করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের বড় বড় চিকিৎসাবিজ্ঞানীর বলছেন, এই মহামারী থেকে সুস্থ বা নিরপদ থাকার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উপায় হলো- স্যোশাল ডিসটেন্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই আক্রান্ত দেখগুলো লাকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ ও বাজার-মার্কেটসহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়। সৌদি আরবের মসজিদের হারাম ও মসজিদের নববী ছাড়া সব মসজিদে এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সকল দেশের সব মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়, এমনকি জুমার নামাজ আদায়েও নিষেদাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজানে যুক্ত করা হয়েছে বাড়িতে নামাজ আদায়ের আহবানমূলক নতুন শব্দমালা। এছাড়া বেশ কিছু দেশে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে গ্রহণ করা হয়েছে সামাজিক দূরত্বমূলক বিভিন্ন পদ্ধতিও।
করোনা ভাইরাসে সদ্য আক্রান্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও গ্রহণ করা হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ বিভিন্ন বাজার ও মার্কেট বন্ধ ঘোষণা করা হলেও মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় এবং শুক্রবারে সম্মিলিতভাবে জুমআর নামাজ আদায় প্রসঙ্গ নিয়ে মুসলিম প্রধান দেশটিতে চলছে বিভিন্ন আলোচনা। কোনো কোনো ইসলামী স্কলার বলছেন, রাসুলে (সা.) নির্দেশনা মোতাবেক এই পরিস্থিতিতে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় না করে ঘরে আদায় করাই উত্তম এবং এটা ইসলামী বিধান সম্মত। কারো কারো অবস্থান এ ব্যাপারে খুবই শক্ত- কোনোক্রমেই তারা মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ করার পক্ষে নন।
বিষয়টি নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ, মোহাম্মাদপুরস্থ বাইতুস সালাম জামে মসজিদের খতিব মুফতি হাবীবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, ভূমিপল্লী আবাসন জামে মসজিদের খতিব শায়খ আহমাদুল্লাহ এবং বারিধারা জামে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারের খতিব মাওলানা মাসউদ আহমদ মতামত ব্যক্ত করেন।
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। জীবনের প্রায় সকল ভালো-মন্দ পরিস্থিতিতে করণীয় বাতনো রয়েছে ইসলামে। সুতরাং করোনা ভাইরাসের এই মহামারী লগ্নে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর করণীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সময় উপযোগী সিন্ধান্তে আলোকিত হোক বাঙালি মুসলিম সমাজ। করোনা নামক বালা দূরীভূত হোক লাল-সবুজের এই জমিন থেকে- এমনটাই প্রত্যাশা রইলো।