আদব বেসিক ইসলাম

‘৭৮৬’ কি ‘বিসমিল্লাহ’র বিকল্প

লিখেছেন মিরাজ রহমান

প্রত্যেক মুমিন-মুলমানের উচিত প্রত্যেক ভালো কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা। এতে কাজে বরকত আসার সম্ভাবনা যেমন ত্বরান্বিত হয়; তেমনই আল্লাহর আদেশ ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নতও পালন হয়। বিভিন্ন নবী-রাসুলসহ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং তাঁর সাহাবা আজমাইন, তাবেঈন ও তাবে-তাবেঈনদের আমল হয়ে বুজুর্গানে দ্বীনগণ সব কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছেন এবং লিখেছেন। এক্ষেত্রে কোনো যুগে বিসমিল্লাহর কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহারের ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় না।

‘বিসমিল্লাহ’ লেখার এ বরকতময় ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করেই একটি সূক্ষ্ম বিভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’র পরিবর্তে ‘৭৮৬’ সংখ্যার ব্যবহার করা করেন অনেকেই। ঠিক কবে থেকে এবং কীভাবে ‘বিসমিল্লাহ’র বিকল্প হিসেবে এই সংখ্যার ব্যবহার শুরু হয়, তার সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় না।

অনেকে বলেন, আরবি বর্ণ ‘বা’, ‘সিন’ ও ‘মীম’-এর সংখ্যামানের যোগফল হলো ‘৭৮৬’। আরবি বর্ণ ‘বা’, ‘সিন’ ও ‘মীম’ দ্বারা যেহেতু ‘বিসমিল্লাহ’ নির্মিত, সুতরাং ‘বিসমিল্লাহ’র বদলে ‘৭৮৬’ লেখা বৈধ। বাস্তবতা হলো এই বৈধতার শরীয়তগত কোনো বৈধতা নেই। কোরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াসের কোনো মূলনীতির আলোকেও এ ব্যবহারের কোনো বৈধতার স্বীকৃতি পাওয়া যায় না।

কাজেই যে বা যারা ‘বিসমিল্লাহ’র বিকল্প হিসেবে ‘৭৮৬’ ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং এটাকেই বরকতময় ভাবেন; তাদের উচিত এটা ত্যাগ করে সম্পূর্ণরূপে ‘বিসমিল্লাহ’ ব্যবহার করা। ‘বিসমিল্লাহ’র বিকল্প হিসেবে ‘৭৮৬’ সংখ্যার ব্যবহারে ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ ও লেখার সওয়াব তো অর্জিত হবেই না, এ দিয়ে সুন্নতও আদায় হবে না। ‘বিসমিল্লাহ’র সংখ্যামান ‘৭৮৬’ হলেও নয়। (আহসানুল ফতোয়া)

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।