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ)
হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একদা তিনি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে আরাফ থেকে মুজদালিফার দিকে যাচ্ছিলেন। তখন নবী করীম (সা.) তার পিছনে উট হাকানো এবং প্রহারের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি তাদের দিকে ফিরে চাবুক দিয়ে ইশারা করে বললেন, হে লোকসকল! তেমারা ধীর-স্থিরভাবে চল। কারণ উট দৌঁড়িয়ে নিয়ে যাওয়া কোনো নেকির কাজ নয়। (মিশকাত, হজ অধ্যায়) মোটকথা সমস্ত সৃষ্টি তথ্য জড়, অজড় পদার্থ, প্রাণী ও প্রকৃতি সবই ইসলামের উদারতার উদ্ভাসিত। ইসলাম শুধু বিশ্বাসভিত্তিক ধর্ম নয়। বরং বিশ্বাস ও কর্মের এক সুষম সমন্বয়ের বাস্তবমুখী জীবন বিধানের নাম হলো ইসলাম। আর এজন্যই ইসলাম ধর্মে বৈরাগ্য নিষিদ্ধ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ইসলাম বৈরাগ্যের কোনো স্থান নেই। (মিফতাহুল কুনুজিস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা-২১৩; মুসনাদে আহমদ, ৬ষ্ঠ খন্ড)

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।