ফিচার সভ্যতা-সংস্কৃতি

আপনি কি জানেন কাবার গিলাফে কী লেখা রয়েছে!

হজ কিংবা উমরা পালন করতে যুগ যুগ ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌদি আরবে যান মুসলমানরা এবং তাওয়াফ করেন পবিত্র কাবা। কিন্ত আপনি কি কখনো ভেবে দেখছেন যে, কী লেখা রয়েছে এই কিসওয়া কিংবা কাবার গিলাফে? এমনকি দীর্ঘদিন ধরে সৌদিতে বসবাস করা মানুষজনও এ সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। খুব কম সংখ্যক সৌদিবাসী-ই আছেন যারা এ লেখা সম্পর্কে জানেন। অবশ্য অনেকেই এটা জানে যে, কথাগুলো স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ। সে যাহোক, আজ আমরা সেটি নিয়েই আলোচনা করবো এবং আপনাদেরকে জানাবো, আসলে কী লেখা রয়েছে এই কিসওয়া কিংবা কাবার গিলাফে…

কিসওয়া কী এবং এতে কী লেখা রয়েছে? আরবি ভাষায় পবিত্র কাবার গিলাফ বা কাভারকেই বলা হয় কিসওয়া, যেটি প্রতি বছর যিলহজ মাসের নয় তারিখে পরিবর্তন করা হয়। সাতচল্লিশ পাল্লাবিশিষ্ট কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় এ কিসওয়া বা গিলাফ। প্রতিটি পাল্লার দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪৭ ও প্রস্থে প্রায় ১০১ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।

কিসওয়া বা গিলাফের উপরে আরবিতে মোট তিনটি সারিতে লেখা রয়েছে।

প্রথম সারি : প্রথম সারিতে লেখা আছে, ‘ইয়া আল্লাহ’ এবং যথাক্রমে এ শব্দটির ডানে রয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নাম ‘ইয়া হান্নান’ ও বামে রয়েছে ‘ইয়া মান্নান’। আভিধানিকভাবে ‘হান্নান’ শব্দটির অর্থ হলো, ‘বান্দার প্রতি ক্ষমাশীল’ এবং ‘মান্নান’ শব্দটির অর্থ হলো, ‘পরম দানশীল’।

দ্বিতীয় সারি : দ্বিতীয় সারিতে রয়েছে ইসলামের মূলনীতি সম্বলিত কালেমা তথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। অর্থাৎ ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ্ নেই এবং হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন আল্লাহর রাসুল’।

তৃতীয় সারি : আর তৃতীয় তথা সর্বশেষ সারিতে আল্লাহর প্রতি প্রশংসা জ্ঞাপন করে লেখা হয়েছে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজীম’। অর্থাৎ ‘আল্লাহ সমস্ত অপূর্ণতা থেকে মূক্ত এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁর,  আল্লাহ সমস্ত অপূর্ণতা থেকে মুক্ত এবং তিনি মহান’।

অনেক মুসলিম হয়তো এমন রয়েছেন যারা এ প্রবন্ধটি এখন পড়ছেন কিন্তু তারা আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা তাওয়াফ করার সময় এ বিষয়টা খেয়ালই করেনি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, তারা হয়তো এ সম্পর্কে একেবারেই কিছু জানেন না। না জানাটা কোনো দোষের নয় তবে জানার চেষ্টা অব্যাহত রাখআ জরুরি।

Comment

লেখক পরিচিতি

জাহিদ হাসান মিলু

আমি জাহিদ। সরকাারি কাগজপত্রের জাহিদুল ইসলাম থেকে বেসরকারি কাগজপত্রে জাহিদ হাসান মিলু- নামের এই বিচিত্র পরিবর্তনের পেছনে একটা মিষ্টি গল্প আছে।
জন্মেছি গোপালগঞ্জ জেলার অখ্যাত গ্রাম প্রশন্নপুরে, ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে। কী এক বিশেষ কারণে যেন কাগজকলমে বয়েস কমিয়ে আমাকে আরও তিনবছরের ছোটো করে রাখা হয়েছে। বাবা মা দুজনেই অক্ষর না শিখেও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম স্বাক্ষর হয়ে আছেন।
অবুঝ বয়েসে পারিবারিক স্বপ্নের কারণে ভর্তি হতে পেরেছিলাম মাদ্রাসায় , আলহামদুল্লিলাহ। জীবনের সবথেকে বড় পারিবারিক গিফ্ট ছিল এটা আমার জন্য। কুরআন পড়তে শিখলাম, মুখস্থ করতে পারলাম। অর্থ জানলাম এবং ব্যাখ্যাও পড়লাম।
আমাদের পাড়ার মাদ্রাসা কুলিয়ার ভিটায় পড়ার সময় ধর্মের প্রতি আমাদের ভেতরে যে বীজটা রোপিত হয়েছিল, সেটা ডালাপাল মেলে খোলা হাওয়ায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় প্রাণের প্রতিষ্ঠান এরাবিল মডেল মাদ্রাসায়। তারপর? তারপর আর কি- এখন পড়াশোনা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে।
দায়ী হওয়ার স্বপ্ন আমার সবথেকে বড় স্বপ্ন। স্বপ্নটি পূরণ করতেই পড়ছি, শুনছি, দেখছি, শিখছি এবং অপেক্ষা করছি।