ফিচার স্থাপত্য-নিদর্শন

কেরামতিয়া বড় মসজিদটি কার—  বাংলাদেশ নাকি ভারতের?

এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট : জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা দোলাপাড়া সীমান্তে কেরামতিয়া বড় মসজিদের দোতলার নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ওই মসজিদের জানালার নির্মাণ কাজে বাঁধা দেন ভারতের শিতলকুচি থানার অমিত ক্যাম্পের বিএসএফ’র টহল দল। এ ঘটনায় বাংলাদেশী লোকজনসহ মসজিদে জুমআর নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়।

জানা গেছে, ওই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া সীমান্ত এলাকায় মোঘল আমলে কেরামতিয়া হজুর নামে এক দরবেশ বসবাস করতেন। তার সহযোগিতায় সেখানে ওই সময়ে একটি ছোট মসজিদও নির্মাণ হয়। মৃত্যুর পর মসজিদের পাশেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। পরে টিনশেট করে একটি বড় আকারের মসজিদ নির্মাণ হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় মসজিদ ও মাজারটি জিরোপয়েন্টে পড়ে যায়। কেরামতিয়া হুজুরের মাজার ও মোঘল আমলের মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ নানা নিয়তে নামাজ পড়তে আসে।

মসজিদটি পুণঃনির্মাণের কাজ শুরু হলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনের অজুহাতে মসজিদ নির্মাণে বাঁধা দেয় ভারতীয় বিএসএফ। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে মসজিদের নকশা অনুমোদন হওয়ার পর ওই বছরের ২৯ এপ্রিল দোতলা মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ নির্মাণের কাজ এখনো চলছে। কয়েক দিন ধরে মসজিদের দোতলায় জানালায় গ্লাস লাগালো কাজ চলছে। কিন্তু হঠাৎ শুক্রবার দুপুরে ভারতীয় বিএসএফ ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।


মসজিদের পাশে অবস্থিত কেরামতিয়া হুজুরের মাজার। ছবি : এস কে সাহেদ


মসজিদে নামাজ পড়তে আসা আসাদুল ইসলাম জানান, ‘জন্মের পর থেকেই দেখছি কেরামতিয়া হুজুরের মাজার ও মসজিদকে ঘিরে এখানে প্রতি শুক্রবার হাজার হাজার নারী ও পুরুষ এসে আলদা আলদা ভাবে জুমআর নামাজ আদায় করে। কিন্তু দুই দেশের রাষ্ট্র পর্যায়ে নকশা অনুমোদন হওয়ার পরেও ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশে প্রবেশ করে বাঁধা দেয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে’।

মসজিদ কমিটির সম্পাদক আলিমুদ্দিন জানান, ‘দুই দেশের মধ্যে নকশা অনুমোদন হওয়ার পর আমরা মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করি। কিন্তু প্রায় সময় ভারতীয় বিএসএফ নানা অজুহাতে নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। জানালায় রঙ্গিন গ্লাস লাগাতে বাঁধা দিলে আমরা সাদা গ্লাস লাগাতে শুরু করি। কিন্তু শুক্রবার সেই গ্লাস লাগাতেও বাঁধা দেয় তারা। প্রতি শুক্রবার এ মসজিদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ বিভিন্ন নিয়তে নামাজ পড়তে আসে’।

তবে ৬১-বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির বড়খাতা কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার ইব্রাহিম মোল্লা জানান, ‘ভারতীয় বিএসএফ মসজিদের নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলেও নির্মাণ কাজ এখন বন্ধ নেই। ভারতীয় বিএসএফ আমাদের সাথে নিয়ে মসজিদের নির্মাণ কাজ ঘুরে দেখেছেন। এখন নির্মাণ কাজ চলছে পাশাপাশি এ বিষয়ে বিএসএফর সাথে আমাদের আলোচনাও হচ্ছে’।

Comment

লেখক পরিচিতি

ইসলাম প্রতিদিন

ইসলাম প্রতিদিন- এটি ইসলাম প্রতিদিন.কমের একটি অফিসিয়াল আইডি। যাদের নামে ইসলাম প্রতিদিনে কোনো আইডি নেই, আমরা সাধারণত এই আইডির মাধ্যমে তাদের লেখাগুলো ইসলাম প্রতিদিন.কমে প্রকাশ করে থাকি।