সমাজে কিছু প্রবাদপ্রতিম কথা প্রচলিত। যেমন, ১. প্রচারেই প্রসার, ২. দশের চক্রে ভগবান ভূত, ৩. একটি মিথ্যা কথাকে ৭০ বার প্রচার করলে সত্যে পরিণত হয়ে যায়, ইত্যাদি। উল্লেখিত সব চিন্তা-চেতনার মূল উৎস হল ইহুদিবাদী মিডিয়াচক্র। শত শত বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন জাতির মধ্যে পরগাছার মতো বসবাস করার পাশাপাশি ওইসব দেশের সব প্রচারমাধ্যম, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ছায়া সরকার ইত্যাদি সবকিছুই ওরা নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমানে বিশ্বের এমন কোনো দেশের সরকারব্যবস্থা এবং কর্মক্ষেত্র নেই, যেখানে ইহুদি চক্রের উপস্থিতি নেই।
বিশ্বের প্রচারমাধ্যমগুলোর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের দ্বারা ইহুদিরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত দিনকে রাত, রাতকে দিন, সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য, সাদাকে কালো, কালোকে সাদা বলে প্রচার করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ওরা উপরে উল্লেখিত তিনটি পয়েন্টকে যথাযথভাবে মাথায় রেখেই মুসলিম জাহানের বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে এবং মগজধোলাই করে যাচ্ছে। আর মুসলমানরা অবোধ শিশুর মতো সবকিছু বুঝে না বুঝে গলাধঃকরণ করছে। ইহুদিরা সবসময় মুসলমানদের জাতশত্রু মনে করে। অবশ্য এর পেছনে ঐতিহাসিক কিছু কারণও রয়েছে। এ বিষয়ে অতি সংক্ষিপ্ত একটি আলোচনা এখানে তুলে ধরা হল।
মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) নবুয়ত প্রাপ্তির তেরো বছর পর মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুমে উনি হিজরত করে মক্কা থেকে মদিনায় চলে যান। মদিনায় আগে থেকেই বসবাসরত আওফ ও খাজরায নামক দুটি গোত্রসহ ইহুদিদের তিনটি প্রধান গোত্রের (বনু নযীর, বনু কায়নুকা ও বনু কোরাইযা) কাছে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছে দেন এবং মদিনাকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার ও শান্তির লক্ষ্যে ঐতিহাসিক ‘মদিনা সনদ’ ঘোষণা করেন। এ দাওয়াতের ফলে আওফ ও খাজরায গোত্রের অধিকাংশ মানুষসহ কিছু সংখ্যক ইহুদি পণ্ডিত যাদের আসমানি কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলের ওপর গভীর জ্ঞান ছিল তারা মুসলমান হয়ে যান। বাদবাকি ইহুদিরা মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) হত্যা করার চক্রান্তে গোপনে মুনাফিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইসলামের অগ্রযাত্রায় বাধাপ্রদান করাসহ ঐতিহাসিক মদিনা সনদের চুক্তিগুলো একের পর এক লঙ্ঘন করতে শুরু করে।
পরে ওরা খায়বারে অবস্থান করেও নানামুখী চক্রান্তে লিপ্ত হলে অবশেষে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) খায়বর অভিযান পরিচালনা করেন এবং ইহুদিদের সব দুর্গ দখল করে মুসলমানদের অধীনে নিয়ে আসেন। পরের ধাপে সমগ্র আরব উপদ্বীপ থেকে কুচক্রী ইহুদিদের বিতাড়ন করা হলে বিতাড়িত ইহুদিরা তদানীন্তন রোমান সাম্রাজ্যের সিরিয়া সীমান্ত পাড়ি দিয়ে খ্রিস্টান জগতের বিভিন্ন দেশে পরগাছার মতো জীবন-যাপন করতে শুরু করে। এরপর থেকে ১৯৪৮ সালে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার আগ পর্যন্ত কোনো রাষ্ট্রীয় ঠিকানা ইহুদিদের ছিল না।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৯১৮) চলাকালীন কুখ্যাত বেলফোর ঘোষণার (২ নভেম্বর ১৯১৭) আলোকে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে প্রতিষ্ঠিত হয় মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া বলে পরিচিত দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল। ব্রিটিশরা কেন এ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল, এর পেছনে আরেকটি ইতিহাস আছে, যা অন্য একটি প্রবন্ধে পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে।
উল্লেখ্য, এই ব্রিটিশ জাতি কর্তৃক ১৯৪৮ সালে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে বিভাজন করার মাধ্যমে আরব-ইসরাইল বিরোধ এবং ১৯৪৭ সালে স্বাধীন কাশ্মীর রাষ্ট্রকে বিভক্ত করার মাধ্যমে পাক-ভারত বিরোধ আজও চলমান রয়েছে। মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত আরাকান প্রদেশেও ব্রিটিশ শাসনামলের শুরু থেকে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের পথ তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের পাক-ভারত খণ্ডযুদ্ধে ইহুদি রাষ্ট্রটি সরাসরি ভারতকে সর্মথন দিয়েছে এবং ২০১৮ সালে মিয়ানমারের আরাকানে মুসলিম গণহত্যার জন্য সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করেছে বলে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশ্বের অন্যান্য ধর্মের লোকেরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ। যার প্রমাণ নিকট অতীতেও আমরা দেখতে পেয়েছি, বর্তমানেও দেখতে পাচ্ছি। যেমন, বিশ্বের ৮০টি দেশের পতাকাবাহী এবং বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী বিশাল সামরিকবাহিনী অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৯৯১ এবং ২০০৩ সালে মুসলিম দেশ ইরাক দখল করেছিল এবং ২০০১ সালে আফগানিস্তান দখল করেছিল, যেখানে এখনও তাদের দখলদারিত্ব কায়েম রয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বাহিনী কর্তৃক ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান জোরদখল করা হয়েছিল।
আজকের নতুন প্রজন্মকে একথা খুব ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে যে, পশ্চিমা ইহুদিবাদী মিডিয়াগুলোর দৃষ্টিতে কোনো মুসলমান জনসমষ্টি তাদের হারানো মাতৃভূমি উদ্ধারের পাশাপাশি জানমাল ও ইজ্জত-আব্রু-সম্ভ্রম রক্ষার জন্য যদি সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে কিংবা গেরিলা হামলা চালায়, তাহলে সেসব গ্রুপ/ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী বলে সংজ্ঞায়িত করার অপচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু জোরপূর্বক কোনো মুসলিম ভূখণ্ড দখলদার বাহিনীকে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে না। যেমন, উদাহরণ ১. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির (১৯৩৯-১৯৪৫) পর ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষ ১৯৪৭ সালে বিভক্তির প্রাক্কালে মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ‘দ্বিজাতিতত্ত্ব’। এই দ্বিজাতিতত্ত্বের আলোকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অঞ্চলগুলোর একত্রিত নামকরণ করা হয়েছিল পাকিস্তান এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু অঞ্চলগুলোর একত্রিত নামকরণ করা হয়েছিল হিন্দুস্তান বা ভারত। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত আমাদের বাংলাদেশ ভূখণ্ডটি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৪৭ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সিলেটের জনগণ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের (এখন বাংলাদেশ) সঙ্গে যোগ দিয়েছিল, যা ছিল ব্রিটিশ-ভারতের আসাম প্রদেশের একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা। কিন্তু দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভক্তির প্রাক্কালে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের মুসলমানদের হয় পাকিস্তানের সঙ্গে যোগদান অথবা সম্পূর্ণ স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকার কোনো সুযোগ না দিয়ে বরং ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে ভারতের সর্বশেষ ইংরেজ শাসক লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের নির্দেশে বৃহত্তম স্বাধীন কাশ্মীরের জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চল দখল করা হয়েছিল, যা এখন পর্যন্ত দখল করে রাখা হয়েছে। কাশ্মীরি জনগণকে ভারতের সঙ্গে অবস্থানের ব্যাপারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের ৪৭ নম্বর প্রস্তাবে কাশ্মীরে গণভোটের বিষয়টিও নাকচ করে দিয়েছে ভারত।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদারিত্বকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে, ১৯৬৫ সালের আগস্টে এবং ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্গিল যুদ্ধসহ তিনটি বড় আকারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এছাড়াও ২০০১, ২০০৭, ২০০৮, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত ছোট থেকে মাঝারি আকারের বিভিন্ন সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে চিরবৈরী ও পারমাণবিক শক্তিধর এ দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে। তবে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত কাশ্মীরি মুসলিম বালকের আত্মঘাতী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরমাণু শক্তিধর দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করায় উপমহাদেশসহ বিশ্বব্যাপী পরমাণু যুদ্ধের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পশ্চিমা ইহুদি মিডিয়াগুলোর চোখে কাশ্মীর দখলকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন ও নির্মূল অভিযানের ঘটনাগুলোকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলে সংজ্ঞায়িত করা হয় না, বরং উল্টোভাবে ১৯৮৯ সাল থেকে মাতৃভূমি উদ্ধারের পাশাপাশি জান-মাল ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য আত্মনিয়োগকৃত স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরি জনগণের বিভিন্ন গ্রুপ বা ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
ভারত দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলাকারী ব্যক্তি ভারতীয় সেনাদের চরম নিপীড়নের শিকার একজন স্কুলগামী মুসলিম বালক, যাকে স্কুল থেকে ফেরার পথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করার পর চরম নির্যাতনের পাশাপাশি মাটিতে শুইয়ে দিয়ে নাকে-খত দিতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বালকটির মা-বাবার বক্তব্য থেকে জানা গেছে। ভারতীয় সেনাদের চরম নিপীড়নের শিকার জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম বালক আদিল তার অপমানের প্রতিশোধের স্পৃহা থেকে হারানো মাতৃভূমি উদ্ধারের পাশাপাশি জান-মাল ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য আত্মনিয়োগকৃত স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরি জনগণের একাংশ। এক্ষেত্রে কাশ্মীরি জনগণের ওপর দখলদার ভারতীয় সেনাদের নিপীড়ন-নির্যাতনকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সংজ্ঞায় না ফেলে উল্টোভাবে বিশ্বের কথিত খলনায়কচক্র ও মিডিয়াগুলোর দ্বারা স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরি জনগণকে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে।
উদাহরণ ২. সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বাহিনী কর্তৃক ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান জোরদখল করার ঘটনাকে এবং ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগানিস্তান পুনর্দখল করার ঘটনাপ্রবাহকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হিসেবে না দেখে বরং সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াকু ও স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন আফগান মুজাহিদিন গ্রুপকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে/হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর আফগানিস্তানে সোভিয়েত সৈন্য প্রবেশের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল, আর ১৯৮৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তান থেকে সর্বশেষ সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। এই যুদ্ধে প্রায় ২০ লাখ আফগান বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারায়। ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ নাটকের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো-বাহিনী আফগানিস্তান আক্রমণ করে। আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের হস্তক্ষেপ একটি প্রলম্বিত যুদ্ধরূপে এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে, যার পরিসমাপ্তি কখন ঘটবে তা নিশ্চিত নয়।
উদাহরণ ৩. বর্তমানে ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের চলমান রণাঙ্গনে যেসব মুসলমান পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার জন্য লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন তারাও কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ও ইহুদি মিডিয়ার দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী। উদাহরণ ৪. কুখ্যাত বেলফোর ঘোষণার (২ নভেম্বর ১৯১৭) আলোকে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে প্রতিষ্ঠিত মধ্যপ্রাচ্যের দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলের সন্ত্রাসী শাসকদের দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সম্মিলিত জনগণের ইন্তিফাদা বা প্রতিরোধ আন্দোলনকে এবং হামাস ও পিএলও-এর স্বাধীনতা আন্দোলকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলে সম্প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের জনগনের প্রথম ইন্তিফাদা ছিল ১৯৮৭-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত, দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ছিল ২০০০-২০০৫ সাল পর্যন্ত এবং তৃতীয় ইন্তিফাদা শুরু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর তারিখে জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার পর থেকে, যা চলমান রয়েছে। উদাহরণ ৫. মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের লাখ লাখ মুসলিম নর-নারী, শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের উৎখাতসহ গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার পরও আরাকান থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্মূলকারী মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ভাগ্যে রাষ্ট্রীয় ‘সন্ত্রাসী’ বাহিনী শব্দটি না জুটলেও আরাকানের স্বাধীনতাকামী মুসলিম গ্রুপ ‘আরসা’র কপালে ঠিকই সন্ত্রাসী শব্দের তকমাটি বিশ্বের ইহুদি মদদপুষ্ট মিডিয়াগুলো লাগিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
উদাহরণ ৬. চীনের ঝিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলমানদের ইসলামী ধারার জীবন-যাপন ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে চীন সরকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলে আখ্যায়িত করে প্রচণ্ড দমন অভিযান চালাচ্ছে। উপরে উল্লেখিত দেশগুলোতে বেঁচে থাকার জন্য সামান্য প্রতিবাদ করলেও মুসলমানদের কপালে সন্ত্রাসী শব্দের তকমা লাগান হচ্ছে। সারা দুনিয়া যেন আজ মুসলমানের জন্য একটি কারাগার। এসব বহুমুখী ঘটনার প্রেক্ষাপটে এটি পরিষ্কার যে, ইহুদি নিয়ন্ত্রিত ও মদদপুষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো সন্ত্রাসী শব্দটি শুধু মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ করে রেখেছে।
সৌজন্যে : দৈনিক যুগান্তর