হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম মাসর জব। এ মাসে মুমিনের হৃদয় দরজায় পরম পুণ্যের মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা পৌঁছায়। ইসলামে রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। হিজরি বছরের যে চারটি মাসকে আল্লাহ তাআলা শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য দিয়েছেন, সেগুলোকে পরিভাষায় ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত মাস বলা হয়। রজবও এই চার মাসের অন্যতম।
রজব মাস বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) -এর কাছে সর্বপ্রথম এ মাসেই অহি নাজিল হয়েছে। এছাড়া হিজরি পঞ্চম বর্ষের রজব মাসেই মুসলমানরা ‘হাবশা’র (বর্তমান ইরিত্রিয়া) উদ্দেশ্যে প্রথম হিজরত করেন। (উয়ুনুল আছর, ১/১৫২) পবিত্র সিয়াম সাধনার বিশেষ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে দুই মাস আগে রজব থেকেই মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রিয় নবী (সা.) প্রতিবছর রজব মাস এলেই রমজানুল মোবারকের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। তার ইবাদত-বন্দেগি সব কিছুতেই একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেত।
রজব মাস সংক্রান্ত একটি হাদিসে আছে, রজব মাস আগমন করলে রাসুল (সা.) এই দোয়া করতেন- ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন আর রমজান পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন।’ (বায়হাকি ফি শুয়াবিল ইমান, হাদিস নং: ৩৫৩৪, তাবরানি ফিল আওসাত, হাদিস নং: ৩৯৩৯, মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং: ২৩৪৬)
প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ মোল্লা আলী কারি (রহ.) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘অর্থাৎ হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের ইবাদত-বন্দেগিতে বরকত দান করুন এবং রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিয়াম-কিয়াম তথা রোজা ও তারাবিহর তাওফিক দান করুন।’ (মেরকাত-৩/৪৬৩)
সুতরাং প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের উচিত রজব মাস থেকে পবিত্র রমজানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করা। রাসুল (সা.) নিদের্শিত দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করা ।পাশাপাশি ইসলাম যেসব ইবাদত-বন্দেগিকে সমর্থন দিয়েছে, সেগুলো মান্য করা এবং শরিয়ত-বহির্ভূত অন্য কাজকর্ম থেকে সর্বদা বিরত থাকা