ফিচার বই ভিডিও

প্রভুপ্রেমের অমীয় সুধায় ভাসাবে ‘তিনিই আমার রব’

Featured Video Play Icon
লিখেছেন ওমর শাহ

আল্লাহ আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা। তাঁর অনেকগুলো নাম রয়েছে। যে নামগুলোকে বলা হয় আল-আসমাউল হুসনা তথা সুন্দরতম নামসমূহ। এ সকল নাম সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহকে ডাক অথবা দয়াময় রহমানকে ডাক। তাঁকে তোমরা যে নামেই ডাক না কেন, তিনি সাড়া দেবেন। আর আল্লাহর রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত- ১১০)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এগুলো সংরক্ষণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারি ও মুসলিম)

আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক প্রত্যেকটি নামের সুন্দর অর্থ, গুণ ও শিক্ষা রয়েছে। কিন্তু আমরা এসব গুণ ও মর্মার্থ সম্পর্কে কতটুকু সচেতন? কতোটা আগ্রহী তার নামের রহস্য উদঘাটনে? আল্লাহর এসব নাম কি শুধু মুখস্ত করার জন্যে নাকি এর মর্মার্থ জেনে নিজের ঈমান ও আমলকে আরও শক্তিশালী ও শাণিত করা সম্ভব?

আল্লাহ তায়লা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, তাঁকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নাম ধরে ডাকতে। কিন্তু কেনো তিনি এমনটা বলেছেন? কখনও কি চিন্তা করেছি? আল্লাহর নামগুলোর নেপথ্যে নিগূঢ় রহস্য কিংবা মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে, তা কি আমরা জানি?

আল্লাহর নান্দনিক নামগুলো নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করার মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ভেতর দিয়ে বান্দা এক বিশেষ পবিত্র জগতে প্রবেশ করতে পারেন। যেখানে তার অন্তর আল্লাহর সম্মানে তাকে সিজদা করবে। আল্লাহর গুণবাচক নামের রহস্য উদঘটানের বিপুল আগ্রহী বান্দা এবং আল্লাহপ্রেমে তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের খোরাকস্বরুপ শাইখ আলী জাবের আল ফীফী রচনা করেছেন ‘তিনিই আমার রব’ নামক গ্রন্থটি। বাংলা ভাষায় অনন্য এ বইটি অনুবাদ করেছেন আব্দুল্লাহ মজুমদার।

লেখক বইটিতে আল্লাহর নির্বাচিত ১০টি গুণবাচক নাম নিয়ে আলোচনা করেছেন। তুলে এনেছেন এসব নামের নিগূঢ় রহস্য ও তাৎপর্য। যা একজন আল্লাহপ্রেমী পাঠককে নিয়ে যাবে সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমতাবান মালিকের রহস্যময় ভূবনে। পরিচয় করিয়ে দিবে তার ক্ষমতার সঙ্গে। যখন তাদের অন্তরে এ নামগুলোর আলোক-ছটা পড়বে তখন অন্যসব আলোর বিচ্ছুরণ সামান্যই মনে হবে।

এ বই সম্পর্কে অনুবাদক আব্দুল্লাহ মজুমদার বলেন, আল্লাহর নামগুলো জানা ও তার মর্মার্থ উদঘাটনের প্রতি আমার সীমাহীন আগ্রহ ছিলো। বইটি আমাকে আকৃষ্ট করে। পড়তে গিয়ে ক্ষণে ক্ষণে শিহরিত হয়েছি। কখনো এ বই আমাকে গভীরভাবে ভাবতে শিখিয়েছে, সৃষ্টিকর্তার প্রতি আরও অভিমুখী হতে এ বইটি আমাকে উৎসাহী করেছে।

বইটির পরতে পরতে লুকিয়ে আছে বিস্ময়। বইটি একজন পাঠককে আল্লাহর গুণবাচক ১০টি নামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া পাশাপাশি প্রাত্যহিক জীবনের এর গভীর সম্পর্ক তুলে ধরবে। ভাবনার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে সহায়তা করবে। যে তৃষ্ণার্ত হৃদয় প্রতিক্ষায় থাকে এক পশলা বৃষ্টির, যে পথভোলা পথিক খুঁজে ফেরে পথ, সঁপে দেওয়ার তাড়নায় অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে যে নয়নযুগল, পাপে নিমজ্জিত যে অন্তর অন্বেষণ করে বেড়ায় রহমতের বারিধারা— এদের সবাইকে রবের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া এবং তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার অনন্য প্রয়াস ‘তিনিই আমার রব’ গ্রন্থটি।

বইটিতে লেখক আল্লাহর যে দশটি গুণবাচক নাম নিয়ে আলোচনা করেছেন তা হলো, আস সামাদ অর্থ্যাৎ স্বয়ংসম্পূর্ণ, আল হাফীজ অর্থ্যাৎ মহারক্ষক, আল লাতীফ অর্থ্যাৎ সূক্ষ্মদর্শী, আশ-শাফী অর্থ্যাৎ আরোগ্যদাতা, আল-ওয়াকীল অর্থ্যাৎ পরম নির্ভরযোগ্য, আশ-শাকুর অর্থ্যাৎ গুণগ্রাহী, আল জাব্বার অর্থ্যাৎ মহিমান্বিত, আল হাদী অর্থ্যাৎ পথপ্রদর্শক, আল গাফূর অর্থ্যাৎ মহা-ক্ষমাশীল এবং আল কারীব অর্থ্যাৎ নিকটবর্তী।

বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন, আল্লাহর নামগুলো না জানলে তো আমরা মরুভূমিতে পথহারা লোকের মতো হয়ে যাব। এ বইয়ের মাধ্যমে আমি আমার সেই ভাইয়ের কাঁধে সমবেদনার হাত রাখতে চাই, যে দুঃখ দুর্দশায় পতিত। আমি এমন ভাইয়ের মাথায় হাত বুলাতে চাই, যে তীব্র মাথাব্যথায় কাতর। এই বইয়ে আমার লেখা বর্ণনাগুলোতে আমি লুকিয়ে রেখেছি আমার বিনিদ্র রজনীর অশ্রুধারা। যা দ্বারা আমি নিভিয়ে দিতে চাই প্রত্যেকের অন্তরের প্রজ¦লিত বেদনার অগ্নিশিখা।

বইটি প্রকাশ করেছে সমকালীন প্রকাশন। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৬৮। মুদ্রিত মূল্য ২৩৫ টাকা। বইটি কিনতে চাইলে ১১/১ বাংলাবাজারস্থ ইসলামী টাওয়ারে অবস্থিত সমকালীন প্রকাশনের দোকান থেকে কিনতে পারেন অথবা কল করতে পারেন ০১৬১৬ ৬২৬ ৬৩৬ এই নাম্বারে। এ ছাড়া ঘরে বসে বইটি কিনতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন রকমারি.কমে

Comment

লেখক পরিচিতি

ওমর শাহ

ওমর শাহর জন্ম কুমিল্লা জেলার ময়নামতি ইউনিয়নে। তিনভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। প্রাথমিক পড়াশোনা ও বেড়ে উঠা নিজগ্রামে। ২০০৫ সালে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকার বুকে পা রাখেন। টানা আট বছর কাটিয়ে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) শেষ করেছেন দেশের স্বনামধন্য কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে। তারপর কর্মজীবনের পালা। শখ ও নেশা থেকে শুরু করেন সাংবাদিকতা। ২০১৪ সালে লেখালেখি ও সাংবাদিকতার মাঝ দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র অনুবাদ ম্যাগাজিন মাসিক আরমোগানের নির্বাহী সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত আমাদেরসময়.কম ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতি’র। এছাড়া সম্পাদনা করেছেন দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ধর্মপাতা ‘ইসলামি চিন্তা’। জীবনটা শুরু করেছেন লেখালেখি, সাংবাদিকতা ও সম্পাদনার মাঝ দিয়ে। লেখালেখির মাঠেই তিনি জীবনের স্বার্থকতা খুঁজেন।