ফিচার বই ভিডিও

চেতনা জাগানিয়া একঝুঁড়ি গল্পের সমাহার— ‘মা, মা, মা এবং বাবা’

Featured Video Play Icon
লিখেছেন মিরাজ রহমান

পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে মা। জগৎ সংসারের শত দুঃখ-কষ্ট আর বিপদ-সংকটে যে মানুষটির একটু সান্ত্বনা আর স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের সব বেদনা দূর করে দেয়— তিনিই হলেন মা। মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের কাছে তার মা অতি মূল্যবান। শুধু মানুষ কেন? পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীই তার মায়ের কাছে ঋণী। সে ঋণ শোধ করার কোনো উপকরণ আল্লাহপাক দুনিয়ায় সৃষ্টি করেননি।

ইসলাম মাতা-পিতাকে সর্বোচ্চ অধিকার ও সম্মান দিয়েছে। ইসলামের বিধানমতে, আল্লাহ তাআলার পরেই মাতা-পিতার স্থান। এ প্রসঙ্গে মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত না করতে এবং মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে। তাঁদের একজন অথবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাঁদের উফ্ বলবে না এবং তাঁদের ধমক দেবে না; তাঁদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলবে। মমতাবশে তাঁদের প্রতি নম্রতার ডানা প্রসারিত করো এবং বলো, হে আমার প্রতিপালক! তাঁদের প্রতি দয়া করো, যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছেন’। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত- ২৩,২৪)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কে আমার উত্তম আচরণ পাওয়ার বেশি হকদার?’ রাসুল (সা.) বললেন ‘তোমার মা’; লোকটি বলল, ‘তারপর কে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’; লোকটি আবারও বলল, ‘তারপর কে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি পুনরায় বলল, ‘এরপর কে?’ রাসুল (সা.) চতুর্থবার বললেন, ‘তোমার পিতা’। (বুখারি ও মুসলিম)। এছাড়া প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, ‘মায়ের পদতলে জান্নাত’। (মুসলিম)


বই পরিচিতি— ২৫ : মা, মা, মা এবং বাবা।

সম্পাদনা— আরিফ আজাদ।

শরঈ সম্পাদনা— শায়খ আহমাদুল্লাহ।

প্রকাশক— সমকালীন প্রকাশন।

অনলাইন থেকে বইটি কেনার লিঙ্ক— http://bit.ly/31kMlIi

বইটি কিনতে চাইলে কল করুন— ০১৮৫৬১৪৪৪৪১ এই নাম্বারে।


পিতা-মাতা এবং সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর এবং সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের কোথাও কোনো খাঁদ নেই। নেই স্বার্থ কিংবা স্বার্পরতার ছোঁয়া। অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাসে আমাদের জীবনের সেই মহানায়ক আর মহানায়িকা— যারা নিজেদের সবটুকু ঢেলে দিয়ে আমাদের আগলে রাখেন, আমাদের মানুষ করেন, তাদেরকে আমরা আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলি। পরিত্যক্ত জঞ্জালের ন্যায় ভাগাড়ে নিক্ষেপ করি। এমনসব কঠিণপ্রাণ সন্তান, যারা দুনিয়ার লোভ আর মোহে পড়ে বাবা-মা’কে ভুলে যায়, ভুলে যায় তাদের অবদান, ত্যাগ আর তিতিক্ষার গল্প, কেমন হয় তাদের পরিণতি?

অথবা, এমনসব সৌভাগ্যবান সন্তান, যারা সবকিছুর বিনিময়ে বাবা-মা’কে আগলে রাখে, ভালোবাসে, যেভাবে শৈশবে তাদের আগলে রেখেছিল তাদের পিতা-মাতা, কেমন হয় সেসকল সন্তানদের যাপিত জীবনের গল্প। এরকম একঝুঁড়ি গল্পের সমাহার নিয়ে রচিত ‘মা, মা, মা এবং বাবা’ গ্রন্থটি।

মা, মা, মা এবং বাবা, নামটাই কত অদ্ভুত, তাই না? শুধু অদ্ভুত না। অদ্ভুতরকম সুন্দর। গোটা বইটিকে প্রথমত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগকে ‘জীবন থেকে নেওয়া’ শিরোনামে নামকরণ করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ভাগের নামকরণ করা হয়েছে ‘কুরআন ও হাদিস থেকে নেওয়া’ শিরোনামে। আরিফ আজাদ সম্পাদিত বইটিতে প্রথমভাবে ৩৫ টি ইসলামিক গল্পের পাশাপাশি দ্বিতীয়ভাগে কুরআন ও হাদিস থেকে নয়টি উপদেশমূলক গল্প-ঘটনাও সংযোজন করা হয়েছে। গ্রন্থটির শরঈ সম্পাদনা করেছেন শাইখ আহমাদ উল্লাহ। অনন্য সুন্দর এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছেন সমকালীন প্রকাশন। বইয়ে স্থান লাভ করা গল্পগুলো সম্পর্কে প্রকাশকের কথায় বলা হয়েছে, ‘এই বইটি টুকরো টুকরো গল্প দিয়ে সাজানো। বইয়ের বেশকিছু গল্প শাইখ আবদুল মালিক মুজাহিদের ‘লাইভিং আওয়ার প্যারেন্টস’ বইটি থেকে নেওয়া।’

‘জীবন থেকে নেওয়া’ শিরোনামের প্রথমভাগে যুক্ত গল্পগুলো হলো— ১. মায়ের চিঠি, ২. সালেম, ৩. বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসুন, ৪. এই ঋণ শোধ হবার নয়, ৫. উপহার, ৬. মায়ের চোখে পৃথিবী, ৭. ত্যাগ ও বিনিময়, ৮. তবুও সৌভাগ্যবান, ৯. রেস্টুরেন্টে একদিন, ১০. মায়ের মিথ্যে বলা, ১১. অবহেলা, ১২. অনুশোচনার গল্প : হারিয়ে ফেলার পরে, ১৩. লোভের তাড়না, ১৪. অনুশোচনার গল্প : রক্তাক্ত আলেক্সেন্ডিয়া, ১৫. মাকে পাওয়ার মামলা, ১৬. আত্মত্যাগ, ১৭. উপলব্ধির গল্প : আর কি পাবো তারে, ১৮. কিছু স্মৃতি, কিছু শূন্যতা, ১৯. পুরস্কার, ২০. স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন, ২১. আনুগত্যের গল্প : সঠিক পথের দিশা, ২২. মায়ের অভিশাপ, ২৩. এক বৃদ্ধার ইসলামগ্রহণ, ২৪. শোচনীয় পরিণতি, ২৫. ফজল বিন ইয়াহইয়া, ২৬. ইবনু তাইমিয়ার চিঠি, ২৭. ধনী লোকের মানহানি, ২৮. সেতুবন্ধন, ২৯. অশুভ পরিণাম, ৩০. আনুগত্যের গল্প : মৃত্যু থেকে রক্ষা, ৩১. অবাধ্যতা, ৩২. উপলব্ধির গল্প : অবুঝ শিশুর ভাবনা, ৩৩. বাবা-মায়ের স্মৃতি, ৩৪. সিলাহ রেহমি, ৩৫. সহানুভূতির সত্য রূপ।

‘কুরআন ও হাদিস থেকে নেওয়া’ শিরোনামের দ্বিতীয়ভাগে যুক্ত গল্পগুলো হলো— ১. ইবরাহীম (আ.)-এর নম্রতা, ২. জুরাইজের ঘটনা, ৩. ‘উমার (রা.) -এর কান্না, ৪. পাথর অপসারণ, ৫. বাবা-মায়ের দুআ, ৬. উত্তম আচরণ ও সম্মান, ৭. অমুসলিম পিতা-মাতার সাথে আচরণ, ৮. দীর্ঘায়ু ও সম্পদ লাভ, ৯. এক ইয়েমেনীর ঘটনা।

বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৭৫। মুদ্রিত মূল্য ২৩৫ টাকা। বইয়ের কাগজের ধরণ, সাইজ এবং পৃষ্ঠার কোয়ালিটি খুবই চমৎকার। নীচে বাবা ও মায়ের ধরে রাখা হাতের মাঝখানে সন্তানের ছোট কোমল হাতটির ছবিসহ প্রচ্ছদটি এককথায় অসাধারণ। ২০১৮ সালে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। বইটি কিনতে চাইলে ১১/১ বাংলা বাজারস্থ ইসলামী টাওয়ারে অবস্থিত সমকালীন প্রকাশনের দোকান থেকে কিনতে পারেন অথবা কল করতে পারেন ০১৬১৬ ৬২৬ ৬৩৬ এই নাম্বারে। এছাড়া ঘরে বসে বইটি ক্রয় করতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন রকমারি.কমে

Comment

লেখক পরিচিতি

মিরাজ রহমান

গতানুগতিক ধারার বাইরে থেকে কাজ করে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মিরাজ রহমান। পেশায় পুরোদস্তুর একজন সাংবাদিক হলেও কেবল ইসলামকে ঘিরেই আবর্তিত তার ধ্যান-জ্ঞান। দৈনিক পত্রিকার ইসলাম পাতায় লেখালেখি থেকে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বটে, কিন্তু একসময় শিল্প চর্চায়ও ছিলেন বেশ মনোযোগী।
মিডিয়ায় সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন যখন, তখনও তিনি ছাত্র। মাদানিনগর মাদরাসার কাফিয়া জামাতের (শ্রেণি) শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় কণ্ট্রিবিউটর হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন দৈনিক যুগান্তরে। ধারালো লিখনী শক্তি অল্পদিনের মধ্যে পরিচিত করে তোলে তাকে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রায় সবগুলোতেই ইসলামবিষয়ক কলাম ও ফিচার লিখেছেন দীর্ঘ সময়। জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে তার অন্তত দুই সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
মিরাজ মূলত পড়াশুনা করেছেন কওমি শিক্ষাধারায়, এর পাশাপাশি তিনি জেনারেল শিক্ষাধারায়ও পড়াশুনা করছেন। সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায়। সেখান থেকে দৈনিক কালের কণ্ঠে। দেশে-বিদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের জয়যাত্রা শুরু হলে মিরাজ ইন্টারনেট জগতকে ইসলাম প্রচারের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বিবেচনা করে অনলাইনেই গাঁটছাড়া বাঁধেন। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল প্রিয়.কমের ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলার সূচনা তারই হাতে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের এডিটর ইনচার্জ। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফিচার ইনচার্জ হিসেবে।
টেলিভেশনে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গেও ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছেন মিরাজ রহমান। পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানও। এসো কলম মেরামত করি, ছোটদের নবী-রাসূল সিরিজ, তাবলিগী জামাতের পৃষ্ঠপোষক-মুরুব্বি ছিলেন যাঁরা, শরয়ী পর্দার বিধান, আশিক মিন ফিলিস্তিন, নারী তুমি সৌভাগ্যবতী ও হালাল ব্যবসা ও হালাল অর্থনীতির কথকতাসহ বেশ কিছু আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থেও জনক তিনি। বর্তমান তিনি ইসলাম প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং দ্য সুলতান প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।