জাতীয় জীবনী সংবাদ

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান আর নেই

লিখেছেন মিরাজ রহমান

চলে গেলেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান। (ইন্নালিল্লাহি অয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন) শনিবার সকালে উত্তর বারিধারার নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। তার জানাজার নামাজ আজ বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।

তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে তাকে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় নিজ পিতা ড. অধ্যাপক আবদুল মান্নান খানের কবরের পাশে দাফন করা হবে। ড. মুনিম খান সর্বশেষ ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, উত্তরা, ঢাকার ফ্যাকাল্টি অব লিবারেল আর্টসের ইসলামিক স্টাডিজ ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ও অ্যাডভাইজর ছিলেন। তিনি ছিলেন ইন্সটিটিউট অব ল্যাংগুয়েজ স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের এশিয়ান ইন্সটিটিউটের পরিচালক এবং সদ্য বিলুপ্ত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ও দাওয়াহ বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন।

এছাড়াও তিনি বিভিন্ন রেডিও ও টিভির জনপ্রিয় ধর্মীয় আলোচক ও উপস্থাপক ছিলেন। বাংলাদেশ বেতারে বহির্বিশ্ব কার্যক্রমে খবরও পাঠ করতেন তিনি। গত ২১ জুন ইত্তেফাকের ধর্মচিন্তা পাতায় প্রকাশিত তার সর্বশেষ লেখার শিরোনাম ছিল- ‘ইসলামে ভেজালমুক্ত খাদ্যনীতির নির্দেশনা’। বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির সিনিয়র সদস্য লেখক, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক, ইসলামী চিন্তাবিদ, বিশিষ্ট গবেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা (ইউনিক) উত্তরা, ঢাকার ফ্যাকাল্টি অব লিবারেল আর্টসের ইসলামিক স্টাডিজ ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের এডভাইজার ছিলেন তিনি।

তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। তিনি বিডি ক্যাম্পাস নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। প্রথম আলো, ইত্তেফাক, যুগান্তর, আলোকিত বাংলাদেশ, ইনকিলাব, পূর্ণিমা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শিক্ষাধারা, ক্রীড়ালোক, ক্রীড়াজগতসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্র-পত্রিকায় শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-ক্রীড়াসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খানের সহস্রাধিক প্রবন্ধ, নিবন্ধ, মতামতধর্মী রচনা, গল্প, কবিতা, ছড়া ও ফিচার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।