জাতীয় সংবাদ

আইটিভিইউএসএয়ের আয়োজনে ইসলামিক মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আইটিভিইউএসএ (itvusa.tv) -এর সহায়তায় এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিস (AIMP) -এর উদ্যোগে পল্টনস্থ একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে দেশ বরেণ্য গবেষক, শীর্ষস্থানীয় আলেম, স্কলার, শিক্ষাবিদ, টিভি উপস্থাপক, আলোচক, ইসলামি লেখক, আবৃত্তিকার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে “Greet, Meet & Eat” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বব্যাপী দ্বীনী দাওয়াতের প্রচার-প্রসার, বর্তমান সার্বিক অবস্থা, দাওয়াতের পথ ও পন্থা, আন্তর্জাতিক ইসলামিক ঘটনা প্রবাহ, বিকৃতভাবে ইসলামকে যারা প্রচার করছে তাদের বিপরীতে কীভাবে সঠিকভাবে ইসলামকে রিপ্রেজেন্ট করা যায়, আরো নান্দনিকরুপে কীভাবে ইসলামিক দাওয়ার শক্তিকে সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক স্কেলে উপস্থাপন করা যায়, কীভাবে দায়ীদের স্কীলস ডেভেলপমেন্ট ও আত্মোন্নয়নের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ইসলামের দাওয়াতকে আরো ব্যাপক করা যায়– সে বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ইসলামী দাওয়াতকে আরো গ্রহণযোগ্যভবে উপস্থাপন করার জন্য কোন আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা যায় কিনা, ব্যক্তিগত আত্মোন্নয়নের মাধ্যমে নিজেদেরকে আরো নিবেদিতরুপে ইসলামী দাওয়ার কাজে কীভাবে আত্মনিয়োগ করা যায়– এ বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে।

মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালনা করেন এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিসের সদস্য সচিব হাফেজ ক্বারী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বখশী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সবার পরামর্শক্রমে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী আন-নদভীকে সভার সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এরপর বায়তুন নাজাত তাহফীজুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহর পরিচালক ও মিসরে ইলমুল কিরাত অধ্যয়নরত হাফেজ ক্বারী মাওলানা সাইদুল ইসলাম আসাদের সুললিত কন্ঠের পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়।

শুরুতেই প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন আই টিভি ইউএসএ (itvusa.tv)- এর সিইও মাওলানা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচারের কাজ একদল নিবেদিত প্রাণ ভাইয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আইটিভি উএসএ (itvusa.tv) আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার কাজ নিরলসভাবে করে যাচ্ছে। আমেরিকাতে মুনা, ইকনাসহ আরো অসংখ্য এ ধরনের ইসলামিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়, যেখানে মানুষ শত শত ডলার খরচ করে ইসলামিক অনুষ্ঠান শোনার জন্য আসেন। সে ধরনের প্রোগ্রাম বাংলাদেশে আয়োজন করা যদি সম্ভব হয় তাহলে সেটি একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে আপনারা যারা মিডিয়াতে দাওয়ার কাজ করছেন তারা এই মহান দায়িত্বটি নিয়ে চিন্তা করতে পারেন তাছাড়া আমেরিকাতে আপনাদের মধ্যে কেউ যদি গবেষণা কাজে স্কলারশিপের আবেদন করতে চান বা উচ্চশিক্ষা অর্জনে আগ্রহী হন অথবা আপনাদের সন্তানদের মধ্যে থেকে কেউ যদি আমেরিকাতে পড়াশোনা করতে চায় তাহলে আমরা এ ক্ষেত্রে আপনাদেরকে সহায়তা করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহএই পর্যন্ত আইটিভিইউএসএ (itvusa.tv)- এর দাওয়া কার্যক্রমে সাড়া দিয়ে ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আমেরিকাতে প্রায় শতাধিক ভাই ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে এসেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। শুধুমাত্র গত রমজানে প্রায় ১০ জন ভাই আমাদের দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। এভাবে আমরা দ্বীনী দাওয়াতের প্রচার-প্রসারে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি এবং আমরা আমাদের আইপি টিভিতে প্রায় আঘন্টার মত সম্পূর্ণ নতুন অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকি। আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা আরো মানসম্পন্ন ইসলামিক কন্টেন্ট তৈরি চেষ্টা চালিয়ে যাবো। আপনারা সবসময় আমাদের সাথে থাকবেনআমরা বিশ্বব্যাপী আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে ইসলামিক দাওয়াহর কাজ করে যেতে চাই। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন। জাযাকুমুল্লাহ”।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মাদ নাসরুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতীব হাফেজ ক্বারী মাওলানা নাযীর মাহমুদ, জগন্নাথ বিশবিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ আবুল কালাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ড. রেজাউল ইসলাম, মদীনাতুল উলূম কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, আহসানিয়া ইনষ্টিটিউট অব সুফিজমের শায়খ মুফতি ওসমান গনী, বিশিষ্ট টিভি অনুষ্ঠান পরিচালক ক্বারী মাওলানা এইচ.এম বরকতুল্লাহ, মসজিদ উত-তাকওয়া, ধানমন্ডি এর ইমাম ও খতিব মুফতী সাইফুল ইসলাম, এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা এ.কিউ.এম শফিউল্লাহ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইসলামীক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. মীর মানযুর মাহমুদ, বরেণ্য মুফাসসির ও খতীব শায়খ সাদিকুর রহমান আজহারী, বটতলা জামে মসজিদের খতীব মুফতী জাকারিয়া, মিসবাহুল উলুম কামিল মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস শায়খ মাহমুদুল হাসান, প্যানভিশন টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ বায়েজীদ মাহমুদ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সাব এডিটর আলী হাসান তৈয়ব, পাইকপাড়া সেন্ট্রাল জামে মসজিদের খতীব মুফতি মোঃ হেদায়েতুল্লাহ, মাদরাসাতুল কুরআনের পরিচালক গাজী সানাউল্লাহ, ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিক মিরাজ রহমান, কুরআনের আলো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ক্বারী মাওলানা আবু ইউসুফ, রাহবার গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব মুহাম্মাদ ইকবাল, ফিলিস্তিন এম্ব্যাসীর হেড অফ মিডিয়া ও কুরআন গবেষক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ মুহসিন মাশকুর, কুরআনের মানযিলের মহাসচিব মুফতি আবু সাইদ, দাওয়াহ টিভির হেড অব প্রোগ্রাম মোঃ কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক্ব) ভিজিট অফিসার মুফতি আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মনযুর-ই-ইলাহী। তিনি বলেন, আসলে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ছাড়া কোন কিছুর উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আমরা যদি ইসলামী দাওয়াকে বিশ্বব্যাপী আরো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে চাই তাহলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দাওয়া বিষয়ক গবেষণার কোন বিকল্প নেই আমাদের সবাইকে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে আরো বেশি গুরুত্ব প্রদান করতে হবে কারণ, যেখানে আমরা যেকোন বিষয়ের সঠিক উন্নয়ন দেখি সেখানেই দেখা যায় রিসার্চ ডেভলপমেন্টকে বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে তাই আমি আই টিভি ইউএসএ (itvusa.tv) এর আজকের প্রোগ্রামে সবাইকে অনুরোধ করবো আপনারা সর্বক্ষেত্রে রিসার্চ ডেভলপমেন্টকে গুরুত্ব দিন এতে আমাদের কর্মক্ষেত্রসহ সকল জায়গাতে আমরা মানসম্মত বিষয় ডেলিভারি দিতে ও প্রভূত উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ্‌”।  

ইসলামিক পয়েন্ট অব ভিউতে যে সবাই কখনোই এক জায়গায় আসবেনা এ বিষয়টির বাস্তবতা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আতাউর রহমান মিয়াজী বলেন, “দেখুন! সবাই যে সকল বিষয়ে আপনার সাথে একমত হবে বিষয়টি আসলে এমন নয়। বরং প্রত্যেকটি ব্যক্তির নিজস্ব সম্পূর্ণ আলাদা মতামত রয়েছে। বিশেষ করে ইসলামিক দাওয়ার ক্ষেত্রে সবাই নিজস্ব ঘরানা, চিন্তা ও পড়াশোনার উপর ভিত্তি করে একটি বিষয় প্রচার করে থাকেন। সবসময় এমন মনে করার কারণ নেই যে, আপনার দাওয়াতের পথ ও পদ্ধতির সাথে আরেকজনের দাওয়াতের ভাষা, পথ পদ্ধতি এক হবে। বরঞ্চ আমরা যে যার যার জায়গা থেকে নান্দনিকভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করবো। এর মধ্যেই কল্যাণ নিহিত”।

বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব বাড্ডা ইসলামিয়া কামীল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও রমনা থানা জামে মসজিদের সম্মানিত খতীব ড. মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসাইন মোল্লা তার বক্তব্যে বলেন, আমরা মিডিয়াতে এই যে কাজ করছি এই কাজগুলো কতটা মানসম্মত করতে পারছি এর দায় কিন্তু আমাদেরই তাছাড়া মানসম্মত ইসলামিক অনুষ্ঠান তৈরি করা সময়ের দাবি আমরা যারা টেলিভিশনের চাঙ্ক কিনছি এবং এ ব্যবসার সাথে জড়িত, আমরা কাকে আমাদের অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবে নেবো বা কাকে আমরা অনুষ্ঠানের আলোচক হিসেবে রাখবো বা কার মাধ্যমে অনুষ্ঠানগুলোর মান বাড়বে এই সম্পূর্ণ বিষয়গুলোর দায় কিন্তু আমাদেরই। এজন্যে অনুষ্ঠানের মান এবং ইসলামী সঠিক দাওয়াপ্রতি আমাদের সকলের গুরুত্ব দেয়া সময়ের দাবী”।

প্রখ্যাত টিভি উপস্থাপক ও ইসলামিক চিন্তাবিদ জনাব জয়নাল আবেদীন আজাদ কিছু বিষয়ে আত্মসমালোচনা করে বলেন, “আজ এখানে তো ভালোবাসা উপস্থাপনের জায়গা। আপনারা আমাদেরকে এখানে ডেকেছেন এ জন্য এখন আসলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সময়। কিন্তু আমি আজ এখানে কিছু বিষয়ে আত্মসমালোচনা করতে চাই। এই যেখানে বলা হচ্ছে ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটি”-  আসলে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব কী, সেটা কি আমরা জানি? জানিনা আমরা ইসলামিক আলোচনার কথা বলি আসলে ইসলামিক আলোচনা ধরণ কেমন হওয়া উচিত? এর ভেতরে কেমন প্রাণ থাকা উচিত? তা কি আমরা জানি? এই যে আমরা কুরআন নিয়ে কাজ করার কথা বলি, কুরআনের আলোচনা করে থাকি, অথচ আমরা কুনের ঐ সংশ্লিষ্ট আয়াতের ভেতরের বিষয়গুলো কিন্তু অনেকেই জানিনা কুরআনের আয়াত এবং এর ভেতরের কথা, শানে নুযুল, এ বিষয়ে আমরা অনেকেই সঠিকভাবে উপলব্ধি না করেই ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটি হয়ে যেতে চাই। এই কথাগুলো আমরা বারবার বলছি এই বিষয়টি আপনাদের নজরে আনার জন্য যে, এই বিষয়গুলো ততটা সহজ নয় যতটা সহজভাবে আমরা দেখছি এবং বুঝছি বিষয়গুলো আরও বেশি ভেতর থেকে উপলব্ধি করার দাবি রাখে আজকে এই অনুষ্ঠানে যেহেতু ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটি একত্রিত হয়েছেন, তাই আমার পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে আত্মসমালোচনা জায়গা থেকে আমরা সবাই নিজেকে বিচার করি। সবাই আমরা আজীবন শিখব এবং প্রতিটি বিষয়কে ভালো করে ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করব। কোন কিছুর গুরুত্ব বুঝে সেটিকে প্রচার করার এবং সেটিকে আত্মস্থ করার চেষ্টা করব তবে আমাদের আজকের এই ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটি”-  সহ আরো যা যা বলা হচ্ছে সেগুলো সফল হবে সবাইকে ধন্যবাদ”।

মতবিনিময় সভায় একেবারে শেষের দিকে প্রফেসর মোখতার আহমেদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন-, দেখুন আই টিভি ইউএসএ (itvusa.tv) এ পর্যন্ত কাজ করে তারা অনেক মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরাও আমাদের জায়গা থেকে যদি ইসলামকে মানসম্মতভাবে পৌঁছে দিতে পারি তাহলে আমাদের মাধ্যমেও এমন খিদমত সম্ভব। আপনি যেভাবেই পারেন বলুন।  যে জায়গায় আছেন সেখান থেকেই ইসলামিক দাওয়াতের আওয়াজ তুলুন আপনার ভয়েসকে ইসলামের আলো আলোকিত করে দ্বীনের কথা মানুষের সামনে তুলে ধরুন   একটি শহরের গল্প এরকম একটি শহরের গেইটে লেখা ছিল তুমি কি এই শহরটি সম্পর্কে জানো?” তখন একজন দায়ী সেখানে ঐ সাইবোর্ডের পাশেই আরেকটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে তাতে লিখে দিলেন “তুমি কি ইসলাম সম্পর্কে জানো?” এই একটি কথার মাধ্যমে পরবর্তীতে কথার এমনই প্রভাব পড়লো যে, ঐ ব্যক্তির হাতে এক হাজার লোক মুসলমান হয়ে গেল। সুবহানআল্লাহ! এভাবে আমরা কিন্তু আমাদের দাওয়াকে ছড়িয়ে দিতে পারিআমরা যে যতটুকু জানি সেই জ্ঞানের মাধ্যমে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সঠিক ইসলামের ভেতর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো। আসুন, আমরা যেখানে যে অবস্থাতেই আছি সবাই আল্লাহর দ্বীনের দায়ী হিসেবে নিজেদেরকে তুলে ধরব আল্লাহ তৌফিক দিনআমীন”।  

এরপর মতবিনিময় সভার সঞ্চালক ও এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিস এর সদস্য সচিব হাফেজ ক্বারী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বখশী এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিস (AIMP) সম্পর্কে কিছু কথা তুলে ধরে তাঁর ব্যক্তিগত কিছু স্বপ্নের কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিস (AIMP) -এর পক্ষ থেকে মিডিয়ায় উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকার জন্য উপস্থিত মিডিয়া আলোচকদের মাঝে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও  আইটিভি ইউএসএ (itvusa.tv)- এর সিইও মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী আন-নদভী সবার বক্তব্যের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন ব্যাক্ত করেন ও বৈশ্বিক স্কেলে ইসলামকে আরো সুন্দরভাবে রিপ্রেজেন্ট করার জন্য উপস্থিত মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের প্রতি আহ্বান জনান। সবশেষে ডিনারের মধ্য দিয়ে মতবিনিময় সভার সঞ্চালক ও এসোসিয়েশন অফ ইসলামিক মিডিয়া পার্সোনালিটিস এর সদস্য সচিব হাফেজ ক্বারী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বখশী সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।


মিডিয়া স্কলারদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও আইটিভি ইউএসএর সিইও মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ


 

Comment

লেখক পরিচিতি

মুহাম্মাদ মুহসিন মাশকুর

মুহাম্মাদ মুহসিন মাশকুর। হাফেজ ও মাওলানা। তরুণ গবেষক। জন্ম ফেনীতে। মুহসিন মূলত পড়াশোনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশোনা করেছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগে অনার্সের ইতিহাসে সেরা রেজাল্টটি তার। বর্তমানে মুহসিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. ইউসুফের অধীনে এম.ফিল করছেন। তার গবেষণার বিষয়, ‘দ্য মেথড অফ টিচিং দ্য মিনিং অফ আল কুরআন : এন এম্পিরিক্যাল স্টাডি অন বেঙ্গলি স্পিকিং পিপল।'
মুহসিন স্বপ্ন দেখেন, প্রতিটা বাঙালি মুসলমান আল কুরআনের অর্থ জানবেন। এ পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তাঁর কয়েকটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের পথে। অনার্সে কলা অনুষদে সর্বোচ্চ রেজাল্টের জন্যে পেয়েছেন ‘কুদরত-ই-খুদা বৃত্তি’, ‘ডিন এওয়ার্ড অফ অনার' মাস্টার্সের জন্যে পেয়েছেন, ডিন এওয়ার্ড অফ এক্সিলেন্স' এবং কলা অনুষদে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্যে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’।
কেবল একাডেমিক পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত নন মুহসিন। টেকনোলজি নিয়ে আছে তাঁর বেজায় আগ্রহ। ছেলেবেলা থেকেই গ্যাজেটের পোকা তিনি, ট্রাবলশুটার। টেকনোলজিতে তাঁর বেশ কিছু প্রফেশনাল কোর্সও করা আছে। তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালনা ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আয়োজিত ফাউন্ডেশন স্কিলস ডেভেলপমেন্ট কোর্স করেছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং সফট স্কিলসের উপর। তাতে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সনদ পেয়েছেন। লিড পরিচালিত ‘সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম ইন লিডারশিপ এক্সিলেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট কোর্স করেছেন। তাতে পিয়ারসন ইউকে এর সার্টিফিকেট পেয়েছেন।
এছাড়াও সামাজিক কাজে তাঁর দায়বোধ আছে। নবম থেকে ইন্টার পড়ুয়া ছাত্রদের তিনি নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণে কাউন্সেলিং করেন এবং ইংরেজি শেখান। তাদের নিয়ে পতিষ্ঠা করেছেন ‘লিভ ওয়েল’ নামে একটি মোটিভেশনাল প্রতিষ্ঠান।
অংশগ্রহণ করে থাকেন টেলিভিশনে বিভিন্ন ইসলামিক অনুষ্ঠানে। সাধারণ মানুষের মাঝে কুরআনের মর্ম ও এর শিক্ষা ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করছেন অনেকদিন ধরেই। সেই সূত্রে কাজ করেছেন নানাবিধ প্রতিষ্ঠানে; একাডেমী অফ কুরআন স্টাডিজ, কুরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনসহ আরো অনেক জায়গায়। তরুণ ও অভিজ্ঞ কুরআন পঠন-পাঠনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন সেন্টার ফর কুরআন স্টাডিজ (সি.কিউ.এস)।