জীবন বিধান প্রশ্ন-উত্তর বিধান

ইন্টারনেটে ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমে বিবাহ বৈধ হবে কি?

লিখেছেন মিরাজ রহমান

প্রশ্ন : বর্তমান যুগ ইন্টারনেট ও তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও কলিংয়ে এখন এমন সুবিধা রয়েছে যে, দু প্রান্তে থাকা দুজনই একে অন্যকে সুস্পষ্টভাবে দেখতে পায় এবং চিনতে পারে। প্রশ্ন হলো- এভাবে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিওতে বর-কনে ও সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে যদি বিয়ে পড়ানো হয় তাহলে এ বিবাহ জায়েজ হবে নাকি হবে না? এ বিয়ের হুকুম কী?

উত্তর : না, এভাবে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও কলিংয়ে বিবাহ পড়ানো হলে তা সহিহ বা বৈধ হবে না। ইসলামী বিধান মোতাবেক বিবাহ সহিহ বা বৈধ হওয়ার জন্য সাক্ষীদের সরাসরি সম্মুখে তাদেরকে শুনিয়ে ইজাব-কবুল অর্থ্যাৎ প্রস্তাব ও গ্রহণ হওয়া জরুরি এবং সবাই অর্থ্যাৎ বর-কনে ও সাক্ষীগণ একই মজলিসে উপস্থিত থাকা আবশ্যক।

ইজাব তথা প্রস্তাব ও কবুল তথা গ্রহণ সহিহ তখনই হবে যখন প্রস্তাবকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের মজলিস এক হবে। আর বিয়ের মজলিসে দুইজন সাক্ষীর একসাথে বিদ্যমান থাকা শর্ত। সেই সাথে ইজাব ও কবুল একইসাথে শোনাও শর্ত। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও কলিংয়ে বিবাহ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এসব শর্ত পাওয়া যায় না। সুতরাং ইন্টারনেটের একপ্রান্তে বরকে ও অন্য প্রান্তে কনেকে রেখে লাউড স্পীকার কথা শুনয়ে বা ভিডিওতে দেখে উভয়ের নিকট দু’জন সাক্ষী উপস্থিত থাকলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে বিবাহ সংঘটিত হবে না।

এক্ষেত্রে করণীয় হলো- পাত্র বা পাত্রী তার পক্ষ থেকে বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য কাউকে প্রতিনিধি বানাতে হবে এবং ঐ প্রতিনিধি অপর পক্ষকে নিয়ে দুই সাক্ষীর সামনে বিবাহ সম্পন্ন করবে। [সূত্র : ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৯৪, ২৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১]

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কমেন্টস করুন