জাতীয় সংবাদ

আমি মিলাদ-কিয়ামের বিরোধী নই : ধর্মপ্রতিমন্ত্রী

লিখেছেন মিরাজ রহমান

সম্প্রতি মিলাদ-কিয়াম নিয়ে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলে একটি মহল উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে প্রচারণা চালায়। শুধুমাত্র ফেসবুকেই এমনটা ছড়ানো হয়। সেসব প্রচারণায় বলা হয় বর্তমান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ মিলাদ-কিয়ামের ব্যাপারে বিরুপ মন্তব্য করেছেন। কিন্তু কেউ তার এমন বক্তব্যের কোনো প্রমাণ (ভিডিও বা সঠিক বক্তব্য) পেশ করতে সক্ষম হননি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ‘প্রথম কথা হচ্ছে যারাই এমন প্রচার চালাচ্ছে, তারা মূলত বিভ্রান্তি ছড়ানোর কু-উদ্দেশ্যে এমনটা করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাই-বোনদেরকে এহেন প্রচারনায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। যারা এসব অহেতুক কথাবার্তা প্রচার করার মাধ্যমে পানি ঘোলা করে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব প্রদানের আহবান জানাচ্ছি।’

ধর্মপ্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘মিলাদ-কিয়ামকে অস্বীকার করা বা এ সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। আল্লাহ মহান আমাদের স্রষ্ঠা। রাসুল (সা.) তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। আল্লাহকে পেতে হলে রাসুলের (সা.) মাধ্যমেই পেতে হবে। আর রাসুলকে (সা.) পেতে হলে তার প্রতি দরুদ, সালাম, মিলাদ-কিয়াম প্রভৃতির মাধ্যমেই পেতে হবে। রাসুলের (সা.) ভালোবাসা অর্জন করতে চাইলে এসবের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং এ মিলাদ-কিয়ামকে অস্বীকার করা বা এ ব্যাপারে কোনো বিরুপ মন্তব্য করার কোনো প্রশ্নই আসেনা।’

আক্ষ্যেপ জগিত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হওয়ার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার অবর্তমানে টুঙ্গীপাড়ায় গিয়ে আমি মিলাদ পড়াতাম। এমনকি যখন কোনো মাওলানা, মুফতিরা সেখানে যাওয়ার সাহস পেতো না বা যাওয়ার মতো সুযোগ ছিলো না; তখনও আমি গিয়েছি, মিলাদ পড়িয়েছি এবং বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনায়, জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ কামনায় ও দেশের কল্যাণকামনায় মিলাদ পড়েছি আর দোয়া-মোনাজাত করেছি। আজীবন মিলাদ পালনকারী একজন মানুষ হিসেবে আমি কীভাবে মিলাদের বিরোধীতা করি?’

তিনি আরো বলেন, ‘ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে আলেম-উলামাদের দোয়া এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় একের পর এক উদ্যোগে সফল হচ্ছি বলে একটি কুচক্রি মহল আমাকে হেয় করতে এমন প্রচারনা চালাচ্ছে।’

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।