কােরআন তথ্য-প্রযুক্তি ফিচার বেসিক ইসলাম

মনগড়া ও বিকৃত অর্থসহ পবিত্র কুরআন প্রচার করছে কাদিয়ানী সম্প্রদায়

মহান আল্লাহ মানবতার কল্যাণ ও মুক্তির জন্য সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী-রাসুল ও কিতাব প্রেরণ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ বা চূড়ান্ত কিতাব হিসেবে আল কুরআন ও রাসুল হিসেবে হজরত মুহাম্মাদকে (সা.) প্রেরণ করছেন এবং চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন অহীর দরজা। যেমনটি সুরা মায়িদায় ইরশাদ হয়েছে, আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। (সুরা মায়িদা, আয়াত-০৩) এ আয়াত অবতীর্ণ করার মাধ্যমেই মূলত অহীর দরজা তথা নতুন কোনো পয়গাম কিংবা পয়গাম্বরের আগমনের ইতি টেনে দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। কিন্তু মানবসমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা কখনোই চুপ থাকেনি। ঈশ্বরের বাণী দিয়ে জগতে ঐশ্বরিক শান্তি সৃষ্টিতে সবসময়ই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গেছে এক শ্রেণীর মানুষ। ‘কাদিয়ানীবাদ’টাও ঠিক এমনই একটি বিশৃঙ্খলাসৃষ্টিকারী কাফেলা নাম। যুগে যুগে ইসলামের মনগড়া অপব্যাখ্যা দেওয়া, রাসুলকে (সা.) আল্লাহ মহান প্রেরিত শেষ নবী মান্য না করা এই মতাদর্শবাদীদের মূল এজেন্ডা। এই অহেতুক ও অযৌক্তিক উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য কাদিয়ানীরা এহেন কাজ নেই যা করেনি।

পবিত্র কুরআনের অর্থ বিকৃতির মতো ভয়ানক কাজটি করার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে এই কাদিয়ানীরা। তাদের ভিত্তিহীন উদ্ভট সব দাবীর মধ্যে অন্যতম দাবী হলো, ‘হজরত মুহাম্মাদ (সা.) শেষ নবী নন। (নাউজুবিল্লাহ) কাদিয়ানী সম্প্রদায় তাদের এই দাবী প্রতিষ্ঠিত করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন উপায় এবং গ্রহণ করেছে আধুনিক প্রযুক্তি। বিকৃত অর্থসহ পবিত্র কুরআনের মোবাইল অ্যাপলিকেশন তৈরি করে গুগল প্লে স্টোরে ছেড়েছে তারা এবং সেখান থেকে এই বিকৃত অর্থের কুরআন ডাউনলোড করে প্রতারিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে The Holy Quran Arabic/English লিখে সার্চ করতে একটি কুরআনের অ্যাপস পাওয়া যাবে। যে অ্যাপসটির প্রচার বা প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে আহমদিয়া মুসলিম কমিউটির নাম প্রদান করা রয়েছে। সেই অ্যাপসে গিয়ে দেওয়া যায় পবিত্র কুরআনের খতমে নবুয়ত তথা মুহাম্মাদ (সা.)-এর শেষ নবী হওয়ার প্রমাণবিশিষ্ট সুরা আহযাবের ৪০ তম আয়াতিটটির প্রকৃত অর্থ বদল করে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের মনগড়া অর্থ বসানো হয়েছে-

আরবি আয়াতটি হলো :

مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا

প্রকৃত ইংরেজি অনুবাদ : Muhammad is not the father of [any] one of your men, but [he is] the Messenger of Allah and last of the prophets. And ever is Allah, of all things, Knowing.

প্রকৃত বাংলা অর্থ : মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।

কাদিয়ানী মনগড়া ইংরেজি অনুবাদ : (যে অনুবাদ এই  মোবাইল অ্যাপসটিতে বিদ্যমান) Muhammad is not the father of any of your men, but he is the Messenger of Allah and the Seal of the prophets. And; Allah has full knowledge of all things.

কাদিয়ানী মনগড়া ইংরেজি অনুবাদের বাংলা অর্থ হয় :  মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং নবীদের নিদর্শন। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।

উপরোল্লিখিত আয়াতের خَاتَمَ শব্দটির অনুবাদের ক্ষেত্রে বিশ্বের সমস্ত মুসলিম বিশেষজ্ঞ ‘last’ তথা ‘সর্বশেষ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। মসুলিম উম্মাহকে বিভ্রান্ত করার জন্য সেখানে খুব সূক্ষভাবে কাদিয়ানীরা ‘Seal’ তথা ‘বিশেষ নিদর্শন/প্রতীক’ শব্দটি ব্যবহার করেছে। প্রত্যেক বিবেকবান সচেতন মুসলমানের উচিত কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের এহেন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়া এবং এই মোবাইল অ্যাপসটিকে গুগল প্লে স্টোর থেকে ডিলেক্ট করে দেওয়ার জন্য অ্যাপস ডেসক্রিপশনের নিচে গিয়ে Flag as inappropriate অপশনে গিয়ে রিপোর্ট জানাতে পারেন।

Comment

লেখক পরিচিতি

জাহিদ হাসান মিলু

আমি জাহিদ। সরকাারি কাগজপত্রের জাহিদুল ইসলাম থেকে বেসরকারি কাগজপত্রে জাহিদ হাসান মিলু- নামের এই বিচিত্র পরিবর্তনের পেছনে একটা মিষ্টি গল্প আছে।
জন্মেছি গোপালগঞ্জ জেলার অখ্যাত গ্রাম প্রশন্নপুরে, ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে। কী এক বিশেষ কারণে যেন কাগজকলমে বয়েস কমিয়ে আমাকে আরও তিনবছরের ছোটো করে রাখা হয়েছে। বাবা মা দুজনেই অক্ষর না শিখেও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম স্বাক্ষর হয়ে আছেন।
অবুঝ বয়েসে পারিবারিক স্বপ্নের কারণে ভর্তি হতে পেরেছিলাম মাদ্রাসায় , আলহামদুল্লিলাহ। জীবনের সবথেকে বড় পারিবারিক গিফ্ট ছিল এটা আমার জন্য। কুরআন পড়তে শিখলাম, মুখস্থ করতে পারলাম। অর্থ জানলাম এবং ব্যাখ্যাও পড়লাম।
আমাদের পাড়ার মাদ্রাসা কুলিয়ার ভিটায় পড়ার সময় ধর্মের প্রতি আমাদের ভেতরে যে বীজটা রোপিত হয়েছিল, সেটা ডালাপাল মেলে খোলা হাওয়ায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় প্রাণের প্রতিষ্ঠান এরাবিল মডেল মাদ্রাসায়। তারপর? তারপর আর কি- এখন পড়াশোনা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে।
দায়ী হওয়ার স্বপ্ন আমার সবথেকে বড় স্বপ্ন। স্বপ্নটি পূরণ করতেই পড়ছি, শুনছি, দেখছি, শিখছি এবং অপেক্ষা করছি।