আন্তর্জাতিক সংবাদ

মক্কা-মাদিনার একক কর্তৃত্ব হারাতে যাচ্ছে সৌদি আরব

পবিত্র শহর মক্কা-মদিনার পবিত্র মসজিদদ্বয়ে সৌদি সরকারের একক কর্তৃত্ব খর্ব করে আন্তর্জাতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বব্যাপি প্রচারনা চালাচ্ছে আল হারামাইন ওয়াচ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থাটি সৌদি আরবের ইসলামী ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও অরাজনৈতিকভাবে সুব্যবস্থাপনায় হ্জ পালন নিয়ে কাজ করছে।

আল হারামাইন ওয়াচের মতে, সৌদি আরব কেবল আন্তর্জাতিক আইনই নয়, এর প্রতিষ্ঠাতা পুরুষদের নীতিও লঙ্ঘন করছে। সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহগণ যেখানে দেশটির পবিত্র স্থানগুলিতে মুসলমানদের অধিকার রক্ষা করতে রাজি ছিলেন, বর্তমান সৌদি সরকার সেখানে মুসলিম জাতি, ধর্মীয় নেতা ও ব্যক্তিদের পবিত্র ভূমি সফরে নিষেদাজ্ঞা জারি করছে। এরই প্রেক্ষিতে এমন একটি ক্যাম্পেইন চালু করেন তরা। আল হারামাইন ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের এ ক্যাম্পেইনটি ইতিমধ্যে শতাধিক মুসলিম স্কলার ও মানবাধিকারকর্মীদের সামর্থন লাভ করেছে।

সংস্থাটির ক্যাম্পেইনে আরো বলা হয়, বর্তমান সৌদি সরকার পবিত্র দুটি মসজিদসহ হজ পালনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে স্থায়ীভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে তাদের পরিচালনায় কৌশলগত উন্নয়ন ও আন্তরিকতার অনুপস্থিতি রয়েছে। আমরা ইসলামী দেশগুলোর সরকার ও গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাই, অন্তর্বর্তীকালীন এমন একটি দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রনয়ন করা হোক; যা পবিত্র দুটি স্থানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহায়ক হবে। পাশাপাশি হজ পালনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে কোনো মুসলিম।



এ ক্যাম্পেইনের প্রধান হলেন ব্যক্তি হলেন মালয়শিয়ার ইসলামী স্কলার আজমি আব্দুল হামিদ। তিনি দাবি করছেন, সৌদির প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিন সৌদের ব্যক্তিগত লেখা একটি ঐতিহাসিক দলিল পেয়েছেন তিনি। যাতে বলা হয়েছে, সকল মুসলিমেরই হিজাজ অঞ্চল এবং মুসলিম বিশ্বের পবিত্র মসজিদগুলি পরিচালনার অধিকার রয়েছে। আল হারামাইন ওয়াচ সংস্থাটি মূলত সৌদি আরবের পবিত্র স্থানগুলোতে মুসলমানদের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া জন্য কাজ করছে।

এ সম্পর্কে ইউটিউবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কমেন্ট বক্সে অনেকেই এই ক্যাম্পেইনের বিরোধিতা করে মন্তব্য করেছেন। তানজিলা সরকার টিনা নামের এক দর্শক মন্তব্যে বলেছেন, ‘আমিই আল হারামাইন ওয়াচ সংগঠনের লোগোতে দাজ্জালের এক চোখের চিহ্ন পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি এবং এটি আমাদের পবিত্র আল-হারাম মসজিদকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। কেউ কি দেখতে এবং বুঝতে পারছেন না যে ‘আল-হারামাইন ওয়াচ’ দাজ্জালের অনুসারীদের একটি গোপন সংস্থা হতে পারে?

আল হারামাইন ওয়াচের দাবি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হচ্ছে। প্রচারিত হচ্ছে বিভিন্ন দলিল-প্রমাণসহ যুক্তিও। কেউ বলছেন এটা দাজ্জালের নতুন ফেতনার অংশ। আবার কেউ বলছেন সম্পূর্ণ যৌক্তিক তাদের দাবিটি। মক্কা-মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুটি মসজিদে সৌদি আরবের একক কর্তৃত্ব খর্ব করে আন্তর্জাতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার এই মিশনের নেপথ্য উদ্দেশ্য কি সেটা দেখবার অপেক্ষায় গোটা পৃথিবীর মুসলিম উম্মাহ। প্রত্যাশা শুধু এতোটুকুই রইলো মহান প্রভু যেন তার নিজ কুদরতে পবিত্র  এ স্থানদ্বয়ের জন্য কল্যাণকর ফায়সাল করেন।

 

Comment

লেখক পরিচিতি

তামীম হুসাইন শাওন

তামীম হুসাইন শাওন— তরুণ মিডিয়াকর্মী হিসেবে পরিচিত। ঢাকার অদুরে দোহার উপজেলার বাসিন্দা। প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু গ্রামের স্কুল থেকে। ১০ বছর বয়সে নিজ ইচ্ছায় ইসলামী শিক্ষা শুরু করেন গ্রামের মাদরাসাতে। এরপর দীর্ঘ ৮ বছরের শিক্ষা জীবন কাটান গাজীপুরের একটি মাদরাসায়। ২০১৮ সালে যাত্রাবাড়ী মাদরাসা থেকে দাওরা হাদীস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে ইসলামী আইন নিয়ে গবেষণা (মুফতি কোর্স) সম্পন্ন করেন। কওমি মাদরাসায় অধ্যায়নরত অবস্থায় জেনারেল শিক্ষায় পর্যায়ক্রমে JDC, SSC ও HSC সম্পন্ন করেন।
২০১০ সালে মিজান জামাতে লেখাপড়ার কালে 'দৈনিক আমার দেশ' পত্রিকায় মতামত প্রকাশের মধ্যদিয়ে লেখালেখি বা সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। এরপর সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকায়ও তার বেশকিছু লেখা প্রকাশ হয়েছে। ২০১৮-১৯ পর্যন্ত জাতীয় অগ্রযাত্রা ও অগ্রযাত্রা২৪.কম-এ স্টাফরিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিক্ষাজীবন চলাকালেই এই তরুণ আলেম ইসলামী মিডিয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ইসলামী মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন। যার মাধ্যমে এখন উপস্থাপনা ও সাংবাদিকতার কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ইতিমধ্যে Lal Sobuj Multimedia ও QURAN amar VALOBASHA নামে দুটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছেন। এছাড়াও সমকালীন২৪.কম নামে একটি নিউসপোর্টালের সম্পাদক হিসেবে আছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং-এ তার দক্ষতা রয়েছে। এছাড়া যুক্ত আছেন ইসলাম প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে।