জাতীয় সংবাদ

স্বপদে বহাল ইফা ডিজি সামীম আফজাল

লিখেছেন মিরাজ রহমান

নানা নাটকীয়তা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের পরও স্বপদেই বহাল থাকছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল। শনিবার (২২ জুন) সচিবালয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্ণস এর সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শেখ মো. আবদুল্লাহ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

ধর্মপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ বোর্ড অব গভর্ণস এর নিয়মিত বৈঠক ছিল। তবে বৈঠকে ইফা ডিজির বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। ডিজি যেহেতু তার পদে বহাল আছে, সেখানে নতুন করে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রশ্ন আসে না। তিনি তার পদে বহাল ছিলেন, এখনও আছেন। এ সময় সামীম মোহাম্মদ আফজালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের ভার তার ওপরই ন্যস্ত করা হয়েছে।

সাপ্তাহিক বন্ধের দিন গত শনিবার পদত্যাগপত্র দিতে সামীম মোহাম্মদ আফজাল সংস্থাটির সচিব কাজী নূরুল ইসলামকে অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। পদত্যাগপত্র টাইপও হয়েছিল। শুধু স্বাক্ষর করে জমা দেয়াই ছিল বাকি। তার আগে গুরুত্বপূর্ণ অর্ধশত ফাইল গাড়িতে করে দফতর থেকে সরানোর চেষ্টা করেন ডিজির আস্থাভাজন একজন পরিচালক। ঘটনা টের পেয়ে এতে বাধা দেন ইফার সচিব কাজী নূরুল ইসলাম। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি ফাইলগুলো জব্দ করে নিজ জিম্মায় নেন। এ ঘটনায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বেঁকে বসেন ডিজি সামীম আফজাল।

ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের পদত্যাগের দাবিতে গত সপ্তায় চারদিন যাবত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সারা দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। সামীম মোহাম্মদ আফজালকে শিগগিরই ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে তার স্থলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিবকে আপাতত দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন ইফার আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্ণস এর সভা থেকে ডিজির পদত্যাগের কথা থাকলেও আগামী ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত স্বপদেই বহাল থাকছেন তিনি।

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।