ফিচার সভ্যতা-সংস্কৃতি

বাহরাইনের সেরা পাঁচ মসজিদ

বাহরাইন মধ্যপ্রাচ্যের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। বাহরাইন পারস্য উপসাগরের পশ্চিম অংশের ৩৬টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এর পূর্বে সৌদী আরব ও পশ্চিমে কাতার। সবচেয়ে বড় দ্বীপটিও বাহরাইন নামে পরিচিত এবং এতে দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী মানামা অবস্থিত।

প্রায় ৫,০০০ বছর আগেও বাহরাইন একটি বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। সবসময়ই এটি শক্তিশালী প্রতিবেশীদের অধীনস্থ ছিল। ১৭শ শতকে এটি ইরানের দখলে আসে। ১৭৮৩ সালে মধ্য সৌদী আরবের আল-খলিফা পরিবার নিজেদেরকে বাহরাইনের শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এবং তখন থেকে তারাই দেশটিকে শাসন করে আসছে। ১৯শ শতকের কিছু সন্ধিচুক্তির ফলে যুক্তরাজ্য দেশটির প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষার দায়িত্ব পায়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত বাহরাইন ব্রিটিশ প্রভাবাধীন ছিল।

বাহরাইনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি সেখানেই জন্ম-নেওয়া। এছাড়া বাহরাইনে শিয়া মুসলিমদের সংখ্যা সুন্নী মুসলিমদের প্রায় দ্বিগুণ। তবে সুন্নীরা বাহরাইনের সরকার নিয়ন্ত্রণ করেন।

দ্য সুলতান ধারাবাহিকভাবে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছে পৃথিবীর সব দেশের সেরা মসজিদভিত্তিক ফিচার-আয়োজন বিউটিফুল মস্ক ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। দ্য সুলতানের সঙ্গে থাকুন, পৃথিবীর সব নান্দনিক মসজিদ দেখুন।

১.আল ফাতিহ গ্রান্ড মস্ক : এটি বাহরাইনের মানামা সিটির সবচেয়ে বড় মসজিদ। বাহরাইনের আমির শেখ ঈসা বিন সালমান আল খলীফা ১৯৮৭ সালে এটি নির্মাণ করেন। এর স্থাপত্যশৈলীও বিশ্বমানের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাইবার কাঁচ নির্মিত গম্বুজ এই মসজিদেই আছে। এছাড়াও দুটি সুউচ্চ মিনার মসজিদের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের সাথেই আছে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী।

২. খামিস মসজিদ : অনেকের মতে এটি বাহরাইনের সবচেয়ে প্রাচীণ মসজিদ। এটি উমাইয়া আমলে নির্মিত একটি মসজিদ। এর নির্মাণশৈলীই বলে দেয় মসজিদটি অনেক প্রাচীণ। এর নির্মাতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না। এখানে উল্লেখ্য, মহানবী সাঃ বাহরাইন ও কাতার অঞ্চলের তৎকালীন শাসক মুনযিরের নিকট সাহাবী হযরত আলা হাযরামীকে ইসলামের দাওয়াতসহ প্রেরণ করেছিলেন।

৩.ঈসা বিন আলী মসজিদ : এটি বাহরাইনের একটি প্রসিদ্ধ মসজিদ। প্রখ্যাত আরব শেখ ঈসা বিন আলী এটি নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদটি শেখ ঈসার বাড়ির পাশেই অবস্থিত।

৪.বাইতুল কোরআন : এটি মূলত একটি বহুমুখী কমপ্লেক্স। এতে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালিত হয়।সবেচেয়ে প্রসিদ্ধ কার্যক্রমটি হল কোরআন গবেষণার একটি প্রতিষ্ঠান। মূলত এটি একটি মিউজিয়াম। যেখানে কুরআনের বহু কপি সংরক্ষিত আছে। হযরত উসমান রাঃ কতৃক লিখিত কুরআনের একটি কপি একেবারে সামনে সংরক্ষিত আছে। ৯৫৫ খ্রীঃ মুদ্রিত কুরআনের ল্যাটিন ভাষার অনুবাদও এখানে সংরক্ষিত আছে। ১৯৮৪ সালে এই মসজিদ কমপ্লেক্সটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে ১৯৯০ সালে মিউজিয়ামটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

৫.বাযযাহ জামে মসজিদ : এটিও বাহরাইনের একটি প্রসিদ্ধ মসজিদ। মসজিদটি মুহাররাক অঞ্চলের খলীফা কাবীর সড়কে অবস্থিত। কুয়েতের প্রখ্যাত আরব ব্যবসায়ী শেখ নাসির আস সবাহ এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। ১৯৮৪ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এর অভ্যন্তরে দেয়ালের গায়ে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ক্যালিগ্রাফি করে লেখা রয়েছে।

Comment

লেখক পরিচিতি

আবু সাঈদ যোবায়ের

জন্ম কুমিল্লায়। পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়। বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। সম্পন্ন করেছেন ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত একাধিক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ। লেখালেখি করেন ছোট বেলা থেকেই। ইসলামী সভ্যতা, ইতিহাস মুসলিম বিশ্বের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে লেখেন নিয়মিত। আরবী ইংরেজি থেকে অনুবাদও করেন। ইসলাম প্রতিদিনের সাথে আছেন কন্ট্রিবিউটিং রাইটার হিসেবে।

কমেন্টস করুন