জীবন বিধান বিধান

ভূমিকম্পে নামাজ ছেড়ে দৌড়ালেন মুসল্লিরা, দাঁড়িয়ে রইলেন ইমাম : কী বলে ইসলাম?

লিখেছেন মিরাজ রহমান

ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ। সারা বিশ্বেই বড়-ছোট ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্প হয় বাংলাদেশেও। ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে গোটা জমিন। সাথে সাথে কেঁপে উঠে মানুষের মনও। ভূমিকম্প অনুভূত হলে যে যার মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল খোঁজেন। জীবন বাঁচানোর তাগিদে ছোটাছুটি করেন সবাই। পরম সুখের ঘর ছেড়ে এক মুহূর্তে নেমে আসেন পথে।

সম্প্রতি ইন্টারনেটে ভূমিকম্পের সময় নামাজ আদায়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, নামাজ আদায়ের মধ্যসময়ে ভূমিকম্প অনুভূত হলে কিছু মুসল্লি নামাজ ছেড়ে দৌড়ালেন কিন্তু পাশের দেয়ালে হাত লাগিয়ে নামাজ জাড়ি রাখলেন ইমাম মহোদয়। পাঠিত সুরার একই আয়াতকে কয়েকবার তিলাওয়াত করলেন তিনি কিন্তু নামাজ ত্যাগ করলেন না।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এহেন পরিস্থিতিতে আসলে করণীয় কী? এ বিষয়ে কী বলে ইসলাম? জান বাঁচানো তো ফরজ। এছাড়া অন্য সময়ে নামাজ আদায়ের সুযোগও তো রয়েছে। সুতরাং নামাজ আদায়রত অবস্থায় যদি ভূমিকম্প শুরু হয় একজন মুসলিম হিসেবে তখন করণীয় কী? নামাজ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করে পরবর্তীতে পুনরায় নামাজটি আদায় করে নিতে হবে নাকি নামাজ আদায়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে?

ভূমিকম্প এবং নামাজ বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে আরো একটি, আর তাহলো— একজন মানুষ ব্যক্তিজীবনে অসৎ। দূনীর্তি পরায়ণ বা হারাম আয় উপার্জনকারী। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়া মাত্রই নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং ভবন ধ্বসে মারাও গেলেন তিনি। ভূমিকম্পে এই মৃত্যু তার জন্য পরকালীন কোনো সুখবর বহন করবে কি?

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ভূমিপল্লী আবাসন প্রকল্প জামে মসজিদের খতিব শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মোহাম্মাদপুরস্থ বাইতুস সালাম জামে মসজিদের খতিব ও খ্যাতিমান বক্তা মুফতি হাবীবুল্লাহ মাহমদু কাসেমীর সঙ্গে। ওভারফোনে ইসলাম প্রতিদিনকে তারা জানান,  



সুপ্রিয় দর্শক! আশা করছি সুন্দর একটি সমাধন পেয়েছেন আপনারা। যত ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ রয়েছে ভূমিকম্প তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল। স্বপ্ল সময় স্থীতিশীল ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দূর্যোগ। আল্লাহ মহান আমাদের সবাইকে ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ইমানের হালতে অবিচল থেকে ইসলামের সঠিক বিধান জেনে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার নেক তাওফিক দান করুন। আমিন।

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।