ফিচার স্বাস্থ্য সুরক্ষা

মসজিদগুলোতে বিকল্প স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি

লিখেছেন মিরাজ রহমান

করোনাভাইরাসের আঘাতে থমকে আছে গোটা বিশ্ব। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বন্ধ হয়ে আছে মানুষের নিত্যনৈমত্তিক প্রায় সব আদান-প্রদান। বিশ্বের প্রসিদ্ধ প্রায় সব ইসলামী দেশগুলোতে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হজ ও ওমরাহ পালনকে স্থগিত রাখা হয়েছে পবিত্র ভূমি সৌদি আরবে। বিশ্বের প্রসিদ্ধ ইসলামী স্কলারগণ মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় এবং শুক্রবারের জুমআর নামাজ আদায় করাকে যতটুকু সম্ভব সংক্ষিপ্ত করার ফতোয়াও দিয়েছেন।

বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন সব ঘরানার আলেম-উলামাদের অংশ গ্রহণে মহামারি এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ৮টি দিক-নিদের্শনা প্রদান করেছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কাছে কোনোভাবেই যেন হার মানছেন না মুসলিমরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ বাংলাদেশেও করুন এই পরিস্থিতিতে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের বরেণ্য আলেম-উলামাদের প্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক-নিদের্শনা মানার পাশাপাশি দেশের সব মসজিদে বিকল্প স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ এবং ধানমন্ডির মসজিদ-উত-তাকওয়ার খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম ইসলাম প্রতিদিনকে ওভারফোনে মন্তব্য প্রদান করেন। তাদের মতামত শুনতে নিচের ভিডিও ক্লিপটি দেখুন…



ঢাকার বেশ কয়েকটি মসজিদের ইমাম-খতিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতীতে ফজরের জামাতে যেখানে মসজিদে টেনে-টুনে ১/২ কাতার মুসল্লি হতো, বর্তমান সময়ে ফজরের নামাজে মসজিদ ভরে যায় মুসল্লিতে। আর জুমআয় তো কথাই নেই- যেসব মসজিদে জুমআর নামাজে ৩/৪শ মুসল্লি হতো, সেসব মসজিদে এখন মুসল্লি হয় হাজার হাজার।

কথা হয় বেশ কয়েকজন রেগুলার নামাজির সঙ্গে। ঢাকাস্থ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একজন মুসল্লি বলেন, দেখুন বাংলাদেশের মানুষ জন্মগতভাবেই অনেকটা ধার্মিক। করোনাভাইরাসের এই মহামারিকে ভয় করার তুলনায় আল্লাহর ভয় বাংলাদেশী মুসলিমদের মাঝে অনেক বেশি। তারা বলতে চাচ্ছেন, জন্মেছি যখন মৃত্যু একদিন আসবেই। মরতে যখন হবে আল্লাহ ঘরে গিয়ে নামাজের জন্য মরাটাই উত্তম নয় কি?

মসজিদমুখি মুসল্লিদের চাপ সামলাতে না পেরে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের বিভিন্ন মসজিদে ইতিমধ্যে বিকল্প স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও মসজিদে যেহেতু জামাতে নামাজ আদায় হচ্ছে এবং নামাজ আদায়কারীর সংখ্যা বাড়ছে বেশি; কোনোভাবেই যেহেতু নিষেধ মানছেন না মুসল্লিরা সুতরাং বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে বিকল্প স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা এখন অতিব জরুরি, এমনটাই মন্তব্য করছেন ইসলামী স্কলারগণ।

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।