ফিচার সভ্যতা-সংস্কৃতি

আলজেরিয়ার বিখ্যাত পাঁচ মসজিদ


আলজেরিয়া উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকায় ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত একটি বিখ্যাত মুসলিম রাষ্ট্র। এর বিখ্যাত পাঁচটি মসজিদ নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।


১. কাতশাওয়াহ মসজিদ : এটি রাজধানী আলজিয়ার্সে অবস্থিত একটি প্রাচীণ মসজিদ। এই মসজিদটি ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের’ অন্তর্ভুক্ত। মসজিদটি প্রথম নির্মিত হয় ১৪৬৩ সালে। তারপর ১৬১২ সালে এটিকে পুনঃনির্মাণ করা হয়। ১৮৪৫ সালে ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকাকালে এটিকে গির্জায় রূপান্তরিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে এটিকে পুণঃরায় মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।এর নির্মাণশৈলী বাইযেন্টাইন ধারার। 

২. আমীর আব্দুল কাদির মসজিদ : এই মসজিদটি আলজেরিয়ার কনস্টান্টিন প্রদেশে অবস্থিত। এটি আফ্রিকা মহাদেশের বড় মসজিদগুলোর একটি। এর মিনারের উচ্চতা ১০৭ মিটার। এর গম্বুজটি প্রায় ৬৪ বর্গ মিটার। মসজিদটির অভ্যন্তরে প্রায় ১৫হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ পড়তে পারে।এর বিরাট আঙ্গিনায় আরো কয়েক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ ১৯৯৪ সালে শেষ হয়।

৩. গ্রেট মস্ক অফ আলজিয়ার্স : এটি আলজেরিয়ার সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মসজিদ। এটি নির্মাণ করেছেন সুলতান আলি বিন ইউসুফ। এটি মুরাবিত শাসনামলের স্থাপত্যশৈলীর অনুপম নিদর্শন। মসজিদটি ১০৯৭ সালে নির্মিত হয়। তবে এর মিনারটি নির্মিত হয়েছে ১৩৩২ সালে। এই মসজিদটি সে অঞ্চলে মুরাবিত শাসকদের একমাত্র নিদর্শন।

৪. তিলমিসান মসজিদ : এই মসজিদটি নির্মাণ করেন মুরাবিত বংশের প্রথম খলীফা ইউসুফ বিন তাশফিন। এটিও আলজেরিয়ার প্রাচীণ মসজিদগুলোর একটি। আমীর ইউসুফ বিন তাশফিন ১০৮২ সালে এটি নির্মাণ করেন। তবে তাঁর পুত্র আলি বিন ইউসুফ ১১৩৬ সালে একে পুণরায় নির্মাণ করেন। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শাসক সুলতান ইয়াগমোরাসেন এর বৈশিষ্ট্যে কিছু পরিবর্তন আনেন। এবং এতে গম্বুজ সংযোজন করেন। 


৫. বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনারের মসজিদ (নির্মাণাধীন) :
 আলজেরিয়া আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় মসজিদের কাজ শুরু করেছে। এর মিনার হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনারের মসজিদ হল মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কায় অবস্থিত সুলতান ২য় হাসান জামে মসজিদ। এর মিনারের উচ্চতা ৬৯০ফিট। আলজেরিয়ার মসজিদটির মিনারের উচ্চতা হবে ৮৭৪ ফিট। ২০১৭ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২০ সালে। ২২ হেক্টরের মসজিদটির মাঝে কুরআনিক স্কুল, লাইব্রেরি, অফিস, রেস্টুরেন্ট ও ডরমেটরিসহ বেশ কিছু স্থাপনা থাকবে। মসজিদটির নির্মাণকাজ করছে চাইনিজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইন্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’।

Comment

লেখক পরিচিতি

আবু সাঈদ যোবায়ের

জন্ম কুমিল্লায়। পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়। বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। সম্পন্ন করেছেন ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত একাধিক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ। লেখালেখি করেন ছোট বেলা থেকেই। ইসলামী সভ্যতা, ইতিহাস মুসলিম বিশ্বের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে লেখেন নিয়মিত। আরবী ইংরেজি থেকে অনুবাদও করেন। ইসলাম প্রতিদিনের সাথে আছেন কন্ট্রিবিউটিং রাইটার হিসেবে।

কমেন্টস করুন