অর্থনীতি ফিচার

ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আস্থা ও অনাস্থা

বর্তমান বিশ্বে ইসলামী ব্যাংকিং ও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং—এ দুটি ধারায় পরিচালিত হচ্ছে আধুনিক ব্যাংকিং। যদিও সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ধারা খ্রিস্টের জন্মের দুই হাজার বছর আগে প্রবর্তন হয়, আর ইসলামী ব্যাংকিং হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে আল-কোরআনের নির্দেশ মোতাবেক ১ হাজার ৪০০ বছর আগে প্রবর্তন হয়। সুদ যে শোষণের জাতাকল, তা সর্বজনবিদিত। অর্থনৈতিক মুক্তির দিশা হিসেবে আল-কোরআনে সুদকে হারাম করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের চারটি সূরায় সুদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা আছে—যারা সুদ খায়, তারা (হাশরে) সে ব্যক্তির ন্যায় দণ্ডায়মান হবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে দিয়েছে। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলে, নিশ্চয়ই ব্যবসা তো সুদেরই অনুরূপ, অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে করেছেন হালাল, আর সুদকে করেছেন হারাম। অতএব, যার কাছে তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে, অনন্তর সে বিরত রয়েছে; তবে অতীতে যা হয়েছে, তা তারই থাকবে, আর তার কৃতকর্ম থাকবে আল্লাহর ওপর নির্ভর। আর যারা আবার (সুদ গ্রহণ) আরম্ভ করবে, তারা অগ্নিবাসী হবে। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৫)

আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সাদাকাকে বর্ধিত করেন। আর আল্লাহ অবিশ্বাসী পাপীদের ভালোবাসেন না। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৬)। হে বিশ্বাসীরা, আল্লাহকে ভয় করো। আর সুদের যা বকেয়া আছে, তা পরিহার করো; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৮) কিন্তু যদি তোমরা তা না করো (অর্থাৎ সুদ পরিহার না করো) তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সহিত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। আর যদি তোমরা তওবা করো, তবে তোমরা তোমাদের মূলধনপ্রাপ্ত হবে। তোমরা অত্যাচার করবে না, তোমাদের প্রতিও অত্যাচার করা হবে না। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৯) হে বিশ্বাসীরা, তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ ভক্ষণ করো না, আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমরা সুফলপ্রাপ্ত হও। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৩০) তাদের অনেককেই তুমি দেখবে পাপে, সীমা লঙ্ঘনে ও অবৈধ (সুদ) ভক্ষণে তত্পর; তারা যা করে, নিশ্চয়ই তা নিকৃষ্ট। (সূরা মায়িদা, আয়াত ৬২) মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা যে রিবা (সুদ) দিয়ে থাকো, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ধনসম্পদ বৃদ্ধি করে না। (সূরা রূম, আয়াত ৩৯) শূকরের মাংস যেমন মুসলমানদের জন্য হারাম, তেমনি সুদও তাদের জন্য হারাম। তবে শূকরের মাংসের প্রতি তাদের যেরূপ ঘৃণা ও অনীহা, সুদের প্রতি সেরূপ ঘৃণা ও অনীহা পরিলক্ষিত হয় না। এর মূল কারণ হলো সুদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেভাবে ঢুকে পড়েছে, সেটিকে নির্মূল করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে সুদের প্রতি মানুষ যেরূপ ঘৃণা প্রদর্শন করে, প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সেরূপ ঘৃণা প্রদর্শন করা হয় না। ব্যক্তি পর্যায়ে যে ব্যক্তি সুদে তার পুঁজি খাটায়, তাকে সুদখোর বলে সম্বোধন করা হয় এবং তাকে হীনজ্ঞান করা হয়। কিন্তু ওই ব্যক্তি যদি সুদ উপার্জনের জন্য তার পুঁজি ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখেন, তখন তিনি ব্যাংকারদের কাছে সম্মানিত গ্রাহক (ডেল্যুড কাস্টমার) এবং সামাজিকভাবেও পুঁজিপতি বলে সম্মানের অধিকারী। অর্থাৎ আমাদের সমাজে সুদের সংজ্ঞা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। আল-কোরআনে যে সুদের কথা বলা হয়েছে, তার আরবি পরিভাষা হলো রিবা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ঋণ কোনো মুনাফা আকর্ষণ করে, তা-ই রিবা (সুদ)। রিবার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বৃদ্ধি। পবিত্র কোরআনে ওই বৃদ্ধিকে বোঝানো হয়েছে, যার বিপরীতে কোনো বিনিময় নেই। রিবার ইংরেজি প্রতিশব্দ Interest, Usury, Premium for the use of moneyকে বোঝানো হয়েছে। প্রাচীনকালে এমনকি সামন্তযুগে ইউজুরির হার এত বেশি ছিল, যা থেকে ঋণগ্রহীতা সহজে মুক্তি পেত না। কিন্তু বর্তমান আধুনিক সমাজে ইন্টারেস্টের হার অনেক ক্ষেত্রে নগণ্য মাত্রায় হয়, যা ব্যবসাবান্ধব ও সমাজসহায়ক বলে চিহ্নিত করা হয়। আর তাই রিবার ইংরেজি প্রতিশব্দ ইন্টারেস্ট হিসেবে অনেকে মানতে চান না। তারা আল-কোরআনের রিবাকে ইউজুরি অর্থে ব্যবহার করতে চান, ইন্টারেস্ট অর্থে নয়। তাই ইন্টারেস্ট বা সুদকে অনেকে হারাম হিসেবে মানতে চান না। ব্যাখ্যার এ অস্পষ্টতার দরুন সুদ হারাম হবে কি হবে না, এ বিতর্ক এখনো চলমান। তবে ‘মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা যে রিবা (সুদ) দিয়ে থাকো, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে না’—সূরা রূমের ৩৯ নং আয়াতে রিবা শব্দ ‘সুদ এবং বৃদ্ধি’ অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। ঋণের ক্ষেত্রে আসলের অতিরিক্ত যা কিছু নেয়া হয়, তা রিবা। এটা যদি মেনে নেয়া হয়, তাহলে ইন্টারেস্ট, ইউজুরি সবই রিবা, যার হার বেশি কিংবা নগণ্য হোক না কেন। আল-কোরআনে মদকে হারাম করা হয়েছে। এখানে মাতাল হওয়ার মতো খাওয়া, নাকি সামান্য পরিমাণ খাওয়া, তার ব্যাখ্যা নেই। তাই পরিমাণ নির্বিশেষে যেরূপ মদ হারাম, সুদও এর হার নির্বিশেষে হারাম বলে বিশিষ্ট ফকিহেদর অভিমত। অতএব শূকরের মাংস, মদ, জিনা (ব্যভিচার), ঘুষ ইত্যাদির মতো সুদও হারাম হিসেবে গণ্য।

১৪০০ বছর আগে আল-কোরআনে সুদকে হারাম ঘোষণা করা হলেও সুদবিহীন ব্যাংক ব্যবস্থা না থাকায় শত শত বছর ধরে মুসলমানরা সুদের সংশ্রব থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি। ১৯৬৩ সালে প্রথম সুদবিহীন আধুনিক ব্যাংকিং মালয়েশিয়া চালু করলেও আমাদের দেশের মানুষ এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের সুযোগ পায় ১৯৮৩ সালে। ক্রমান্বয়ে এর পরিধি বাড়তে বাড়তে এখন আটটি বেসরকারি ব্যাংক ১ হাজার ১৩৪টি শাখার মাধ্যমে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এছাড়া নয়টি গতানুগতিক ব্যাংকের ১৯টি শাখা এবং সাতটি গতানুগতিক ব্যাংকের ২৫টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো দেশে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকিং সম্পর্কে গ্রাহকদের মাঝে যথেষ্ট সচেতনতা এলেও ইসলামী ব্যাংকগুলো সত্যিকার অর্থে শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে কিনা, গ্রাহকদের মাঝে এ সন্দেহটা রয়ে গেছে। অনেক গ্রাহক মনে করেন, নামাজে ইমাম সাহেব ভুল করলে যেমন মুক্তাদিদের (ইমামের পেছনে দাঁড়ানো মুসল্লি) নামাজে ব্যাঘাত ঘটে না, তেমনি শরিয়াহ পরিপালনে ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা বা ত্রুটি থাকলে গ্রাহকের সুদ বর্জনের প্রচেষ্টায় ত্রুটি থাকবে না। তাই তারা নিসংকোচে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে আস্থা রাখেন।

অনেক গ্রাহকের ধারণা সুদ ও মুনাফা একই জিনিস; ইসলামী ব্যাংকগুলো নাম পরিবর্তন করে সুদকে মুনাফা বলে ঘুরিয়ে খাচ্ছে, যা এক ধরনের প্রতারণা। ওসব গ্রাহকের এ ধারণা ঠিক নয়। ইসলামী ব্যাংকগুলো লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে আমানত গ্রহণ করে। বছর শেষে ব্যাংক তার ব্যবসার ব্যালান্সশিট তৈরি করে, যার ভিত্তিতে প্রকৃত মুনাফা বণ্টন করা হয়। সঞ্চয়ী হিসাব ও স্বল্পমেয়াদি হিসাবে (এসটিডি) জুন ও ডিসেম্বরে যে মুনাফা ক্রেডিট করা হয় বার্ষিক হিসাব-নিকাশ সমাপনান্তে ওই মুনাফার প্রকৃত পরিমাণটা সমন্বয়ের জন্য ডেবিট অথবা ক্রেডিট করা হয়, যা সুদভিত্তিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে হয় না। তবে স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে শরিয়াহ পরিপালন সঠিকভাবে করা যায় না। ছয় মাস মেয়াদি একটি স্থায়ী আমানত যদি জুলাইয়ে মেয়াদ পূর্ণ হয় এবং মেয়াদ পূর্তিতে গ্রাহক যদি তার সমুদয় আমানত মুনাফাসহ উত্তোলন করতে চান, তখন যে মুনাফা দেয়া হয়, তা প্রকৃত মুনাফা নয়, আনুমানিক মুনাফা। বছর শেষে প্রকৃত মুনাফার চেয়ে পরিশোধিত মুনাফা যদি বেশি হয়ে থাকে, তখন ব্যাংক ওই গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়তি মুনাফাটা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু গ্রাহককে তো ওই সময়ে পাওয়া সম্ভব নয়, যে কারণে শরিয়াহ পরিপালন পুরোপুরি সম্ভব হয় না। যদি গ্রাহককে বলা হয়, মুনাফাটা বছর শেষে পাবেন, তখন গ্রাহক এই প্রস্তাবে রাজি হন না। শরিয়াহ পরিপালনে শুধু ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার সদিচ্ছা থাকলে হয় না, গ্রাহকের সহযোগিতা ও সদিচ্ছারও প্রয়োজন হয়। আমাদের ব্যাংকিংয়ে এখনো এর ঘাটতি রয়েছে। এ ধরনের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের শুদ্ধাচার নিয়ে অনেকে সন্দিহান।

ইসলামী ব্যাংকিংয়ে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অনেক গ্রাহকের পরিষ্কার ধারণা না থাকায় তারা অনাস্থা প্রকাশ করেন। এক বাই-মোয়াজ্জেল বিনিয়োগ (ঋণ) গ্রাহক এসে ম্যানেজারকে বললেন, ‘আমার ব্যবসায় অনেক লোকসান হয়েছে, তাই আমার ঋণটা মওকুফ করে দেন। যেহেতু আপনারা লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে ব্যবসা করেন।’ ইসলামী ব্যাংকিংয়ে অনেক ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে, যার মধ্যে মুশারাকা (অংশীদারি) বিনিয়োগেই ব্যাংক গ্রাহকের লাভ-লোকসানের ভাগীদার হয়। ওই বাই-মোয়াজ্জেল এমন এক ধরনের বিনিয়োগ, যা গ্রাহকের ফরমায়েশ অনুযায়ী ব্যাংক নির্দিষ্ট পণ্যটি ক্রয় করে নির্দিষ্ট মুনাফাসহ তত্ক্ষণাৎ গ্রাহকের কাছে বিক্রয়ের ব্যবস্থা এবং তাতে ব্যাংক নগদে পণ্যটি ক্রয় করে গ্রাহকের কাছে বাকিতে বিক্রি করে। এ ব্যবস্থায় লাভ-লোকসানের ঝুঁকি ব্যাংক নেয় না। উৎপাদনকারীর কাছ থেকে এক খুচরা ব্যবসায়ী পণ্য কেনার পর ওই পণ্যে খুচরা ব্যবসায়ী যদি লোকসান দেন, সে লোকসানে উৎপাদনকারী যেমন ভাগীদার হয় না, বাই-মোয়াজ্জেল বিনিয়োগ পদ্ধতিতেও সেরূপ লোকসানে ব্যাংক ভাগীদার হয় না। তবে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে লাভ-লোকসান পদ্ধতিতে (মুশারাকা ও মুদারাবা) বিনিয়োগ কার্যক্রমই প্রধান বিনিয়োগ পদ্ধতি হওয়া উচিত, যা অবশ্য গ্রাহকের শতভাগ সততার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশে গ্রাহকরা সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন না, তাই তাদের ওপর ব্যাংকাররা আস্থা রাখতে পারেন না। ফলে লাভ-লোকসানভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতিগুলো এ দেশে এক প্রকার অধরাই রয়ে গেল। ২০১৮ সালের জুনভিত্তিক বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংকগুলো মুশারাকা ও মুদারাবায় বিনিয়োগ প্রদান করেছে, তাদের মোট বিনিয়োগের মাত্র ১ দশমিক ৫৫ ও দশমিক ২৩ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আস্থা স্থাপন এবং একে জনপ্রিয় করার জন্য মুশারাকা ও মুদারাবা পদ্ধতিতে বিনিয়োগ (ঋণ) বাড়ানো বাঞ্ছনীয়। অনেকে ইসলামী ব্যাংকিংকে মৌলবাদী ব্যাংক হিসেবে সম্বোধন করেন এবং শুধু মুসলিমদের ব্যাংক হিসেবে গণ্য করেন। ধারণাটা সত্য নয়। সুদভিত্তিক ব্যাংকিং যেমন ইহুদিদের প্রবর্তিত একটি পদ্ধতি, তেমনি সুদবিহীন ব্যাংকিংটা কোরআন ও হাদিস নির্দেশিত একটি পদ্ধতি। সুদভিত্তিক ব্যাংকে ব্যাংকিং করলে যেমন কেউ ইহুদিদের পৃষ্ঠপোষক হয়ে যায় না, তেমনি সুদবিহীন ব্যাংকে কেউ ব্যাংকিং করলে ইসলামের পৃষ্ঠপোষক হয়ে যায় না। তবে কোনো মুসলিমের নিয়ত যদি এই হয় যে তিনি কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশ পালনের জন্যই শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং করেন, তাহলে তার সুবিধা দুই প্রকারের—এক. আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রাপ্তি, দুই. পরকালীন মুক্তি।

বাংলাদেশে ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক আটটি হলেও দেশের ব্যাংকিং খাতে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মার্কেট শেয়ার ২০ শতাংশের বেশি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রতি বাংলাদেশীদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি একটি বড় খাতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং একটি বড় খাত হলেও এখন পর্যন্ত এর জন্য আলাদা কোনো আইন হয়নি। তাছাড়া শরিয়াহবিষয়ক মামলা-মোকদ্দমা সুরাহার জন্যও কোনো আলাদা আদালত নেই। অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাক্টের আওতায় শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং পরিচালিত হয় এবং শরিয়াহ কোর্টে ইসলামী ব্যাংকিং-সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা সুরাহা হয়। এ ধরনের ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাক্ট ও শরিয়াহ কোর্ট প্রবর্তন করা এখন সময়ের দাবি। ইসলামী ব্যাংকগুলো পাওনা আদায়ের জন্য অন্যান্য ব্যাংকের মতো অর্থঋণ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কোরআন ও হাদিসের আলোকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের মামলা ফয়সালার জন্য শরিয়াহ বিশেষজ্ঞের আদালত থাকা বাঞ্ছনীয়। ইসলামী ব্যাংকে মানুষের আস্থা সৃষ্টির জন্য এ ধরনের আদালতের গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের পথপরিক্রমায় এ ধরনের অত্যাবশ্যক পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হলে খাতটি দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর।

সৌজন্যে : দৈনিক বণিক বার্তা

Comment

লেখক পরিচিতি

ড. এস এম আবু জাকের

ড. এস এম আবু জাকের- একাধারে তিনি একজন লেখক, গবেষক ও কলামিষ্ট। এছাড়া কর্মজীবনে তিনি একজন ব্যাংকার।