আন্তর্জাতিক সংবাদ

নবীজিকে (সা.) নিয়ে আবারও বিতর্কিত কার্টুন ছাপলো চার্লি হেবদো

নবীজিকে (সা.) কটাক্ষ করে পুনরায় বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচিত ও ধিকৃত হয়েছে প্রসিদ্ধ ফরাসি ম্যাগাজিন চার্লি হেবদো। তারা ২০১৫ সালে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের জেরে সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল বলে জানিয়েছে দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ওয়েবসাইট। চার্লি হেবদো ম্যাগাজিন বিতর্কিত ওই কার্টুনগুলো এমন এক সময় প্রকাশ করেছে যখন প্যারিসে ৭ই জানুয়ারি ২০১৫ সালের হামলার সঙ্গে জড়িত ২ হামলাকারী সাইদ ও শেরিফ কোয়াছিকে সহযোগিতার অভিযোগে ১৪ জনের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। বিচার শুরু হওয়ার ঠিক একদিন আগে ম্যাগাজিনটি ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনগুলো ছাপিয়েছে।

২০১৫ সালের হামলায় ম্যাগাজিনটির সম্পাদক, কার্টুনিস্ট সহ ১২ জন নিহত হয়েছিল। তার কয়েকদিন পরে এর সঙ্গে সম্পর্কিত হামলায় প্যারিসে আরও পাঁচজন মারা গিয়েছিল। ম্যাগাজিনটি সর্বশেষ সংস্করণের ফ্রন্ট কভারে নবীজিকে (সা.)  নিয়ে পূর্বপ্রকাশিত ১২ টি কার্টুন লক্ষ্য করা যায়। যা চার্লি হেবদোতে প্রকাশ হওয়ার আগে একটি ডেনিশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চার্লি হেবদোর প্যারিস অফিসে আক্রমণকারীদের সহযোগিতা এবং পরে এক ইহুদি সুপার মার্কেট এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ এবং লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের অভিযোগে ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন পলাতক রয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে তারা উত্তর সিরিয়া এবং ইরাকে পালিয়ে গেছে। ফ্রান্সের আরএফআই ব্রডকাস্টারের খবরে বলা হয়েছে বিচার প্রক্রিয়ায় প্রায় ২০০ জন বাদী সাক্ষ্য প্রদান করবেন। মার্চ মাসে এই বিচার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস মহামারি জনিত কারণে এটি স্থগিত হয়েছিল।



বিচার প্রক্রিয়াটি নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এ বিষয়ে ডয়েচে ভেলের বাংলা ওয়েবসাইটে বলা হয়, বুধবার ফের একবার হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর বিতর্কিত কার্টুন রিপ্রিন্ট করতে চলেছে ফ্রান্সের পত্রিকা শার্লি এব্দো। এ দিনই ফরাসি আদালতে ২০১৫ সালে শার্লি এব্দোর দফতরে হামলার শুনানি শুরু হচ্ছে। দিনটিকে মনে রেখেই দ্বিতীয়বার বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশের পরিকল্পনা করেছে পত্রিকাটি। এ বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ২০১৫ সালে হজরত মোহাম্মদ (সা.)এর বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ করেছিল ফরাসি পত্রিকা শার্লি এব্দো। যা নিয়ে শুধু ফ্রান্সে নয়, গোটা বিশ্বেই বিতর্ক হয়েছিল। এর কিছু দিনের মধ্যেই প্যারিসে পত্রিকার অফিসে বন্দুকধারীর হামলা হয়। ঘটনাস্থলেই ১২ জনের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ফ্রান্সের বিখ্যাত কার্টুনিস্টরা ছিলেন।

পত্রিকা অফিসে গুলি চালানোর পর বারান্দা থেকে বন্দুকধারী বলেছিলেন, মহা নবিকে অপমান করার প্রতিশোধ নেয়া হলো। প্রসঙ্গত, নবীজিকে (সা.) নিয়ে ২০১৫ সালে কার্টুন ছাপানোর প্রতিবাদে এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য তথা বিশ্বের মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অবমাননাকর কার্টুনগুলো অপসারণের জোরালো দাবি আসা সত্ত্বেও ম্যাগাজিনটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনগুলো সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

Comment

লেখক পরিচিতি

মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ

মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ— তরুণ সংবাদকর্মী ও সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু গ্রামের মক্তব থেকে। ৭ বছর বয়সে নিজ ইচ্ছায় ইসলামী শিক্ষা শুরু করেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়ায়। সেখানে দীর্ঘ ১২ বছর পড়াশোনা করে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য চলে যান ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে। সেখানে দেড় মাস অবস্থান করে পারিপার্শ্বিক অবস্থার অবনতির জন্য দেশে চলে আসতে হয় তাকে। সর্বশেষ ২০২০ সালে তিনি জামিয়া শারঈয়্যা মালিবাগে দাওরায়ে হাদিস অধ্যয়ন করছেন।
২০১২ সালে মিজান জামাত থেকে লেখালেখির সূচনা করেন এবং এর কিছুদিন পর থেকেই বিভিন্ন ছোট কাগজে, গল্প,কবিতা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ভ্রমণকাহিনিসহ নানা বিষয়ে তিনি নিয়মিত লিখতে থাকেন। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর হিজরত পরবর্তী জীবন নিয়ে ৬৪ পৃষ্ঠার চমৎকার একটি উপন্যাসের বইও তিনি রচনা করেন। যা মানবাধিকার প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে দৈনিক যুগান্তর,দৈনিক আমার সংবাদ,দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ,বার্তা২৪, দুরন্ত নিউজ, ইনসাফ, আওয়ার ইসলাম এবং ইসলাম প্রতিদিনসহ দেশের সব জাতীয় দৈনিকে তিনি নিয়মিত লিখে চলেছেন। এছাড়াও কাজ করছেন ইসলাম প্রতিদিনের আন্তর্জাতিক ডেক্সে।