ফিচার ভাষা-শিল্প-সাহিত্য

ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃভাষা বাংলা

ভাষা হলো মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম। প্রত্যেক প্রানির নিজস্ব ভাষা রয়েছে। তেমনি আমাদের একটি মাতৃভাষা রয়েছে সেটি হল বাংলা। ১২০৩ সালে তুর্কিবীর ইখতিয়ার উদ্দিীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজীর বাংলা বিজয়েংর মধ্যে দিয়ে বাংলাভাষা ও সাহিত্যের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। একসময় হিন্দু পুরিহিতরা প্রচার করত যে বাংলায় কথা বলক্ষে সে নরকে যাবে। তাছারা বৃটিশরা তাদের নিজস্ব ভাষা ও সাংস্কৃতি এতদাঞ্চলে চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বাংলা ভাষায় বিবিধ সাহিত্য রচনা করে এ ভাষায় বিবিধ রতনে সমৃদ্ধ করে। সর্বোপরি ১৯৪৭ সালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান মিলে স্বাধীন পাকিস্তানের জন্ম হয়। এ সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে থাকা পশ্চিম পাকিস্তানের লোকেরা উর্দু রাষ্ট্যভাষা তরতে চায়। তখন এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন এ দেশের ছাত্র জনতা। যারা অধিাকার বঞ্চিত তাদের অধিকার আদায় করতে হবে। আল¬াহ তায়ালা বলেন, যাদের লড়াই করতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের নির্দেশ করা দেওয়া গেল এ জন্য যে তারা অধিকার বঞ্চিত নিপীড়িত হয়েছে। (সূরা হজ্জ-৩৯)
১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী ছাত্র জনতার অধিকার রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ করে। এসময় আতংকিত ভাবে বিক্ষোভরত ছাত্রদের উপর গুলি চালায় পাকিস্তানি পুলিশ। এতে সালাম,রফিক,জব্বার,শফিকমহ বেশকয়েকজন শিক্ষার্থী নিজের বুকের তাজা লাল রক্ত বিলিয়ে দিয়ে তাদের আক্রমনে মাটিতে লুটিয়ে পরেন। শহিদ হন বুকের রক্ত দিয়ে। অন্যের হতে অন্যায় ভাবে মৃত্যুবরন করেছেন তারা। যাদের অন্যায় ভাবে হত্যাকরা হয় তারা শহীদ। ইসলামের আলোচনা অনুযায়ী ভাষার জন্য যারা প্রান দিয়েছেন তারা শহীদ। শহীদের মর্যাদা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে ঋণ ব্যতিত শহীদের সকল গুনাহ মহান আল-াহ তায়ালঅ মাপ করে দেন। যেহেতু তাদের আন্দোলন ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধ যেমন পূর্ব বাংলার অধিকাংশ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগন জোর করে এদেশের মানুষের উপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিচ্ছিল। তখন তারা ন্যায় অধিকারের জন্য স্পষ্ট দাবি করেছিল। আর এ্টাই হল জিহাদ। রাসুল(সা.) অত্যাচারি শাসকের বিরুদ্ধে হক তথা সঠিক কথা বলা অথ্যাৎ ন্যায় অধিকার প্রদান করার স্পষ্ট দাবী করাই শেষ্ঠ জিহাদ। (তিরমিযী, আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ঈসা, আস সুনান, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪৭১,হাদিস নং-২১৭৪)
বাংলাভাষার জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। সম্পদের জন্য,ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে দেশে লড়াই করে কিন্তু মাতৃভাষার জন্য লড়াইয়ের ইতিহাস শুধু বাঙালিরাই তৈরি করেছে। আমরা তাদের ভূলবনা। তাদের জন্য নির্দিষ্ট একদিন খালিপায়ে হেটে সম্মান প্রর্দশন করার জন্য শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় পরবর্তীতে তাদে স্বরন খুব কমই পরে তাদের আত্তার মাগফিরাতের জন্য হয়না কোন দোয়া সঠিকভাবে ব্যাববহার করা হয়না তাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হওয়া ভাষা ভাষা শুদ্ধভাবে বলা ও লিখতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বিশুদ্ধ মাতৃভাষায় কথা বলেছেন তার আলোচনা ও বচনভঙ্গি ছিল অতুলনীয়। মানবতার সার্বিক কল্যানে মাতৃভাষার চর্চা অনুশীলন সংরক্ষন ও উৎকর্স সাধনে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ন হতে হবে। সকলের সাথে সুন্দর ভাষায় কথা বলতে হবে। মহান আল¬াহ তায়ালা বলেন, আর তোমরা মানুষের সাথে সুন্দর ভাবে কথা বল। (সূরা বাকারা-৮৩)

Comment

লেখক পরিচিতি

মো. আবু তালহা তারীফ

একজন প্রাবন্ধিক ও বিশ্লেষক এবং গবেষক। দেশের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া,ঢাকার থেকে দাখিল, আলিম, ফাজিল সাফল্যেও সাথে উত্তীর্ন হয়ে একই প্রতিষ্ঠানে কামিল হাদিস বিভাগে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগে অনার্স ৪র্থ বর্ষে অধ্যায়ন করছেন তরুণ এই লেখক।
ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য চর্চা করতেন তিনি। যার ফলে কলম ধরেছেন ছোটবেলা থেকেই। বিভিন্ন রচনা প্রতিযোগীতায় জাতীয় পর্যায়ে অসংখ্য বার পুরুস্কারও পেয়েছেন। দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় তার জীবনের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। জাতীয় বিভিন্ন দৈনিকের ধর্মীয় পাতায় তার লেখা দেখা যায় প্রতিনিয়তই।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন বইয়ের সম্পাদনাও করেছেন তালহা তারীফ। নবম শ্রেনীতে অধ্যায়ন অবস্থায়ই তার লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয়। তরুন আলোচক হিসেবে মিডিয়া ও মাহফিল পাড়ায় তার ব্যপক পরিচিতি রয়েছে।