আমাদের অনেকেরই স্বভাব হলো, আমরা অন্যের দোষ অনুসন্ধান করতে পছন্দ করি, কিন্তু নিজের দোষের দিকে মনোযোগ দেই না। অথচ ইসলামে পরচর্চার ব্যাপারে কঠোর হুসিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “মিরাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরি এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমন্ডলে ও বুকে আঁচড় মারছে। আমি বললাম, হে জিবরাইল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো (পরচর্চা করতো) এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো।” (সুনানে আবু দাউদ)।
এছাড়াও হজরত আবু মুসা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তারা (সাহাবিগণ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! ইসলামে কোন জিনিস উত্তম? উত্তরে তিনি বললেন, যার জিহবা ও হাত হতে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। ( সহিহ বুখারি, জামে তিরমিজি, সুনানে নাসায়ি)।
ইসলামে পরচর্চা না করে নিজের দোষ পর্যালোচনা করে তা সংশোধনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়ায়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি অন্যের দোষ অনুসন্ধান না করে নিজের দোষত্রুটি সংশোধনে মশগুল থাকে, তার জন্য সুসংবাদ।” (বায়হাকি)। তিনি আরো বলেছেন- “বুদ্ধিমান সে ব্যক্তি যে আত্মপর্যালোচনা করে এবং সকল কর্মতৎপরতাকে আখিরাতের জন্যই পরিচালিত করে। আর নির্বোধ সে ব্যক্তি যে নিজেকে প্রবৃত্তির পিছনে ধাবিত করে আর প্রতিদান কামনা করে আল্লাহর নিকট।” (জামে তিরমিজি)।
এজন্য প্রতিনিয়ত আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজের দোষত্রুটি চিহ্নিত করে সেগুলোকে সংশোধন করা এবং কৃত ভুলের জন্য মহান রবের নিকট কান্নাকাটি করে ক্ষমা প্রার্থনা করা একান্ত প্রয়োজন। তাহলেই দুনিয়া ও আখিরাতের বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন!