হাফসা শরিফ— শরীরচর্চার সুবিধার্থে এক সময় হিজাব বর্জন করতে চেয়েছিলেন উনিশ বছর বয়সী এ তরুণী। অপরিচিত পুরুষদের সামনে শুধু স্কার্ফ পরতেন। পোশাকগত এ সমস্যার কারণে জিমের ক্লাসগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করা খুব কঠিন হয়ে দাড়াচ্ছিল দিন দিন। হাবসা অনুভব করতেন, এ সমস্যাটি কেবল তার একান নয়। জিমে আগত হিজাবধারী প্রায় সব মুসলিম নারীই এ সমস্যায় আক্রান্ত। এহেন সমস্যার সমাধানে কিছু করতে চাইলেন হাফসা শরিফ। উদ্যোগি চিন্তাভবনার ধরাবাহিকতায় মুসলিম নারীদের জন্য আলাদা জিম প্রতিষ্ঠান করেন তিনি। যেখানে হিজাবধারী নারীদের ব্যায়ামে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। খবর মেট্রো.কমের।
এ বিষয়ে হাফসা বলেন, ‘শরীরচর্চার সঙ্গে আমার ভালোবাসা শুরু হয়েছিল আমার জীবনের খুব কঠিন একটি সময়ে। পরীক্ষাসহ নানা চাপ আমাকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছিল। এরপর আমি বুঝতে পারলাম— নিয়মিত শরীরচর্চা আমাকে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। শরীরচর্চা সত্যিই দারুণভাবে মনোবল পেতে সাহায্য করে। ঔষুধের মতো কাজ করে এটি। আপনাকে শুধু খুঁজে বের করতে হবে—কোন ব্যায়ামে আপিন স্বস্তি পান এবং কোন ব্যায়াম আপনাকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে পারে।’
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নারীদের শরীরচর্চার ব্যাপারে তিনি বলেন, নারীদের জন্য তাদের নিজস্বতা বজায় রেখে ব্যায়ম করার পরিবশে সমৃদ্ধ ব্যায়ামাগার খুব একটা নেই বললেই চলে। বিশেষত হিজাবধারী মুসলিম নারীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যায়ামাগার একেবারেই নেই। আমি আরো উপলব্ধি করলাম, হিজাবের সঙ্গে মানিয়ে নেবার মতো শরীরচর্চাকেন্দ্র নেই কোথাও।’
হাফসা আরও জানান, শুধু ব্যায়াম নয় বয়ঃসন্ধিকালে আমি দেখেছি- খুব কম মেয়েরাই এ সময়ে খেলাধুলায় অংশ নেয়। যেহেতু এসময় তারা খেলাধুলা করতে স্বস্থিবোধ করে না। এসব অভিজ্ঞতা ও পরিবেশ থেকে সংগৃহীত শিক্ষা নিয়ে নারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও ইতিবাচক পরিবেশ সমৃদ্ধ শরীরচর্চাকেন্দ্র করার ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই।
এরপর নতুন উদ্যোগের কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসব্যাপি একটি ক্যাম্পেইন শুরু করি। শুধু নারীদের জন্য জিমের ব্যবস্থা করতেই নয়, বরং আমার মত আরও যারা এমন আছেন তাদেরকে একত্র করি। সত্যি বলতে নারীদের জন্য আলাদা জিমের বিষয়টি প্রতিকূল ছিল কিন্তু বিষয়টি সবাইকে চমকে দেবার মতো ছিল। মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক এবং আমি এতে অনুপ্রাণিত হই। পুরো সেপ্টেম্বর জুড়ে ক্যাম্পেইন করে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে আমি বুঝতে পারি- এমন একটি উদ্যোগের বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব নারীরা এখানে অংশ নিবে এবং হিজাবী নারীদের পর্দা রক্ষা করে ব্যায়াম করতে কোনো বাধা বা অসুবিধা থাকবে না।