ফিচার বই

৬৯ জন আলেম সংসদ সদস্যের জীবনীতথ্য নিয়ে বই

বাংলার আলেম সংসদ সদস্য (১৯৩৭-২০১৮)’ শীর্ষক গ্রন্থটিতে বাাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবাংলার ১৯৩৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৬৯জন আলেম সংসদ সদস্যের জীবনী সংকলনের মাধ্যমে আলেমদের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকার ইতিহাস রচনা করেছেন লেখক মনিবুর রহমান। ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলার কলাপড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা মাওলানা এবিএম সাইদুর রহমান একজন প্রখ্যাত আলেম ছিলেন। মাতা নূরজাহান বেগম ছিলেন একজন দানশীল নারী। প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ১৯৮১ সালে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৮৪ সালে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন মনিবুর রহমান। ১৯৮২ সালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তিনি সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন।

চাকরি জীবনের শুরুতে তিনি ১৯৮৬ সালে সাধারণ জ্ঞানকোষ, মডার্ণ ডায়েরি ও মডার্ণ ইন্টারভিউ গাইড শিরোনামের ৩টি বই লিখে প্রকাশনার জগতে প্রবেশ করেন। এরপর ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি’ ও ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামের ২টি বই লিখে সর্বমহলের প্রসংশা অর্জন করেন। ‘বাংলার আলেম সংসদ সদস’ বইটিতে আলেম সংসদ সদস্যগণের শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন, রাজনৈতিক জীবনের সকল কর্মকান্ড বিবৃত হয়েছে। বইটি রাজনীতিক আলেমদের বিভিন্ন তথ্যের জন্য যেমন প্রয়োজন হবে তেমনই সাধারণ পাঠক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গবেষকদের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হবে। বইটি নিয়ে মনিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

আপনি কেন এমন একটি বিষয়েও ওপর বই লিখলেন?

মনিবুর রহমান : আমি ছোট থেকেই রাজনীতির বিষয়গুলো পড়তে ভালোবাসতাম। আমি ছোট থেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিভিন্ন ছবি সংগ্রহ করতাম। এবং রাজনীতির বিষয়ে যে বই-ই পেতাম সেটা পড়ে ফেলতাম। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে কর্মরত থাকার কারণে আমার এই পড়া আরো বেড়ে যায়। যার ফলে আমি রাজনীতির বিষয়ে বেশ পড়ালেখা করতে পারি। আমি একদিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে ডক্টর মুহাম্মদ আবদুল্লাহর লেখা ‘রাজনীতিতে বঙ্গীয় উলামার ভূমিক’ বইটি দেখতে পাই। এরপরই ‘বাংলার আলেম সংসদ সদস্য (১৯৩৭-২০১৮) লেখার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ বা কোনো দেশের সংসদ সদস্য হওয়া কি আলেম-উলামার জন্য সম্মানজনক? অনেকেই বলেন যে, এসব দুনিয়াবী স্থানে আলেম-উলামাদের যাওয়া বা অংশ গ্রহণ করা উচিত নয়- এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে চাচ্ছি…

মনিবুর রহমান : বাংলাদেশ বা কোনো দেশের সংসদ সদস্য হওয়া আলেম-উলামার জন্য অবশ্যই সম্মানজনক? এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটা ছাড়াও একটি বড় কথা হচ্ছে, একটি দেশের কোনো আইন পরিবর্তন করতে হলে সংসদ থেকেই পরিবর্তন করতে হবে। সংসদ ছাড়া কোনো আইন পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই ইসলামের পরিপূর্ণ প্রচার-প্রসার করতে হলে আলেমদেরকে অবশ্যই সংসদে যেতে হবে। এটা ছাড়া পরিপূর্ণভাবে ইসলামের প্রচার-প্রসার করা সম্ভব নয়।

একটি সংসদে আলেম থাকা আর না থাকার মাঝে গুণগতভাবে কোনো পার্থক্য থাকে কিনা? মানে সংসদে আলেম-উলামা থাকলে দ্বীন ইসলামের কোনো উপকার বা খেদমত হওয়ার কি আদৌ সম্ভব হয়?

মনিবুর রহমান : একটি সংসদে আলেম থাকা আর না থাকার মাঝে গুণগতভাবে অনেক পার্থক্য থাকে। আসলে সব পার্থক্যই আমরা দেখতে পাই না। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন তাদের সাথে অনেক আলেম ছিলেন তাই সেই সময় আলিয়া মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ মান দেয়া হয়। যদি আলেমরা সংসদে না থাকতেন তাহলে এটা সম্ভব হতো না। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন তারা কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকেও একটি স্বীকৃতি দিয়ে ছিলো কিন্তু সেটা শেষ সময়ে এসো দেয়ার কারণে পরিপূর্ণ কাজটা করে যেতে পারেনি। আলেমরা সংসদে থাকলে অবশ্যই ইসলামের উপকার হবে। তবে এই উপকার স্পষ্ট বোঝা যাবে যেদিন কোনো ইসলামি দল ২০১ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে সেই দিন। কেননা সেই দিন তারা তাদের ইচ্ছামত আইন পরিবর্তন করতে পারবে।

আপনার এই গ্রন্থটি একজন পাঠক কেন পড়বেন?

মনিবুর রহমান : একজন পাঠককে এই বইটি অবশ্যই পড়তে হবে। একজন পাঠক যদি বাংলাদেশের ইতিহাস তথা ভারত বর্ষের ইতিহাস জানতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই এই বইটি পড়তে হবে। তাছাড়া যারা ধর্মীয় পাঠক আছেন এবং ইসলামি রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন তারা এই বইটি পড়লে অবশ্যই উপকৃত হবেন।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির বই মেলায় বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে একাত্তর প্রকাশনী। বইটি ক্রয় করলে কল করুন ০১৭২৪-৬৪২৪০৩ এই নাম্বারে। অথবা ভিডিট করুন রকমারি.কম

Comment

লেখক পরিচিতি

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ। তরুণ লেখক। আলেম ও গবেষক। দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালে লিখছেন। কাজ করেছেন সুনামধন্য কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে।
বর্তমানে এই তরুণ লেখক আমাদের সময়.কম অনলাইন নিউজ পোর্টালের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার ইসলামি বিভাগের।