ওয়াজ-মাহফিলের বক্তাদের বয়ানে বিভিন্ন বিষয় আমলে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফাবা), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারি কয়েকটি দফতরকে প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (৩১ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। সূত্রে জানা গেছে, এই মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে মাহফিলের ১৫ জন বক্তার নাম উল্লেখ করে জানানো হয়েছে— ‘এই বক্তারা সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মবিদ্বেষ, নারী বিদ্বেষ, জঙ্গিবাদ, গণতন্ত্রবিরোধী ও দেশীয় সংস্কৃতিবিরোধী বয়ান দেন বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা রেডিক্যালাইজড হয়ে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষ করে শীত মৌসুমে আলেম-ওলামাদের ইসলামি বক্তব্য শোনানোর জন্য ওয়াজ মাহফিল হয়ে থাকে। এসব আয়োজন ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার হয়।’
মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনটিতে ১৫ জন বক্তার নাম উল্লেখ করা হয়। তারা হলেন- আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসূফ (সালাফি), মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান (মুহতামিম, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া, মোহাম্মদপুর), আল্লামা মামুনুল হক (যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস), মুফতি ইলিয়াছুর রহমান জিহাদী (প্রিন্সিপাল, বাইতুল রসূল ক্যাডেট মাদ্রাসা ও এতিমখানা, ক্যান্টনমেন্ট), মুফতি ফয়জুল করিম (জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির, ইসলামী আন্দোলন), মুজাফফর বিন বিন মুহসিন, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন (যুগ্ম মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোট), মতিউর রহমান মাদানী, মাওলানা আমীর হামজা, মাওলানা সিফাত হাসান, দেওয়ানবাগী পীর, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, হাফেজ মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, মোহাম্মদ রাক্বিব ইবনে সিরাজ।
প্রতিবেদনে বক্তাদের বিভিন্ন সময় মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও লিংক রয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসূফের বিষয়ে এতে জানানো হয়— ইউটিউবে ইসলামী বাণী চ্যানেলে প্রচারিত এক বয়ানে তিনি বলেছেন, ‘মূর্তির আস্তানায় যাওয়া হারাম। আমরা মুসলিম, মূর্তি ভাঙতে জন্ম নিয়েছি, মূর্তি গড়তে জন্ম নিইনি। মনে রেখো, আমি সেই জাতি, যে জাতির রক্তের সঙ্গে মিশে আছে মূর্তি ভাঙার নীতি।’ এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান সম্পর্কে জানানো হয়— এক বয়ানে তিনি জিহাদ সম্পর্কে বলেছেন, ‘জিহাদকে বলি দেওয়ার কারণে আজ মুসলমানদের এই অবস্থা আল্লাহ বলেছে। এই ফেতনা থেকে দূর হওয়ার একমাত্র রাস্তা যেখানে পাবি, সেখানে শয়তানদের কূপা। এদের কোপাতে হবে। আল্লাহ রাসূলকে গালি দিবি, তোরে কোপামু, ইসলামের বিরুদ্ধে আইন করবি, তোর কপালে কোপ আছে। গণতন্ত্র ইসলামে নেই।’
সৌজন্যে : বাংলা ট্রিবিউন