ফিচার সভ্যতা-সংস্কৃতি

আলবেনিয়ার সেরা পাঁচ মসজিদ

দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের ছোট একটি দেশ আলবেনিয়া। বলকান উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে দেশটির অবস্থান। আলবেনিয়ার উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত ঘিরে রেখেছে মন্টিনেগ্রো, উত্তর-পূর্বে কসোভো, পূর্বে ম্যাসিডোনিয়া এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে গ্রিসের অবস্থান। আলবেনিয়ার পশ্চিমে রয়েছে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আয়োনীয় সাগর।

আলবেনিয়ার বেশির ভাগ এলাকাই পার্বত্যভূমি। অবশিষ্ট সমভূমির খুব অল্প অংশই কৃষিকাজের উপযোগী। আলবেনিয়া জাতিসংঘ, ন্যাটো, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সের (ওআইসি) সদস্য। আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানা এবং এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় শহর। আলবেনিয়ার রাষ্ট্রীয় ভাষা আলবেনীয়।

৫৬.৭ শতাংশ নাগরিক ইসলাম ধর্মাবলম্বী। আলবেনিয়ার মুদ্রার নাম লেক এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম ব্যাংক অব আলবেনিয়া। আলবেনিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কোরাব। দীর্ঘতম নদী দ্রিন। দেশটির আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। আলবেনিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। আলবেনিয়াতে রয়েছে বেশি কিছু নান্দনিক মসজিদ। সেরা ৫টি মসজিদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো।

১. ইথিম বেই জামে মসজিদ : আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় অবস্থিত এই মসজিদ। আলবেনিয়া অঞ্চলের অটোমান শাসক মোল্লা বেই ১৭৯১ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ১৮২১ সালে তাঁর পুত্র হাজী ইথিম বেই এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। আলবেনিয়ায় কমিউনিজম শাসনের সময় এই মসজিদটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কমিউনিজম পতনের পর ১৯৯১ সালের ১৮ জানুয়ারি সরকারি নিষেধ উপেক্ষা করে প্রায় দশ হাজার মুসলিম জনতা এই মসজিদে প্রবেশ করে। তারপর থেকে মসজিদটি নামাজের জন্য উন্মুক্ত আছে। স্থাপত্য শৈলীর বিবেচনায় মসজিদটি আলবেনিয়ার একটি বিখ্যাত স্থাপনা। মসজিদটির পাশেই আছে তিরানার ঐতিহাসিক অটোমান ক্লক টাওয়

২. আবু বকর মসজিদ : শোকদার আলবেনিয়ার উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত একটি বিখ্যাত শহর। শহরটির ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বহু গুরুত্ব রয়েছে।শুধু আলবেনিয়া নয়, গোটা বলকান অঞ্চলেই এই শহরটির গুরুত্ব রয়েছে। এই মসজিদটি এই শহরের সবচেয়ে প্রাচীণ মসজিদ।১৭৭৩ সালে পাশা মাহমুদ বুশাতি এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ১৯৬৭ সালে বহু ধর্মীয় স্থাপনার সাথে এই মসজিদটিও ধ্বংশ করে দেয়া হয়। কমিউনিজম পরবর্তী সময়ে মসজিদটি পুণরায় নির্মাণ করা হয়।

৩. ক্লক মসজিদ : আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানা শহরের পুরনো অঞ্চলে এই মসজিদটি অবস্থিত। ১৬৬৬ সালে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন আবদী পাশা। ১৯৭০ সালে মসজিদটি কমিউনিস্ট সরকার বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে মসজিদটি পুণরায় নির্মাণ করা হয়।৪. গ্রেট মস্ক অফ তিরানা : কমিউনিজম পতনের পর আলবেনিয়ার সাধারণ মুসলিমরা রাজধানী তিরানায় একটি বড় মসজিদের দাবী তোলে। আলবেনিয়ার পার্লামেন্টের কাছে নামাগা স্কয়ারে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১০ সালে মসজিদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই মসজিদের নির্মাণ কাজে তুরস্ক সহায়তা করেছিল। ২০১৫ সালে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আলবেনিয়া সফরের সময় এই মসজিদটি উদ্বোধন করেন।

৫. সুলতান ফাতিহ মোহাম্মদ মসজিদ : এটি আলবেনিয়ার একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। আলবেনিয়ার স্বৈরশাসক এনভের হোজা তার সময়ে শিকদোর শহরের প্রায় ৩৬টি মসজিদ ধ্বংস করেন। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এই মসজিদটি সেই সর্বগ্রাসী ধ্বংস থেকে বেঁচে যায়। এখানে স্মরণীয় একই নামে আরেকটি মসজিদ ইস্তাম্বুলেও আছে।

 

Comment

লেখক পরিচিতি

আবু সাঈদ যোবায়ের

জন্ম কুমিল্লায়। পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়। বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। সম্পন্ন করেছেন ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত একাধিক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ। লেখালেখি করেন ছোট বেলা থেকেই। ইসলামী সভ্যতা, ইতিহাস মুসলিম বিশ্বের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে লেখেন নিয়মিত। আরবী ইংরেজি থেকে অনুবাদও করেন। ইসলাম প্রতিদিনের সাথে আছেন কন্ট্রিবিউটিং রাইটার হিসেবে।

কমেন্টস করুন