জাতীয় ফিচার মুসলিম উম্মাহ সংবাদ

২০২০ সালের বিশ্ব ইজতেমা কত তারিখ?

লিখেছেন মিরাজ রহমান

সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত হয়েছে ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমা। জোবায়েরপন্থী ও ওয়াসিফপন্থীদের আয়োজনে মোট দুই পর্বে আয়োজিত হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। জোবায়েরপন্থীদের তত্ত্বাবধানে ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। এরপর ওয়াসিফপন্থী তথা সাদপন্থীদের তত্ত্বাবধানে ১৭ ফেব্রুয়ারি ফজরের পর আম বয়ানের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১.৪৫ মিনিটে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার সকল কার্যক্রম।

প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষে জোবায়েরপন্থীদের পক্ষ থেকে আগামী বছর তথা ২০২০ সালের ইজতেমার দুই পর্বের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সে ঘোষণায় বলা হয়, আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জোবায়েরপন্থীদের আমির মাওলানা জোবায়েরের ছেলে মুফতি হানযালার সঙ্গে। তিনি বলেন, আগামী বছরে দুটি পর্বে মোট ছয়দিন আমরা ইজতেমা করবো ইনশা আল্লাহ। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এতো বেশি পারিমাণ মুসল্লি আমাদের ইজতেমায় উপস্থিত হন, একবারে তাদের স্থান সংকুলান হয় না। এ কথা বিবেচনায় রেখেই মুরুব্বিরা সিন্ধান্ত নিয়েছেন, আমাগী বছর দুই পর্বে আমাদের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে এবং সে ইজতেমায় আলেম-উলামাসহ সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করবেন, ইনশা আল্লাহ।

এদিকে সাদপন্থীদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা সমাপ্ত হওয়ার পর তাদের পক্ষ থেকে আগামী বছরের তথা ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করা হয় ৩, ৪ ও ৫ জানুয়ারি। কথা হয় সাদপন্থীদের বাংলাদেশের আমির সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, আমরা ইনশা আল্লাহ আগামী বছর ৩, ৪ ও ৫ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবো এবং সে ইজতেমায় দিল্লীর মারকাজসহ সারা বিশ্ব থেকে তাবলীগ জামাতের প্রবীণ আমিরসহ সাথীরা আসবেন।

বিষয়টি নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে। আগামী ইজতেমার তিনটি তারিখ ঘোষণা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত। বিষয়টি নিয়ে জনমণে বিরাজ করছে নানা সন্দেহ। ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ গ্রহণকারী মুসল্লি মোতালেব হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, প্রথম পর্ব থেকে আগামী বছর দুটি তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোন তারিখ কারা ইজতেমা করবেন এমনটা বোঝা কঠিন। কেউ কেউ এ ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, জোবায়েরপন্থীরা দুটি তারিখ ঘোষণা করেছেন- এর মানে তারা আগামী বছরে একাই দুই পর্বে ইজতেমা করবেন। যেহেতু তারা সাদপন্থীদের বিরোধী তাই আগামী বছর তাদের ইজতেমা না করতে দেওয়ার অংশ হিসেবেই হয়তো এমনটা করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ আবদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, এ বছর আলহামদুলিল্লাহ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে দুই পর্বের ইজতেমা সমাপ্ত হয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার নানা রকম সমস্যা হবে কিন্তু আল্লাহর রহমতে কোনো প্রকারের কোনো সমস্যা হয়নি।  তিনি আরো বলেন, আগামী বছর ইজতেমার সময় আসতে এখনও অনেক বাকি আছে। এখনই মন্তব্য করা ঠিত হবে না। তবে আশা করছি, এবারের তুলনায় আরো বেশি শান্তি ও শৃঙ্খলা এবং ঐক্যবদ্ধতার সঙ্গে আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজিত হবে, ইনশা আল্লাহ। এ ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে কোনো আয়োজন ও চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না ইনশা আল্লাহ।

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।