জীবন বিধান প্রশ্ন-উত্তর বিধান

মুহাররম মাসে বিয়ে করা কি নিষেধ?

প্রশ্ন : আমার বড় ভাইয়ের বিয়েশাদির আলোচনা চলছিল। পাত্রী দেখতে বিলম্ব হয়ে যায়। ইতিমধ্যে মুহররম মাস এসে পড়ে। কথা ছিল পাত্রী দেখে পছন্দ হলে ৫/১০ দিনের মধ্যে বিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু মুরব্বীগণ সতর্ক করে দিলেন, এটা মুহাররম মাস। এ মাসে বিয়ে অশুভ। তাই আমরা বিয়ের বিষয়টা স্থগিত রেখেছিলাম। জানতে চাই, এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা কী?

উত্তর : মুহাররম মাসে বিয়ে-শাদী অশুভ মনে করা একটি কু-ধারণা, যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। কোনো দিন বা মাসকে অলক্ষুণে মনে করা জাহেলী যুগের ধারণা। শরীয়ত এ ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও শিরকী ধারণা বলে অভিহিত করেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, কুলক্ষণ গ্রহণ করা শিরক। (সুনানে আবু দাউদ ২/১৯০)

মুহাররম মাসে হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদতের কারণে একশ্রেণীর লোক এ মাসকে অশুভ মনে করে থাকে, যা তাদের মনগড়া বিষয়। হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত অবশ্যই মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, কিন্তু এ কারণে কোনো মাস বা সময়কে অশুভ মনে করার অবকাশ নেই।

পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। কোনো দিবস-রজনী, সপ্তাহ, মাসের এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। জাহেলী যুগে শাওয়াল মাসে বিবাহ-শাদি করাকে অশুভ মনে করা হত। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) এই ধারণাকে এই বলে খণ্ডন করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং এ মাসেই বিবাহ-রজনী উদযাপন করেছেন। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? (সহীহ মুসলিম হাদীস : ১৪২৩)

অতএব প্রমাণিত হল, কোনো দিন বা মাসকে কোনো কাজের জন্য অশুভ মনে করা ঠিক নয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ অলীক, শিরকপ্রসূত।

Comment

লেখক পরিচিতি

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ। তরুণ লেখক। আলেম ও গবেষক। দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালে লিখছেন। কাজ করেছেন সুনামধন্য কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে।
বর্তমানে এই তরুণ লেখক আমাদের সময়.কম অনলাইন নিউজ পোর্টালের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার ইসলামি বিভাগের।