দোয়া বিধান

কোন ৬ ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ মহান সব সময় কবুল করেন?

কে না চায় আল্লাহ মহান তার দোয়া কবুল করুক? প্রত্যেক মুসলিমই এই আশা করে আল্লাহ মহানের দরবারে হাত তোলেন তিনি যেন তার এই দোয়া, তার মোনাজাত কবুল করেন। বহু আলেম-উলামা গুরুত্বের সঙ্গে এই কথা বলেছেন যে, আল্লাহর কাছে দোয়া করার জন্য অজু করা কোন আবশ্যক বিষয় নয়। কেবলমাত্র অন্তরের পবিত্রতাই আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় বিষয়।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, যখনই কোনো বান্দা  আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে কোনো কিছু চায় আল্লাহ তাআলা তার সেই দোয়া কবুল করেন বা ভবিষ্যতের কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করেন। তবে দুই ধরনের দোয়া কখনেই কবুল হয় না। আর তা হলো-  যদি কোনো ব্যক্তি ইসলামে অগ্রহণযোগ্য বা ইসলামের বিধি লঙ্ঘন করে এমন কোনো দোয়া করে তবে এই ধরণের দু’আ কখনই কবুল হয় না।

হাদিসে রাসুলের (সা.) প্রতীয়মান হয়েছে যে, ৬ শ্রেণীর মানুষ এমন রয়েছেন, যাদের দোয়া আল্লাহ মহার ফেরত দেন না অর্থ্যাৎ তাদের দোয়া কবুল হয়। আপনি কি জানেন, সেই ৬ শ্রেণীর মানুষ করা? জেনে না থাকলে চলুন এখনই জেনে নেই…

১. অসুস্থ ব্যাক্তির দোয়া : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, যদি তুমি কোনো অসুস্থ ব্যাক্তিকে দেখতে যাও তখন তাকে বলো তোমার জন্য দোয়া করতে। কারণ অসুস্থ ব্যাক্তির দোয়া ফেরেশতাদের দোয়ার মতোই কার্যকর হয় বা কবুল হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ)

২. রোজাদার ব্যক্তির দোয়া : রোজাদার ব্যক্তির দোয়া জাদুর মতো কাজ করে। অনেক উলামায়ে কেরাম ইবাদাত ও দোয়া করার জন্য রোজার রাখার মুহূর্তকে সোনালী মুহুর্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। হজরত ওমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, যখন রোজাদার ব্যাক্তি ইফতার করে তখন তার দোয়া ফেরত দেয়া হয় না। (সুনানে ইবনে মাজাহ)

৩. সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ধরনের দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে না। এক. মজলুম বা নিপীড়িত ব্যাক্তির দোয়া। দুই. মুসাফিরের দোয়া। তিন. সন্তানের জন্য পিতার দোয়া। (জামে তিরমিজি)

৪. কোন ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার জন্য অপর ব্যাক্তির : কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার জন্য অপর একজন দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহর কাছে পৌঁছার আগেই আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন। উম্মু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মনিব (স্বামী) আমাকে হাদীস শুনিয়েছেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি তার ভাই এর অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করে, তার জন্য একজন নিয়োজিত ফিরিশতা আমীন বলতে থাকে এবং বলে, তোমার জন্যও অনুরূপ। (সহিহ মুসলিম)

৫. মজলুম বা নিপীড়িত ব্যাক্তির দোয়া : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা মজলুমকে জালেমের বিরুদ্বে সাহায্য করো। (জামে তিরমিজি)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ধরনের দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে না। এক. মজলুম বা নিপীড়িত ব্যাক্তির দোয়া। দুই. মুসাফিরের দোয়া। তিন. সন্তানের জন্য পিতার দোয়া। (জামে তিরমিজি)

৬. মুসাফির ব্যক্তির দোয়া : হাদীস শরীফে আছে, যখন কোনো ব্যাক্তি সফরে থাকে তখন তার দোয়া কবুল হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ধরনের দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে না। এক. মজলুম বা নিপীড়িত ব্যাক্তির দোয়া। দুই. মুসাফিরের দোয়া। তিন. সন্তানের জন্য পিতার দোয়া। (জামে তিরমিজি)

Comment

লেখক পরিচিতি

আব্দুর রহমান রাশেদ

আমি আব্দুর রহমান রাশেদ। জন্ম গাজীপুরের বোর্ড বাজারে। বাবা আলেম না হলে ও সন্তানদেরকে আলেম বানানোই তাঁর জল্পনা-কল্পনা। সেই হিসেবে আমাকে ভর্তি করালেন মাদ্রাসায়। চার-পাঁচ বছর বয়সেই সকালবেলা মকতবে আসা যাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমার প্রাথমিক শিক্ষা।
কোরআন শরীফ নাযেরা করেছি বাসার পাশের "বাইতুস সফীর আল ইসলামিয়া "মাদ্রাসায়। দীর্ঘ পাঁচ বছরে এই মাদ্রাসা থেকেই হিফজ সমাপণ করি এবং ২০১২সালে উত্তরা সেন্টার থেকে বেফাক বোর্ডের অধীনে হিফজ পরিক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করি। ঐ বছরেই পাড়ি জমাই রাজধানী ঢাকার খিলগাঁওয়ে অবস্থিত জামিআ ইকরা বাংলাদেশে। এখানে মীযান জামাত থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) শেষ করেছি।
২০১৯ সালে আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমীয়া বংলাদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত দাওরায়ে হাদীস পরিক্ষায় মুমতায বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছি। বর্তমানে আদব বিভাগে অধ্যায়নরত আছি উক্ত মাদ্রাসায়।