ফিচার বই ভিডিও

মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানীর সফরনামা— ‘দেশে বিদেশে’

Featured Video Play Icon

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, (হে প্রিয় নবি) আপনি বলুন! তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো, কীভাবে সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহই পুনরায় সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম। (সূরা আনকাবুত, আয়াত : ২০) অন্যত্র আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমাদের আগে অতীত হয়েছে অনেক ধরনের জীবনাচরণ। তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের পরিণতি কী হয়েছে। এই হলো মানুষের জন্য বর্ণনা। আর যারা ভয় করে তাদের জন্য উপদেশবাণী। (সূরা আল ইমরান, আয়াত : ১৩৭/১৩৮)

ভ্রমণ বলতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করাকে বোঝানো হয়। আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টিকে যে একবার অন্তরের চোখে দেখেছে এবং গভীরভাবে চিন্তা করেছে, সে-ই মহান স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করে লুটিয়ে পড়েছে সেজদায়। তার সব অহংকার, আমিত্ব, আভিজাত্য ডুবেছে চোখের পানিতে। ভ্রমণ হতে পারে ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্যে অথবা হতে পারে জ্ঞানার্জনের যাত্রা। ভ্রমণ হতে পারে বিনোদন, ব্যবসা বা কর্মক্ষেত্রে গমনের উদ্দেশ্যে। অথবা ভ্রমণ হতে পারে মহান প্রভুর ইবাদতও। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে জ্ঞানার্জনের জন্য ঘর থেকে পথে বের হবে, সে যেন আল্লাহর পথে বের হলো। (মুসলিম)

বিখ্যাত মুসলিম মনীষী ইবনে বতুতা বলেছেন, ভ্রমণ হলো স্রষ্টার সৃষ্টি রহস্য জানার মাধ্যম। মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় ভ্রমণ। প্রতিটি মানুষের স্ব স্ব সাধ্যানুসারে কাছে কিংবা দূরে; দেশে বা বিদেশে ভ্রমণের মাধ্যমে স্রষ্টার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টিকে দেখে অন্তরকে বিকশিত করা উচিত। নৈসর্গিক সৃষ্টিলীলা দর্শন, রিজিক উপার্জন, জ্ঞান অর্জন, রোগ নিরাময় এবং আত্মশুদ্ধির জন্য ভ্রমণের নির্দেশও রয়েছে ইসলামে। কেউ যদি সওয়াবের নিয়তে ভ্রমণ করে পুরো ভ্রমণেই তার সওয়াব অর্জিত হবে।

মুসলিম মনীষীগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাষায় তাদের ভ্রমণকাহিনি-নির্ভর বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। আলোকিত পথের সন্ধানের দিশা উম্মতে মুহাম্মাদির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। বাংলা ভাষাতেও ভ্রমণ-বিষয়ক মৌলিক গ্রন্থ রচিত হয়েছে। পাশাপাশি অনূদিত হয়েছে মুসলিম মনীষীদের ভ্রমণকাহিনি বা সফরনামা-মূলক অসংখ্য গ্রন্থ।

আকাবিরে ইসলাম কর্তৃক রচিত বাংলা ভাষায় অনূদিত সফলনামার অন্যতম একটি হলো দেশে বিদেশে। এটি মূলত মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানী রচিত মাতায়ে সফর নামক উর্দু গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ। বিখ্যাত এ সফরনামাটি বাংলাতে অনুবাদ করেছেন মাওলানা ইবরাহিম খলিল।

গ্রন্থটিতে মোট ১২টি স্থান ভ্রমণের বর্ণনাকে ১২ ভাগ বা অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম ভাগ বা অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে মক্কা মুকাররমার সফরকাহিনি। দ্বিতীয় ভাগ বা অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে মদীনা মুনাওয়ারার সফরকাহিনি। তৃতীয় ভাগ বা অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তান সফরের বর্ণনা। চতুর্থ ভাগ বা অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে ইরানের সফরকাহিনি। পঞ্চম ভাগ বা অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে কাতারের সফরকাহিনি। ষষ্ঠ ভাগ বা অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে মালয়েশিয়া সফরের বর্ণনা। সপ্তম ভাগ বা অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে রিইউনিয়নের সফরকাহিনি। অষ্টম ভাগ বা অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে মারিশাসের সফরকাহিনি। নবম ভাগ বা অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বর্ণনা। দশম ভাগ বা অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে ব্রিটেনের সফরকাহিনি। একাদশ ভাগ বা অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে ভূস্বর্গ কাশ্মীরের সফরকাহিনি। দ্বাদশ ভাগ বা অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে মালিগাঁও সফরের বর্ণনা।

গ্রন্থটির পাতায় পাতায় বিভিন্ন দেশ বা বিভিন্ন স্থানের ইসলামের ইতিহাস যেমনইভাবে উঠে এসেছে তেমনইভাবে আলোচিত হয়েছে ইসলামী বিভিন্ন স্থান-স্থাপনার পরিচিতি। পাঠকমাত্রই বুঝবেন দেশে-বিদেশে গ্রন্থটি আলাদা আঙ্গিক ও ভিন্ন ধারার সফরনামা। বইটি সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করে প্রফেসর মুহসিন উসমানী নদভী লিখেছেন, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানীর বক্ষ্যমাণ সফরনামা ভ্রমণ-সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। তিনি বিপুল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ পড়াশোনার অধিকারী একজন দূরদর্শী আলেম। তার লেখা সফলনামাটি সারগর্ভ তথ্যবহুল ও সুখপাঠ্য এবং পাঠকের জন্য উপাদেয়।

বইটি প্রকাশ করেছে রাহনুমা প্রকাশনী। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৬৮। মুদ্রিত মূল্য ৪৪০ টাকা। ২০১৮ সালের জুন মাসে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। প্রচ্ছদ করেছেন মুহাম্মাদ মাহমুদুল ইসলাম। বইটি কিনতে চাইলে ফোন করুন ০১৭৬২ ৫৯৩৩৪৯ অথবা ০১৯৭২ ৫৯৩৩৪৯ এই নম্বরে। অনলাইন থেকে কিনতে ভিজিট করুন www.rahnumabd.com এই ঠিকানায়। এ ছাড়া ঘরে বসে বইটি কিনতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন রকমারি.কমে

Comment

লেখক পরিচিতি

জাহিদ হাসান মিলু

আমি জাহিদ। সরকাারি কাগজপত্রের জাহিদুল ইসলাম থেকে বেসরকারি কাগজপত্রে জাহিদ হাসান মিলু- নামের এই বিচিত্র পরিবর্তনের পেছনে একটা মিষ্টি গল্প আছে।
জন্মেছি গোপালগঞ্জ জেলার অখ্যাত গ্রাম প্রশন্নপুরে, ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে। কী এক বিশেষ কারণে যেন কাগজকলমে বয়েস কমিয়ে আমাকে আরও তিনবছরের ছোটো করে রাখা হয়েছে। বাবা মা দুজনেই অক্ষর না শিখেও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম স্বাক্ষর হয়ে আছেন।
অবুঝ বয়েসে পারিবারিক স্বপ্নের কারণে ভর্তি হতে পেরেছিলাম মাদ্রাসায় , আলহামদুল্লিলাহ। জীবনের সবথেকে বড় পারিবারিক গিফ্ট ছিল এটা আমার জন্য। কুরআন পড়তে শিখলাম, মুখস্থ করতে পারলাম। অর্থ জানলাম এবং ব্যাখ্যাও পড়লাম।
আমাদের পাড়ার মাদ্রাসা কুলিয়ার ভিটায় পড়ার সময় ধর্মের প্রতি আমাদের ভেতরে যে বীজটা রোপিত হয়েছিল, সেটা ডালাপাল মেলে খোলা হাওয়ায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় প্রাণের প্রতিষ্ঠান এরাবিল মডেল মাদ্রাসায়। তারপর? তারপর আর কি- এখন পড়াশোনা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে।
দায়ী হওয়ার স্বপ্ন আমার সবথেকে বড় স্বপ্ন। স্বপ্নটি পূরণ করতেই পড়ছি, শুনছি, দেখছি, শিখছি এবং অপেক্ষা করছি।