গবেষণা

শব্দে শব্দে দীন শেখা : আকিকা


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, যার সন্তান ভূমিষ্ট হয় সে যদি শিশুটির পক্ষ থেকে আকীকা করা পছন্দ করে তাহলে যেন তাই করে। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)


মাওলানা মিরাজ রহমান : ইসলামের পরিভাষায় সন্তান জন্মগ্রহণের পর আল্লাহর শুকরিয়া ও আনন্দের বহির্প্রকাশ হিসেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে পশু জবাই করা হয়, তাকে আকিকা বলা হয়। আকীকা শব্দটি আরবী। শব্দটি আককুন হতে নির্গত। আভিধানিক অর্থ দীর্ণ করা, ফাঁক করা, খণ্ডিত করা, আলাদা করা। কারো কারো মতে, এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বিদ্যুতের ঝলক।

সন্তান জন্মগ্রহণের শুকরিয়াস্বরূপ যে পশু যবাই করা হয় তাকে আকীকা বলে। পরিভাষায় আকিকা বলা হয় নবজাতকের মাথায় গজানো প্রথম চুলগুলোকে। সপ্তম দিনে যেহেতু এগুলো মুণ্ডিয়ে মাথা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয় এ জন্য এ চুলগুলোকে আকিকা নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মাথা মুণ্ডানোর সময় যে বকরি জবাই করা হয় সেটাকেও আকিকা বলা হয়। (মাযাহেরে হক)

আকিকা ফরজ বা ওয়াজিব নয়; বরং সুন্নত। মোস্তাহাব হলো জন্মের সপ্তম তারিখে আকিকা দিবে। ১৪তম অথবা ২১তম তারিখেও আকিকা করলে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। আবার সপ্তম তারিখের পূর্বে আকিকা করলে দুরস্ত হবে না। উত্তম হলো সন্তানের জন্মদিবসের আগের দিন আকিকা দেওয়া। যেমন শুক্রবার জন্মদিবস হলে আকিকা হবে যে কোনো বৃহস্পতিবার । (ফাতওয়ায়ে শামী) বার্ধক্য বয়সে আকিকা জায়েজ আছে বটে; কিন্তু তা সুন্নত হিসেবে গৃহীত হবে না। (কিফায়াতুল মুফতি)

কারো আকীকা করা না হলে বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজেও করতে পারবে। হজরত আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত প্রাপ্তির পর নিজের আকীকা নিজে করেছেন। (প্রাগুক্ত ১/৫২৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৬২০৩; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকা, ড. হুসামুদ্দীন ইবনে মূসা, জামেয়াতুল  কূদস, পৃ. ১৪২)

আকিকার উদ্দেশ্য : ইসলামের পূর্ব যুগে আরবদের মধ্যে আকিকার প্রচলন ছিল, এতে অনেক প্রকার ফায়েদা ও কল্যাণ নিহিত থাকায় রাসূল (সা.) এটাকে বহাল রেখেছেন। তিনি নিজেও আমল করেছেন এবং অন্যদেরকেও আকিকা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। মোটা দাগে আকিকার কয়েকটি উদ্দেশ্য নির্নিত হয়। আর তাহলো- ১. রাসুলের (সা.) সুন্নাতের অনুসরণ। ২. বংশ পরিচয়ের জন্য উত্তম পদ্ধতি হলো আকিকার আয়োজন করা; আর সমাজ রক্ষায় বংশ-পরিচয় হলো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৩. আকিকা সম্পাদনের মাধ্যমে ব্যক্তির অন্তর থেকে কার্পণ্য দূরীভূত হয় এবং দানশীলতার মানসিকতা সৃষ্টি হয়। ৪. খ্রিস্টান গৃহে কোনো সন্তান ভূমিষ্ট হলে তাকে হলদে রং –এর পানিতে গোসল দেওয়া হয়। তাদের মন্তব্য এ রাঙ্গানোর মাধ্যমে সন্তানটি খাঁটি খ্রিস্টান হয়ে গেল। এরই জবাবে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, “আমরা আল্লাহর প্রদত্ত রং গ্রহণ করেছি।আল্লাহর রং –এর চেয়ে আর কার রং উত্তম হতে পারে।” (সুরা বাকারা) অতএব, খ্রিস্টানদের কর্মের বিপরীতে দীনে ইসলামে এমন কোনো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরি যাতে করে সন্তানটি দীনে ইসলামের আদর্শের অনুগত বুঝায়। হজরত ইবরাহীম (আ.) স্বীয় সন্তানকে আল্লাহর পথে জবাই করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। এ সময় তিনি হজ্ব করেন হজ্বের মধ্যে মাথা মুণ্ডান এবং পশু কুরবানি করেন। সন্তানের আকিকার মাধ্যমে এসব আমলের সদৃশ্যতার প্রতিফলন ঘটে। (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা : ৫০৮)

আকিকার শরয়ী হুকুম : হজরত সালমান বিন জবয়ী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তার সাথে একটি আকিকা জড়িত থাকে। সুতরাং তোমরা তার পক্ষ হতে জবাই (আকিকা) করবে এবং তার শরীর হতে কষ্টদায়ক জিনিস (চুল ইত্যাদি) দূর করবে। (বুখারী, মিশকাত)

হজরত সামুরা (রা.)রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন –“প্রত্যেক সন্তান নিজ আকিকার সাথে দায়বদ্ধ। সুতারাং সাত তারিখে তার পক্ষ থেকে জবাই করবে, মাথার চুল মুণ্ডিয়ে ফেলবে এবং তার নাম রাখবে।” (তিরমিযী – ১ : ১৮৩)

হজরত বুরাইদা (রা.) বলেন, আমরা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে জাহিলিয়াত যুগে এরূপ করতাম। কারো সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে সে বকরি জবাই করে তার রক্ত সন্তানের মাথায় মেখে দিত। অতঃপর যখন ইসলামের আর্বিভাব হলো, তখন আমরা সন্তানের জন্মের সপ্তম তারিখে বকরি জবাই করি এবং তার মাথা মুণ্ডিয়ে যাফরান মেখে দেই এবং তার নাম রাখি।

উপরের হাদীসের মধ্যে প্রত্যেক সন্তানকে আকিকার সাথে (বন্দকী) বলা হয়েছে। বন্দকী বলে কি উদ্দেশ্য এ সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন, হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে সন্তান তার মাতা-পিতার জন্য সুপারিশ করবে কিন্তু মাতা-পিতা যদি সামর্থ্যানুযায়ী সন্তানের আকিকা না করে এবং বাল্যকালেই শিশুর মৃত্যু হয় তাহলে সে মাতা-পিতার জন্য সুপারিশ করবে না। অর্থাৎ, বন্দকী সম্পদ দ্বারা যেমন উপকৃত হওয়া যায় না। তেমনিভাবে আকিকা না করলে সে সন্তানও মাতা-পিতার কাজে আসবে না। আকিকা না করলে সন্তান রোগ-ব্যাধি ও বালা-মসিবত থেকে নিরাপদ থাকে না। সন্তান আল্লাহ তাআলার প্রদত্ত বিশেষ নিয়ামত আর বান্দার জন্য উচিত নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। সকল ব্যক্তির জন্য আকিকাই হলো শুকরিয়া আদায়ের উত্তম পদ্ধতি। যতক্ষণ পর‌্যন্ত আকিকার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় না করবে সন্তান যেন এর পরিবর্তে বন্ধক থাকবে। (মাআরিফুল হাদীস- ৬ : ২৬)


পিতার সামর্থ্য না থাকলে সে ক্ষেত্রে মা সামর্থ্যবান হলে তিনি অথবা তাঁদের পক্ষ থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আকিকা আদায় করবেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭) অনেকের ধারণা, আকিকার জন্তু নানার বাড়ি থেকে আসতে হয়, এ ধারণা সঠিক নয়।


হাদিসের আলোকে আকিকার বিধান : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, যার সন্তান ভূমিষ্ট হয় সে যদি শিশুটির পক্ষ থেকে আকীকা করা পছন্দ করে তাহলে যেন তাই করে। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ বা ২১ তম দিনে করা ভালো। কেননা হাদীস শরীফে এই তিন দিনের উল্লেখ আছে। এ তিন দিনেও করা না হলে পরে যে কোনো দিন আকীকা করা যেতে পারে। হজরত আমর ইবনে শুআইব-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবজাতকের সপ্তম দিনে আকীকা করা, নাম রাখা ও তার জঞ্জাল দূর করার (অর্থাৎ মাথার চুল কাটার) নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৬)

হজরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আকীকার পশু সপ্তম বা চৌদ্দতম বা একুশতম দিনে যবাই করা হবে। (আলমুজামুল আওসাত ৫/৪৫৭)

পুত্র সন্তান হলে দুটি আর কন্যাসন্তান হলে একটি ছাগল/ভেড়া/দুম্বা দ্বারা আকীকা করা উত্তম। তবে পুত্রসন্তানের ক্ষেত্রে একটি যবাই করলেও আকীকার হক আদায় হয়ে যাবে। এছাড়া উট, মহিষ, গরু ইত্যাদি দ্বারা আকীকা করা যায়।

হজরত উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল যবাই করবে। (জামে তিরমিযী ১/১৮৩)

হজরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত হাসান ও হুসাইন রা-এর পক্ষ থেকে একটি একটি ভেড়া আকীকা করেছেন। (আবু দাউদ ২/৩৯২)

হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যার কোনো সন্তান জন্মলাভ করে সে যেন উট, গরু অথবা ছাগল দ্বারা আকীকা করে। (আলমুজামুল আওসাত ২/৩৭১০)

আকীকার গোশত পিতা-মাতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই খেতে পারবে। হজরত আয়েশা রা. বলেন, (আকীকার গোশত) নিজে খাবে, অন্যদের খাওয়াবে এবং সদকা করবে।

আকিকার দিন : সাধারণ সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম। তবে যদি কেউ কারণবশত সপ্তম দিন না করতে পারে, তবে পরবর্তী সময়ে যেকোনো দিন আদায় করতে পারবে। সপ্তম দিন মনে রাখার একটি সহজ পদ্ধতি হলো, সপ্তাহের যে দিনটিতে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, যেমন—শুক্রবার, পরবর্তী সপ্তাহে ঠিক এর আগের দিন, অর্থাত্ বৃহস্পতিবার আকিকা আদায় করলে তা সপ্তম দিনে পড়বে। (আবু দাউদ : ২৮৩৭)

আকিকা কে করবে : যিনি সন্তানের লালন-পালন কিংবা ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করছেন, তিনিই সন্তানের আকিকা আদায় করবেন। তাই প্রথমত, এই দায়িত্ব পিতার ওপর ন্যস্ত হয়।

পিতার সামর্থ্য না থাকলে সে ক্ষেত্রে মা সামর্থ্যবান হলে তিনি অথবা তাঁদের পক্ষ থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আকিকা আদায় করবেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭) অনেকের ধারণা, আকিকার জন্তু নানার বাড়ি থেকে আসতে হয়, এ ধারণা সঠিক নয়।

সন্তান জীবিত থাকা অবস্থায় আকিকা করা মোস্তাহাব। সন্তানের মৃত্যুর পর আকিকা করা মোস্তাহাব হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। তবে যদি কেউ মৃত বাচ্চার আকিকা করাকে মোস্তাহাব মনে না করে শুধু পরকালে তার সুপারিশের আশায় আকিকা করে তাহলে আকিকা করা জায়েজ আছে। তবে সতর্কতামূলক এই আকিকা কুরবানির গরুর সঙ্গে না করে পৃথক বকরি ইত্যাদি দ্বারা করা চাই ।-(ফতওয়ায়ে রহীমিয়া – ৬ : ১৭৩, মা‘আরিফুল হাদীস)

আকিকার পশুর সংখ্যা : নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী ছেলেসন্তানের পক্ষ থেকে একই ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করা সুন্নাত। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬) হজরত উম্মে কুরজ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘ছেলের জন্য এক ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের জন্য একটি বকরি আকিকা করবে। ’ (আবু দাউদ : ২৮৩৪) তবে ছেলের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করলেও মুস্তাহাব আদায় হয়ে যাবে। যদিও দুটি করা উত্তম। (রদ্দুল মুহতার : ৫/২১৩, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭)

আকিকার পশুর ধরন : যেসব জন্তু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না, সেসব জন্তু দিয়ে আকিকাও শুদ্ধ হয় না। তাই আকিকার ক্ষেত্রে জন্তুর বয়স ও ধরনের দিক থেকে কোরবানির জন্তুর গুণ পাওয়া যায়, এমন জন্তুই নির্বাচন করতে হবে। (তিরমিযি : খ. ৪, পৃ. ১০১)

কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করা : কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করা বৈধ। একটি পশুতে তিন শরিক কোরবানি হলে সেখানে আরো দু-এক শরিক আকিকার জন্যও দেওয়া যেতে পারে। তদ্রূপ কোরবানির মতো একই পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হয়ে আকিকা আদায় করতে পারবে। (দুররুল হুক্কাম : ১/২৬৬) বড় পশু—অর্থাত্ গরু, মহিষ, উট ইত্যাদিতে ছেলের জন্য এক শরিক আকিকা দিলেও তা আদায় হয়ে যাবে।

কোরবানির জন্য যেসব পশু উপযুক্ত, আকিকার ক্ষেত্রেও সে ধরনের পশু জবাই করার নিয়ম। অর্থাৎ ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ বা উট দ্বারা আকিকা করতে হবে। কোরবানির সময়ও (জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ) আকিকা করা যায়। কোরবানির পশুর মধ্যে গরু, মহিষ বা উটে পুত্রসন্তানের জন্য ২ ভাগ এবং মেয়েসন্তানের জন্য এক অংশের দ্বারা আকিকা করা শরিয়ত সম্মত এবং এসব বড় পশুর একটির মধ্যে একাধিকজনের আকিকা জায়েজ। মোটকথা, কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই বৈধ হবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০, তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২)

আকিকার গোশতের হুকুম : এটি কোরবানির গোশতের মতোই। কাঁচা ও রান্না করা উভয়টিই বণ্টন করতে পারবে। সর্বস্তরের লোক তা খেতে পারবে। এমনকি নিজের মা-বাবা, নানা-নানি, ধনী-গরিব সবাই নিশ্চিন্তে আকিকার গোশত খেতে পারবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬)

আকিকার গোশত কোরবানির গোশতের মতো সবাই খেতে পারবে। এ গোশত তিন ভাগ করে এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনদের জন্য সদকা করে দেওয়া, এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বণ্টন করা এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ নিজের জন্য রাখা সুন্নত অথবা পুরোটা বণ্টন করা বা নিজের জন্য রাখাও বৈধ। এ ব্যাপারে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, আকিকার গোশত নিজেরাও খাবে এবং সদকাও করবে। আকিকার পশুর চামড়ার বিক্রয়লব্ধ টাকা গরিব-মিসকিনদের মধ্যে দান করে দেবে। আকিকার গোশত রান্না করেও বণ্টন করা যায়, আবার দাওয়াত দিয়ে লোকজনকে খাওয়ানোও জায়েজ আছে।

Comment

লেখক পরিচিতি

আবদুল্লাহ মারুফ

আমি আবদুল্লাহ মারুফ। বর্তমানে অধ্যয়নরত আছি আল বায়ান অ্যারাবিক লানিং সেন্টারে। পাশাপাশি নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি হেরার জ্যোতি ও মাসিক ঘাসফড়িঙ -এর। পড়াশুনা, লেখালেখি আর ঘুরে বেড়ানো এই আমার ছোট্ট জীবন। ইসলাম প্রতিদিনের সাথে আছি কন্ট্রিবিউটিং রাইটার হিসেবে।

কমেন্টস করুন