রজব মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় হিজরি সনের রজব মাস শুরু হবে আগামী ৯ মার্চ শুরু। এই হিসেব মোতাবেক পবিত্র শবে মিরাজ পালিত হবে আগামী ৩ এপ্রিল বা ২৬ রজব। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক থেকে বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ সভাপতিত্ব করবেন। এছাড়া জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি অন্যান্য সদস্যগণ এ সভার অংশ গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, মহান আল্লাহর নির্দেশে হজরত জিবরাইলকে (আ.) সঙ্গে নিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন। ৬২০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ রজব রাতে মহানবী (সা.) এর সঙ্গে সরাসরি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অলৌকিক এ ঘটনাকে ইসলামী পরিভাষায় শবে মিরাজ বা মিরাজের রাত্রি বলা হয়। ‘শবে মিরাজ’ বা ‘লাইলাতুল মিরাজ’- ফারসি শব্দ। যার অর্থ হলো রাত, রাত্রি বা রজনী। আবার ‘লাইলাতুন’ আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে রাত বা রজনী। আর ‘মিরাজ’ আরবি শব্দ। এর অর্থ উর্ধ্বগমন বা উর্ধ্ব গমনের বড় মাধ্যম। ‘শবে মিরাজ’ শব্দ দুটির সম্মিলিত শাব্দিক অর্থ হলো- উর্ধ্বগমনের রাত বা রজনী।
ইসলামী পরিভাষায় রাসূল (সা.) যে রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছায় তার ডাকে সাড়া দিয়ে উর্ধ্ব আকাশে গমন করেছিলেন সেই রাত ও সেই শুভ ও পবিত্র যাত্রাকে ‘শবে মিরাজ’ বা ‘লাইলাতুল মিরাজ’ বলা হয়। মিরাজের এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি কোন তারিখে সংঘটিত হয়েছে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মতপার্থক্য লক্ষ করা যায়। কোনো কোনো ঐতিহাসিকদের মতে, রাসূলের (সা.) নবুয়তের ৫ম বছর এই ঘটনাটি সংঘঠিত হয়েছে। আবার কারো কারো মতে, নবুয়তের ৬ষ্ঠ বর্ষে। এভাবে দ্বাদশ বর্ষে সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে মতামত পাওয়া যায়। তবে হাদিসের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা ও অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের প্রসিদ্ধ মতামত হলো- পবিত্র এই ঘটনা রাসূলের (সা.) নবুয়তের ৫ম বছর ২৭ রজব রাতে সংঘঠিত হয়েছে।
কোনো কোনো এলাকায় খুব ধুমধামের সাথে শবে মিরাজ পালন করা হয়। শবে মিরাজকে শবে বরাত ও শবে কদরের মতো বরকতময় রাত মনে করা হয় এবং এই রাতে বিশেষভাবে শবে মিরাজের নামাজ আদায় করা হয় আর পরেরদিন শবে মিরাজের রোজা রাখা হয়। ইসলামী শরীয়তে এসব আমলের কোনো ভিত্তি নেই। কোরআন-হাদিসে এর কোনো সমর্থন পাওয়া যায় না। সুতরাং শবে মিরাজকে শবে বরাত বা শবে কদরের মতো মনে করা এবং উদযাপন করা সম্পূর্ণ বিদআত। মিরাজের ঘটনাকে মহানবী (সা.) এর আধ্যাত্মিক সফর হিসেবে মনে করেন ওলামায়ে কেরাম। এদিন বিশ্বের মুসলমানরা বিশেষ নামাজ, দোয়া ও ইবাদতের মাধ্যমে দিনটি পালন করেন।